র‌্যাবের বিরুদ্ধে লিমনকে হত্যাচেষ্টা মামলা সিআইডিকে পুনর্তদন্তের নির্দেশ

২০১১ সালে লিমনের গুলিবিদ্ধ পা কেটে ফেলতে হয় (বামে)। বর্তমানে লিমন গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক (ডানে)। ফাইল ছবি

র‌্যাবের বিরুদ্ধে ২০১১ সালে ঝালকাঠির কলেজশিক্ষার্থী লিমনকে হত্যাচেষ্টা মামলা পুনর্তদন্তের জন্য পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

আজ বুধবার দুপুরে ঝালকাঠির সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এ এইচ এম ইমরানুর রহমান এ আদেশ দেন। 

২০১১ সালে র‌্যাবের গুলিতে লিমনের পা হারানোর ঘটনায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে লিমনের মা হেনোয়ারা বেগম নারাজি পিটিশন করেছিলেন।

ওই পিটিশনের শুনানি শেষে বিচারক পুনর্তদন্তের আদেশ দিয়েছেন বলে লিমনের আইনজীবী আক্কাস সিকদার দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছেন। 

লিমনকে গুলি করার অভিযোগ থেকে র‌্যাব সদস্যদের অব্যাহতি দিয়ে আদালতে পিবিআইয়ের দেওয়া প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে ২০২২ সালের ৫ ডিসেম্বর আদালতে নারাজি আবেদন করেছিলেন হেনোয়ারা।

বর্তমানে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক লিমনকে ১৬ বছর বয়সে ২০১১ সালের ২৩ মার্চ ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়া গ্রামে কুখ্যাত অপরাধী বিবেচনা করে বাম পায়ে গুলি করার অভিযোগ ওঠে র‌্যাব—৮ এর কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধে। 

পরে লিমনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং সেদিনই তার বিরুদ্ধে আলাদা দুটি মামলা করে র‌্যাব। 

এর ৪ দিন পর লিমনের বাম পা কেটে ফেলতে হয়। বর্তমানে তিনি কৃত্রিম পা দিয়ে চলাফেরা করছেন।

২০১৩ সালের ৯ জুলাই তৎকালীন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমানের অনুরোধের ভিত্তিতে সরকার লিমনের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলা দুটি তুলে নেয়।

তবে ২০১১ সালের ১০ এপ্রিল হেনোয়ারা তার ছেলেকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে ঝালকাঠি জেলা জজ আদালতে বরিশাল র‌্যাব-৮ এর ডিএডি লুৎফর রহমান, করপোরাল মাজহারুল ইসলাম, মো. আব্দুল আজিজ, নায়েক মুক্তাদির হোসেন, সৈনিক প্রহল্লাদ চন্দ ও সৈনিক কার্তিক কুমার বিশ্বাসসহ আরও অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। 

তদন্ত শেষে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা অভিযোগ থেকে র‌্যাব সদস্যদের অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করে ২০১২ সালের ১৪ আগস্ট আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন।

পুলিশের ওই প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজি দিয়ে ২০১২ সালের ৩০ আগস্ট জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে একটি আবেদন দাখিল করেন হেনোয়ারা, যা ২০১৩ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি আদালত বাতিল করে দেয়। 

হেনোয়ারার নারাজি আবেদন বাতিলের আদেশের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালের ১৮ মার্চ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে একটি রিভিশন পিটিশন আবেদন দাখিল করেন। ২০১৮ সালের ১ এপ্রিল অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক পিটিশন গ্রহণ করেন। 

পরবর্তীতে ২০১৮ সালের ২২ এপ্রিল জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক মো. সেলিম রেজা পিবিআইকে মামলাটি তদন্ত করার আদেশ দেন। 

এরপর পিবিআই তদন্ত শেষে পুলিশের দেওয়া প্রতিবেদন সমর্থন করে ২০২২ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। এ প্রতিবেদনেও অভিযোগ থেকে র‌্যাবকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়। 

এই প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে লিমনের মা হেনোয়ার আদালতে নারাজি আবেদন করেছিলেন। 

 

Comments

The Daily Star  | English

‘No room for politics under AL name, ideology’

Nahid Islam, adviser to the interim government, spoke with The Daily Star on the nation's key challenges and the way forward.

13h ago