ভিয়েতনামে প্রেসিডেন্টের পদত্যাগে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা

বিশ্লেষকদের মতে, এ ঘটনায় ভিয়েতনামের অস্থিতিশীল রাজনৈতিক অঙ্গনে অস্থিরতা আরও বেড়েছে।
ভিয়েতনামের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ভো ভ্যান থুং। ফাইল ছবি: রয়টার্স
ভিয়েতনামের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ভো ভ্যান থুং। ফাইল ছবি: রয়টার্স

ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট ভো ভ্যান থুং পদত্যাগ করেছেন। গতকাল তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছে দেশটির কমিউনিস্ট পার্টি। একইসঙ্গে, আজ পার্লামেন্টে এই পদত্যাগপত্র অনুমোদন পেয়েছে। 

আজ বৃহস্পতিবার এই তথ্য জানিয়েছে সিঙ্গাপুরের গণমাধ্যম স্ট্রেইটস টাইমস।

বিশ্লেষকদের মতে, এ ঘটনায় ভিয়েতনামের অস্থিতিশীল রাজনৈতিক অঙ্গনে অস্থিরতা আরও বেড়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কিছু শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এসেছে।  

ভিয়েতনামের গণমাধ্যম ভিএনএক্সপ্রেস জানিয়েছে, সদ্য সাবেকের খাতায় নাম লেখানো প্রেসিডেন্ট থুং দলের পলিটব্যুরো (স্থায়ী কমিটি) থেকেও পদত্যাগ করবেন।

কমিউনিস্ট পার্টির স্থায়ী কমিটি এক বিবৃতিতে  বলেছে, থুং দলের নীতি ভঙ্গ করেছেন। তাঁর কর্মকাণ্ডের কারণে জনমতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এতে দলের পাশাপাশি দেশ ও তাঁর নিজেরও সুনাম ক্ষুণ্ণ হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার ভিয়েতনামের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির বিশেষ অধিবেশন শুরু হয়েছে,। ইতোমধ্যে পার্লামেন্টে থুং এর পদত্যাগ অনুমোদন পেয়েছে। এই অধিবেশনে নতুন প্রেসিডেন্টের নাম ঘোষণা করা হতে পারে।

নতুন  প্রেসিডেন্ট হতে পারেন ভাইস প্রেসিডেন্ট  ভো থি আন জুয়ান। 

২০২৩ এর জানুয়ারিতে পদত্যাগ করেন থুং এর পূর্বসূরি নগুয়েন জুয়ান ফুক। শীর্ষ পর্যায়ে দুর্নীতির দায়ভার ঘাড়ে নিয়ে তিনি তার পদ ছেড়ে দেন। মাত্র ২১ মাস ক্ষমতায় ছিলেন তিনি।

করোনাভাইরাস মহামারির সময় প্রধানমন্ত্রী ছিলেন ফুক। সে সময় করোনাভাইরাস টেস্ট কিটের জন্য অস্বাভাবিক উচ্চ মূল্য ও দেশে ফেরার ফ্লাইট পেতে সরকারী কর্মকর্তাদের ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ ওঠে। ফুক পরপর দুই উপ-প্রধানমন্ত্রীকে এই দুর্নীতির দায়ে বরখাস্ত করেন।

ধারণা করা হচ্ছে থুং এর পদত্যাগের সঙ্গে ভিয়েতনামের আবাসন খাতের প্রতিষ্ঠান ফুক সন এর কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগের যোগসূত্র হয়েছে। ২০১১ থেকে ২০১৪ সালে থুং দলের সভাপতি থাকাকালীন সময় এই ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ এসেছে। 

ভিয়েতনামের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় প্রেসিডেন্টের পদ মূলত অলংকারিক হলেও এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদ। শীর্ষ পদে আছেন দলের সাধারণ সম্পাদক নগুয়েন ফু ট্রং।

২০২১ সালে নজিরবিহীন ভাবে তৃতীয় মেয়াদে দলের নেতা হিসেবে নির্বাচিত হন ট্রং (৭৯)। তিনিই চলমান দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের নেপথ্যে আছেন।

বিশ্লেষকদের মতে, থুং এর আকস্মিক পদত্যাগে ভিয়েতনামের রাজনীতি সংকট ঘনীভূত হয়েছে।

৫৩ বছর বয়সী থুং ছিলেন কমিউনিস্ট পার্টির স্থায়ী কমিটির সবচেয়ে তরুণ সদস্য। তিনি দলের শীর্ষ নেতা ট্রং এর খুবই ঘনিষ্ঠ ছিলেন এবং অনেকেই তাকে তার উত্তরসূরি হিসেবে বিবেচনা করছিলেন। 

বিশ্লেষকরা আরও জানান, বেশ কয়েক বছর ধরে ভিয়েতনামে দুর্নীতির বিরুদ্ধে চলমান অভিযানের কারণে যে আমলাতান্ত্রিক স্থবিরতা দেখা দিয়েছে, তা থুং এর পদত্যাগে আরও খারাপ দিকে মোড় নেবে।

কর্মকর্তারা দুর্নীতির অভিযোগ এড়াতে যেকোনো প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়ার ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করেন। এ কারণে ব্যবসার লাইসেন্স ও অন্যান্য অনুমতি দেওয়ার মতো ছোটখাট কাজেও অনেক সময় লেগে যায়। যার ফলে মহামারি থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রচেষ্টায় থাকা ভিয়েতনামের অর্থনীতি সার্বিকভাবে স্থবির হয়ে পড়েছে।

২০২৩ সালের প্রথম নয় মাসে সরকারী বিনিয়োগ লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ৫১ শতাংশ অর্জিত হয়েছিল।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

6h ago