শরিফুলের শুরু করে দেওয়া পথেই হেঁটেছে শ্রীলঙ্কা
প্রথম টি-টোয়েন্টিতে একদম প্রথম ওভারে আভিশকা ফার্নেন্দোকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ বানান শরিফুল ইসলাম। শুরুতেই উইকেট নিয়ে তার উদযাপনটা হয় বিশেষ। বামহাত আড়াআড়ি রেখে ডানহাত দিয়ে ঈশারা করেন হাতঘড়ির। বুঝতে বাকি থাকে না তিনি আসলে কি বোঝাত চাইছেন।
গত ওয়ানডে বিশ্বকাপের উত্তপ্ত লড়াইয়ের পর এই ম্যাচটাই ছিলো বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার প্রথম দেখা। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসকে বাংলাদেশ দলের টাইমড আউট করার সিদ্ধান্তের রেশ এই সিরিজেও যে থাকবে তা অনুমেয় ছিলো। শরিফুল আগ বাড়িয়েই সেটা নিয়ে আসেন আলোয়।
পরে সিরিজজুড়েই নানান সময়ে চলেছে এমন উদযাপন। তাতে মিশে থেকেছে এক পক্ষের আরেক পক্ষকে খোঁচানো। সিরিজ জিতে ট্রফি নিয়ে গোটা দলের উদযাপনে শ্রীলঙ্কা 'টাইমড আউট' উদযাপন করেছেন বড় করে। বাংলাদেশ জিতলে হয়ত বাংলাদেশ দলও এমনটা করত। অন্তত শরিফুলের উদযাপনের ঘটনাতে সেই আভাসই মিলেছিলো।
তবে হেরে যাওয়ার পর এই উদযাপনের খোঁচা যে ভালো লাগছে না সেটা আড়াল করেননি নাজমুল হোসেন শান্ত। শ্রীলঙ্কা-বাংলাদেশ দ্বৈরথকে আরও পুষ্টি যোগাতে এই বিষয়গুলো কি তারা আরও আগ্রাসীভাবে নেবেন নাকি ক্রিকেটীয় ভব্যতায় হালকা করতে চাইবেন। এমন প্রশ্নের উত্তরে ঝাঁজই থাকল শান্তর কণ্ঠে, 'আগ্রাসীভাবে হ্যান্ডেল করার কিছু নাই। ওরা অই টাইমড আউট নিয়েই তো দেখিয়েছে? আমার মনে হয় ওরা এখনও (সেটা থেকে) বের হইতে পারেনি। আমার মনে হয় যে বের হওয়া উচিত, বর্তমানে থাকা উচিত। আমরা খেলার নিয়মের বাইরে কিছু করিনি। এক্টু বেশিই মাতামাতি করছে, তো করুক এটা নিয়ে আমরা চিন্তিত না।'
শনিবার সন্ধ্যায় ম্যাচ শেষে কুশল মেন্ডিসের সঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন শ্রীলঙ্কার সহকারি কোচ নাভিদ নেওয়াজ। কুশলকে করা শান্তর মন্তব্য প্রসঙ্গের উত্তর নাভিদই দেন, 'আমার মনে হয় আমরা এসব (টাইম আউটের ঘটনা) থেকে সরে এসেছি। আমার মনে হয় এটা একটা উদযাপন, যেটা ভুল বোঝাবুঝি তৈরি করেছে। খেলার উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে এমনটা হয়েছে। দুই দলেরই এটা ভুলে যাওয়া উচিত।'
মুখে বললেও টাইমড আউটের বিষয় থেকে আসলে বের হতে পারেনি কোন দলই। ঠিক যেমনটা ক'বছর আগে নাগিন ড্যান্স থেকে বেরুনো যাচ্ছিলো না। নাজমুল ইসলাম অপুর উদযাপন দুই দলের কিছু উত্তপ্ত পরিস্থিতিকে করেছে নাটকীয়। শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে বাংলাদেশের নাগিন নৃত্য, সেটার শোধ তুললে বাংলাদেশকে ধরাশায়ী করে লঙ্কানদের নাগিন নৃত্য বিশ্ব ক্রিকেটেই তুমুল আলোচনার জন্ম নেয়।
এই সিরিজে স্নিকো থাকার পরও সৌম্য সরকারকে টিভি আম্পায়ারের কট বিহাইন্ড না দেওয়া ভালোভাবে নেয়নি লঙ্কনরা। বিষয়টাকে যদিও আর বড় করেনি, টি-টোয়েন্টি সিরিজও তারা জিতে গিয়েছে। তবে সব মিলিয়ে যে দ্বৈরথ সেটা চলমান থাকতে পারে ওয়ানডে ও টেস্ট সিরিজেও। লঙ্কানদের ওয়ানডেতে হারিয়ে বাংলাদেশও যদি টাইমড আউট উদযাপন করে অবাক হওয়ার থাকবে না।
Comments