সোনালী ব্যাংক রুমা শাখার ভল্টের টাকা অক্ষত: সিআইডি

সোনালী ব্যাংক রুমা শাখায় গতকাল ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ছবি: স্টার

বান্দরবানে রুমায় ডাকাতি হওয়া সোনালী ব্যাংকের ভল্টের টাকা অক্ষত আছে বলে সিআইডি জানিয়েছে।

আজ বুধবার দুপুরে রুমায় সোনালী ব্যাংকের ওই শাখা পরিদর্শন শেষে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত ডিআইজি (সিআইডি) মো. শাহ নেওয়াজ খালেদ এ তথ্য জানান।

গতকাল মঙ্গলবার রাত ৮টায় রুমা উপজেলা কমপ্লেক্সে অবস্থিত সোনালী ব্যাংকে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা।

সিআইডির দুটি ক্রাইম সিন টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে আলামত সংগ্রহ করেছে। ছবি: স্টার

ধারণা করা হচ্ছে, সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের  (কেএনএফ) সদস্যরা এ হামলা চালায়। 

তারা ব্যাংক ম্যানেজার মো. নেজাম উদ্দিনকে অপহরণ করে এবং ২৪ ঘণ্টায়ও খোঁজ মেলেনি তার।

অতিরিক্ত ডিআইজি (সিআইডি) শাহ নেওয়াজ খালেদ বলেন, 'আমরা কক্সবাজার থেকে দুটি ক্রাইম সিন টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছি এবং ভল্টের চাবি দিয়ে খুলে ভল্টের টাকা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছি।'

'ভল্টে থাকা ১ কোটি ৫৯ লাখ ৪৬ হাজার টাকা অক্ষত অবস্থায় আছে। ডাকাতরা ভল্ট খুলতে পারেনি,' বলেন তিনি।

এর আগে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন ও পুলিশ সুপার সৈকত শাহীন।

তারা জানান, ডাকাতরা পুলিশের ৮টি চীনা রাইফেল, ২টি এসএমজি ও ব্যাংকের নিরাপত্তা কর্মী আনসারের ব্যবহৃত ৪টি শটগানসহ মোট ১৪টি বন্দুক ও ৩৮০ রাউন্ড গোলাবারুদ ছিনতাই করে নিয়ে গেছে। 

আজ বিকেলে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন রুমা উপজেলা পরিদর্শনে যান।

এ সময় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, 'আমরা সার্বিক বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছি। ম্যানেজারকে ও অস্ত্র উদ্ধারের জন্য সমন্বিতভাবে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। দোষীদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।'

গতকাল রুমা উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা দিদারুল আলম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'রাত ৮টার দিকে দুবৃর্ত্তরা উপজেলা প্রশাসন কমপ্লেক্সের মসজিদে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়। তখন নামাজের জন্য অনেক কর্মকর্তারা সেখানে ছিলেন। তাদেরকে সবাইকে বন্দি করে সন্ত্রাসীরা মারধর করে। তারা অস্ত্র হাতে ব্যাংক ম্যানেজারকে জিম্মি করে ব্যাংকে নিয়ে যায়।' 

ওই ব্যাংকের ক্যশিয়ার উথোয়াইচিং মারমা ডেইলি স্টারকে বলেন,  'গতকাল অপরিচিত ৩ জন অস্ত্রের মুখে আমার শরীরে তল্লাশি চালিয়ে পকেটে থাকা ১৫০০ টাকা ও ব্যাংকের চাবি নিয়ে নেয়। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী আসার পর ব্যাংকে গিয়ে দেখি অফিসের সরঞ্জাম সব ছড়ানো-ছিটানো।'

'আমার জানামতে ভল্টের ভেতর ১ কোটি ৫৯ লাখ টাকা জমা ছিল। ভল্টের দুটি চাবির মধ্যে একটি আমার কাছে এবং অপহৃত ম্যানেজারের কাছে অপরটি,' বলেন তিনি।

ওই ঘটনার ১৬ ঘণ্টার মধ্যে আজ বুধবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে থানচি বাজারের সোনালী এবং কৃষি ব্যাংকেও ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এ সময় ডাকাতদল সাধারণ গ্রাহক ও কর্মকর্তাদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে একটি রুমে বন্ধ করে রাখে। পরে ব্যাংকের ক্যাশ থেকে টাকা লুট করে পালিয়ে যায়।

এ অবস্থায় নিরাপত্তাজনিত কারণে বান্দরবানের ৬ উপজেলায় সোনালী ব্যাংকের সব শাখা পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বান্দরবান সোনালী ব্যাংকের এজিএম ওসমান গনি। 

 

Comments