হামাসের দ্বিতীয় শীর্ষ সামরিক কমান্ডার মারওয়ান ইসাকে হত্যার দাবি ইসরায়েলের

হামাসের নেতাদের সঙ্গে মারওয়ান ইসা। ছবি: এক্স থেকে সংগৃহীত

গাজায় বিমানহামলায় ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাসের অন্যতম শীর্ষ সামরিক কমান্ডার মারওয়ান ইসাকে হত্যার দাবি করেছে ইসরায়েল। সামরিক পদমর্যাদার দিক দিয়ে এই নেতা দ্বিতীয় অবস্থানে ছিলেন বলে জানা গেছে।

গতকাল সোমবার এই তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।

রমজান মাসের আগে যুদ্ধবিরতি চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে তা হয়নি। যার ফলে গাজায় ইসরায়েলি হামলার তীব্রতাও কমেনি।

মারওয়ান ইসার মৃত্যুর বিষয়টি সম্পর্কে এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারেনি ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। যদি তার মৃত্যু নিশ্চিত হয়, তাহলে তা হবে গত পাঁচ মাসের যুদ্ধে হামাসের সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ নেতাকে হত্যার ঘটনা।

লোকচক্ষুর অন্তরালে থাকার জন্য 'শ্যাডো ম্যান' বা 'ছায়ামানব' নামে পরিচিত ছিলেন ইসা। তিনি এবং হামাসের আরও দুই শীর্ষ নেতা সম্মিলিতভাবে ৭ অক্টোবরের হামলার পরিকল্পনা করেন।

বিশ্লেষকদের মতে, এই তিন নেতাই হামাসের সামরিক কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করেন।

আইডিএফের মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি সাংবাদিকদের বলেন, শনিবার রাতে গোয়েন্দা নেটওয়ার্কের মাধ্যমে তারা হামাসের সশস্ত্র সংগঠন আল কাসাম ব্রিগেডের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নেতা ইসার অবস্থান সম্পর্কে গোপন তথ্য পান। সে অনুযায়ী রাতে গাজার কেন্দ্রে অবস্থিত আল নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে বিমানহামলা চালানো হয়।

আইডিএফের সদস্যরা গাজায় অভিযান চালাচ্ছেন। ফাইল ছবি: রয়টার্স
আইডিএফের সদস্যরা গাজায় অভিযান চালাচ্ছেন। ফাইল ছবি: রয়টার্স

হাগারি দাবি করেন, ইসা ও হামাসের অপর এক নেতা শরণার্থী শিবিরের নিচে অবস্থিত ভূগর্ভস্থ কমপাউন্ড ব্যবহার করে গাজায় হামাসের অস্ত্রের যোগান দেওয়ার কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করতেন। ইসরায়েলি বিমানবাহিনী ও শিন বেট নিরাপত্তা সংস্থা এই যৌথ অভিযানে অংশ নেয়।

হাগারি দাবি করেন, 'সুড়ঙ্গে এই দুইজন ছাড়াও হামাসের অন্যান্য সদস্য ছিলেন।'

তবে ইসা নিহত হয়েছেন কী না, সে বিষয়টি এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত নয় বলে জানান হাগারি।

ফিলিস্তিনি সূত্র জানিয়েছে, ইসরায়েলিরা খবর পায় যে একটি অবস্থানে ইসা লুকিয়ে আছেন। সে অনুযায়ী সেখানে হামলা চালালেও ইসার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত নয়।

ইসরায়েলের মন্ত্রিসভার দপ্তরবিহীন মন্ত্রী চিলি ট্রপার দেশটির টিভি চ্যানেলের কাছে দেওয়া বক্তব্যে বলেন, 'এখনো (ইসার মৃত্যুর) বিষয়টি নিশ্চিত নয়।'

'যদি মারওয়ান ইসা নিহত হয়ে থাকেন, তাহলে এটা আইডিএফ ও শিন বেটের জন্য বড় অর্জন। তিনি কার্যত হামাসের সামরিক চিফ অব স্টাফ হিসেবে বিবেচিত', যোগ করেন তিনি।

ইসরায়েলের 'মোস্ট ওয়ানটেড' বা শীর্ষ পলাতক আসামীর তালিকায় ইসা মারওয়ানের নাম রয়েছে। এ তালিকায় হামাসের অন্যান্য নেতার মধ্যে আছেন আল-কাসাম ব্রিগেডের কমান্ডার মোহাম্মেদ দেইফ ও গাজায় হামাসের শীর্ষ নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ার।

মিশর ও কাতারের মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে এখনো যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা চালাচ্ছে ইসরায়েল ও হামাস। ইসার মৃত্যু নিশ্চিত হলে এ আলোচনায় জটিলতা দেখা দিতে পারে।

মারওয়ান ইসার বাগানবাড়ি। ছবি: সংগৃহীত
মারওয়ান ইসার বাগানবাড়ি। ছবি: সংগৃহীত

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে অতর্কিত হামলা চালায় হামাস। এতে এক হাজার ২০০ জন নিহত হন এবং হামাসের হাতে জিম্মি হন প্রায় ২৫৩ জন মানুষ। জিম্মিদের মধ্যে ১৩০ জন এখনো গাজায় আছেন এবং ৩১ জন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

এ ঘটনার পর থেকে প্রায় হামাসকে নির্মূলের লক্ষ্যে গাজায় পাঁচ মাস ধরে সর্বাত্মক ও নিরবচ্ছিন্ন হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এই হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৩১ হাজার ১১২ জন মানুষ। নিহতের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৭২ হাজার ৭৬০ জন মানুষ।

Comments

The Daily Star  | English

Prioritise reform over revenge, Tarique tells party men

BNP Acting Chairman Tarique Rahman today urged his party leaders and workers to make the party's 31-point proposal a success

44m ago