‘দুর্ঘটনার পর তৌফিক ফোনে বলেছিল পায়ে-হাতে ব্যথা পেয়েছি, ঠিক হয়ে যাব’

তৌফিক হোসাইন। ছবি: সংগৃহীত

বড় ছেলেকে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) ভর্তি করেছিলেন প্রকৌশলী বাবা দেলোয়ার হোসেন। ছেলে তৌফিককে নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল তার।

কিন্তু গতকাল সোমবার চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে এক সড়ক দুর্ঘটনায় সব স্বপ্ন চুরমার হয়ে গেল।

দ্রুতগতির বাসের ধাক্কায় নিহত হন মোটরসাইকেল আরোহী চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তৌফিক হোসাইন ও শান্ত সাহা।

আজ মঙ্গলবার নোয়াখালী সরকারি কলেজ প্রাঙ্গনে নিহত তৌফিকের জানাজা শেষে পৌর এলাকার লক্ষ্মীনারায়নপুর মহল্লায় পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

পরিবারে মা-বাবা ছাড়াও আছেন আরেক ভাই ও এক বোন। দুপুরে তাদের বাসায় গিয়ে দেখা যায় সবাই শোকে স্তব্ধ হয়ে আছেন।

তৌফিকের মা তাহেরা আক্তার সাথী কান্নাজড়িত কণ্ঠে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'দুর্ঘটনার পর সাড়ে ৩টায় তৌফিকের সঙ্গে কথা হয়। মোবাইল ফোনে বলল, মা পায়ে ও হাতে ব্যাথা পেয়েছি, মাথা ঠিক আছে। মাথায় ব্যাথা পাইনি। আমি ঠিক হয়ে যাব। তুমি চিন্তা করো না।'

'পরে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছেলে মারা গেল,' বলতেই কেঁদে ওঠেন মা।

তৌফিকের বাবা দেলোয়ার হোসেন বলেন, 'ঈদের ছুটি শেষে গত শনিবার মাইজদী থেকে সে বিশ্ববিদ্যালয়ে যায়। বঙ্গবন্ধু হলের আবাসিক ছাত্র ছিল তৌফিক।' 

সোমবার দুপুরে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার জিয়ানগর এলাকায় তৌফিকসহ তিন বন্ধু মোটরসাইকেলে ঘুরতে যান। হঠাৎ দ্রুতগতির একটি বাস মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দিলে আহত হন তৌফিক ও শান্ত।

পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চট্টগ্রাম এভারকেয়ার হাসপাতালে দুজন মারা যান।

এ দুর্ঘটনায় তাদের আরেক বন্ধু জাকারিয়া হিমু আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
 
আজ সকালে তৌফিকের জানাজার সময় বক্তব্যে বাবা নোয়াখালী পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন বলেন, 'আমার তিন সন্তান। দুই ছেলে এক মেয়ে। বড় ছেলে তৌফিককে নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখেছিলাম। ২০১৯ সালে সে নোয়াখালী জিলা স্কুল থেকে গোল্ডেন জিপিএ-৫ নিয়ে এএসসি এবং ২০২১ সালে ঢাকার সেন্ট জোসেফ কলেজ থেকে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে চুয়েটে ভর্তি হয়।'

জানাজায় নোয়াখালী পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শহিদ উল্যাহ খান সোহেলসহ পৌরসভার কাউন্সিলর, কর্মকর্তা, কর্মচারী, এলাকাবাসী ও তৌফিকের সহপাঠীরা উপস্থিত ছিলেন। 

Comments

The Daily Star  | English
health reform

Priorities for Bangladesh’s health sector

Crucial steps are needed in the health sector for lasting change.

16h ago