মিরপুর: যেভাবে ৬৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংস
রাজধানীতে ঈদের আগে হঠাৎ বেড়ে গেছে গরুর মাংসের দাম। বুধবার বিকেলে গাবতলী গরুর হাটে দেখা গেছে, ঈদ সামনে রেখে গরু বিক্রি বেড়েছে। বিভিন্ন এলাকার মাংস ব্যবসায়ীরা গরু কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
মিরপুর, ইব্রাহীমপুর, শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া, মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে ৭৫০-৮০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংস।
তবে, মিরপুর-১১ নম্বর কাঁচাবাজারের সব দোকানে ৭৫০ টাকা কেজি দরে গরুর মাংস বিক্রি হলেও, সোনা মিয়ার গোস্তের দোকানে বিক্রি হচ্ছিল ৬৫০ টাকা কেজি দরে।
দামের পার্থক্য সম্পর্কে জানতে চাইলে ওই দোকানের কর্মীরা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অন্যরা ৭৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করে খুব বেশি লাভ করছে, তা নয়। আবার আমরা ৬৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করে যে লোকসান দিচ্ছি তাও নয়।'
তারা জানান, গরু কাটার পর বিশেষ অংশের সলিড মাংস তারা আলাদা করে রাখেন। সেগুলো তারা হাড়-চর্বি ছাড়া ৯০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেন।
এসব মাংস কেনার বিশেষ ক্রেতা আছেন বলেও জানান তারা।
এই দোকানের বিক্রেতারা আরও জানান, প্রায় চার মণ ওজনের একটি গরু থেকে এমন প্রায় ৩০ কেজি মাংস ৯০০ টাকা কেজিতে বিক্রি করা হয়।
বাকি মাংস হাড়-চর্বিসহ ৬৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও গরুটির সব মাংস গড়ে ৭২০-৭৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে বলে জানান তারা।
বুধবার সন্ধ্যায় সোনা মিয়ার গোস্তের দোকানের সামনে দেখা যায়, হ্যান্ডমাইক লাগিয়ে ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন কর্মীরা। প্রচুর ভিড়ও হয়েছে সেখানে। সব ধরনের ক্রেতাদের সন্তুষ্ট করে তারা গরুর মাংস বিক্রি করছেন।
খিলগাঁওয়ের মাংস ব্যবসায়ী খলিল কীভাবে ব্যবসা করেন, জানতে চাইলে এই দোকানের কর্মীরা বলেন, 'গরু কেউ সস্তায় কিনতে পারে না। একটু সিস্টেম করে বিক্রি করলে ক্রেতাদের খুশি করা যায়। কেউ লোকসানে বিক্রি করে না গরুর মাংস।'
ক্রেতারা জানান, তারা মাংস কিনে খুশি, যদিও কিছু চর্বি, হাড় বা মাথার অংশ থাকছে।
সোনা মিয়ার গোস্তের দোকানের পাশের দোকানদার জানান, গরুর দাম লাখে প্রায় ৫-৭ হাজার টাকা বেড়েছে। তাই বাধ্য হয়ে তাদের ৭৫০ টাকা কেজিতে মাংস বিক্রি করতে হচ্ছে।
এক দোকানদার বলেন, '৭৫০ টাকা করে বিক্রি করতেই আমাদের সমস্যা হচ্ছে। পাশেই এক দোকানদার যেখানে ৬৫০ টাকা করে বিক্রি করছেন, তাই আমরা ৮০০ টাকা করে বিক্রি করতে পারছি না।'
উদাহরণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা বলেন, একটা ৪ মণ ওজনের গরুর দাম এক লাখ ৩০ হাজার টাকা, যার মধ্যে হাড় থাকে প্রায় এক মণ। ওই গরুর মাথা, কলিজা মিলে ১৫ কেজি পাওয়া যায়।
তিন মণ মাংসের মধ্যে ভালো ৩০ কেজি আগেই ৯০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হয়। বাকি দুই মণ ১০ কেজি মাংসের সঙ্গে হাড়-চর্বি-মাথা মিলিয়ে দাঁড়ায় প্রায় তিন মণ ৩০ কেজি। ৬৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি করা হলে একটা গরু থেকে ২০-২৫ হাজার লাভ করা সম্ভব হয়।
আর যারা ৭৫০ টাকা করে বিক্রি করেন, তারাও প্রতি কেজিতে ৩০-৪০ টাকা লাভ করেন বলে জানান।
Comments