আনন্দ শুরু হোক চাঁদরাত থেকেই

ছবি: স্টার

চাঁদরাত আর ঈদ যেন একই সুরে গাঁথা এক মহিমান্বিত উৎসব। এই উৎসব নিয়ে আয়োজন চলতে থাকে দীর্ঘ এক মাস ধরে। এত আকাঙ্ক্ষা আর উদ্দীপনার যে সুর শুরু হয় চাঁদরাত দিয়ে। নতুন চাঁদ ইসলামী শাওয়াল মাসের আগমন এবং ঈদের দিনকে ইঙ্গিত করে। মুসলিমদের কাছে চাঁদরাত উদযাপন ঐতিহ্যবাহী উৎসব। ঈদের আনন্দ শুরু হয়ে যায় চাঁদরাতেই।

চাঁদরাতকে আরও কীভাবে আনন্দময় করা যায় তাই নিয়েই এ লেখা। 

ঈদ মানে টেবিল ভর্তি মজার মজার খাবার। কিন্তু একদিনেই তো সব তৈরি করা যায় না। আবার ঈদের সকাল থেকেই অতিথিরা আসতে শুরু করে। আর ঈদের মতো আনন্দের দিনে সারাদিন রান্নাঘরেও কাটাতে ইচ্ছে করে না। তাই চাঁদরাতে বেশ কিছু রান্না করে রাখা যায়। যেমন- পুডিং, মাহালাবিয়া, সেমাই, কেক ইত্যাদি বানিয়ে সেট করে রাখতে পারেন। আর এই খাবারগুলো ঠান্ডাই মজা। তাছাড়া ঈদের দিন যদি কাবাব জাতীয় কোনো খাবার খেতে চান তবে চাঁদরাতেই মেরিনেট করে রাখতে পারেন।

ঈদ উপলক্ষে ঘরবাড়িকে নতুনভাবে সাজাতে চান সবাই। ওইরকম কোনো পরিকল্পনা থাকলে চাঁদরাতেই নতুন বিছানায় চাদর, কুশন কাভার, পর্দা বদলে দিতে পারেন। তাছাড়া সকালের জন্য টেবিল সেটআপ চাঁদ রাতে করে রাখতে পারেন। এতে ঈদের সকালের কাজটা অনেকটাই হালকা হয়ে যায়।

ঈদের শপিং হয়তো ইতোমধ্যেই শেষ। বের করে দেখুন ম্যাচিং করে নেলপালিশটা কেনা হয়েছে কি না, কিংবা চুলে ক্লিপটা কেনা বাদ রয়ে গেল কি না। শপিংমলগুলোতে চাঁদরাত উপলক্ষে মাঝরাত পর্যন্ত কেনাকাটা চলতে থাকে। সবাই শেষ মুহূর্তের কেনাকাটা করে তাই এই রাতে ক্রেতা-বিক্রেতারা ব্যস্ত সময় কাটায়। অন্যদিকে, লাভ-লোকসানের হিসাব না করেই বিক্রেতারা পণ্য ছেড়ে দেয়। অন্যদিকে প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে ক্রেতাও দরদামে আটকে থাকে না। তাই তুমুল গতিতে চলে ঈদের শেষ মুহূর্তের কেনাকাটা। আপনিও আরেকবার ঢু মারতে পারেন শপিংমল বা অস্থায়ী মেলাগুলোতে।

নারীদের ঈদের অন্যতম অনুষঙ্গ মেহেদী। ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাব, দৃক গ্যালারিসহ বেশকিছু জায়গায় মেহেদী উৎসবের আয়োজন করা হয়। তাছাড়া মোটামুটি সব জেলা শহরগুলোতেই এখন চাঁদরাতে মেহেদী উৎসব আয়োজন করা হয়। চাইলে কোনো দক্ষ হেনা আর্টিস্ট দিয়ে সেখান থেকে সুন্দর করে মেহেদী দিয়ে নিজেকে সাজিয়ে নিতে পারেন। বাইরে যেতে না চাইলে বাসায় আয়োজন করেই মেহেদী দিয়ে দিতে পারেন একে অপরকে। বাসায় শিশু থাকলে তাদের হাতেও যত্নের সাথে মেহেদি লাগিয়ে দিতে পারেন। ঈদের নতুন পোশাক আর দুই হাতে বিভিন্ন নকশার মেহেদি যেন ঈদ আনন্দের সূত্রে গাঁথা।

চাঁদরাতে প্রিয়জন, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুদের খোঁজখবর নিতে পারেন, ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করতে পারেন। 

ঈদের দিন ছোটরা সালামি পেলে বেশ খুশি হয়। ছোটদের জন্য ছোট ছোট গিফট বক্স তৈরি করে নিতে পারেন। তাছাড়া নতুন টাকার নোট সংগ্রহ করতে ভুলবেন না। 

ঈদে প্রিয় মুখগুলো একসাথে হয়। ছোটবেলার বন্ধুদের একসাথে হওয়ার সুযোগ হয় ঈদে। তাই চাঁদরাতে বন্ধুরা মিলে আড্ডার পসরা সাজাতে পারেন প্রিয় কফি শপে। কিংবা মিনি ড্রাইভে চলে যেতে পারেন। চলে যেতে পারেন পুরান ঢাকায় নাজিরাবাজারে। চাঁদরাতে বাজি ফুটানো, খাওয়াদাওয়া আর কেনাকাটায় মুখর থাকে পুরান ঢাকা। তবে যাই করা হোক দেরি করা যাবে না, কারণ সকালে ঈদের নামাজ ধরতে হবে।

ঘরে কাজ, রান্নাবান্না, শপিং সবই তো হল। এত কাজ করে  নিশ্চয়ই ক্লান্ত। ঈদের দিন নিশ্চয়ই চেহারায় ক্লান্তি ভাব রাখতে চান না।তাই পার্লার থেকে ঘুরে আসতে পারেন। পেডিকিউর মেনিকিওর, কিংবা একটা রিল্যাক্সিং ম্যাসেজ, ফেসিয়াল, আইব্রো প্ল্যাকের মতো শেষ মুহূর্তের কাজগুলো করিয়ে নিতে পারেন। ছেলেরাও চলে যেতে পারেন সেলুন বা জেন্টস পার্লারে। তবে ভিড় যদি এড়াতে চান বা হাতে পর্যাপ্ত সময় না থাকে তবে বাসাতেই অন্তত একটা ফেসপ্যাক লাগিয়ে নিতে পারেন।

Comments

The Daily Star  | English
FY26 Bangladesh budget subsidy allocation 2025-26

FY26 Budget: Subsidy spending to hold steady

The budget for fiscal 2025-26 is likely to be smaller than the current year’s outlay, but subsidy spending is expected to remain almost unchanged at Tk 1,15,741 crore.

9h ago