অস্ট্রেলিয়ায় স্টুডেন্ট ভিসা অনুমোদনের হার ২০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন

অস্ট্রেলিয়ায় স্টুডেন্ট ভিসা অনুমোদনের হার ২০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। প্রতীকী ছবি: সংগৃহীত
অস্ট্রেলিয়ায় স্টুডেন্ট ভিসা অনুমোদনের হার ২০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। প্রতীকী ছবি: সংগৃহীত

অস্ট্রেলিয়ায় স্টুডেন্ট ভিসা প্রক্রিয়ায় কড়াকড়ির ফলে ভিসা অনুমোদনের হার গত ২০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছে।

আলাদা করে কয়েকটি দেশের শিক্ষার্থীদের জন্য ভিসা অনুমোদনের প্রক্রিয়াকে আগের তুলনায় আরও কঠোর করা হয়েছে। এই দেশগুলো হল বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, মালদ্বীপ, নেপাল, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা।

তবে চীনা শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার ভিসা দেওয়ার হার স্থিতিশীল রয়েছে। দেশটি থেকে আসা আবেদনের প্রায় ৯৭ শতাংশই সফল হয়েছে। 

অস্ট্রেলিয়ার স্বরাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র গণমাধ্যমকে বলেছেন, 'স্টুডেন্ট ভিসা অনুমোদনের হার কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ তথ্য-প্রমাণ জালিয়াতি ও ভুয়া শিক্ষার্থীদের আবেদন। গত বছরের আগস্ট থেকে ফেডারেল সরকার এসবের বিরুদ্ধে "সংগ্রাম" শুরু করেছে। আমরা কখনই এত বেশি শিক্ষার্থীকে প্রত্যাখ্যান করিনি।'

করোনাভাইরাস মহামারির পর অস্ট্রেলিয়ার সীমান্ত আবারও খুলে দেওয়ার পর থেকে জাল তথ্য ব্যবহার করে স্টুডেন্ট ভিসা দিতে একটি চক্র তৎপর হয়ে ওঠে।

প্রতারণামূলক ভিসার আবেদন বেড়ে যাওয়ায় গত বছর অস্ট্রেলিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভারতীয় শিক্ষার্থীদের ভিসা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল।

এই পরিস্থিতিতে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় স্টুডেন্ট ভিসা প্রক্রিয়া সতর্কতার সঙ্গে বিবেচনা করার নির্দেশনা দেয়।

২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট স্টুডেন্ট ভিসা আবেদনের ৮০ দশমিক ৯ শতাংশ মঞ্জুর করা হয়েছিল। ২০২২ সালে তা ছিল ৮৬ শতাংশ। ২০২১ সালে এই হার ৯১ দশমিক ৫ শতাংশ এবং করোনাভাইরাস  মহামারীর আগে ২০১৯ সালে অনুমোদনের হার ছিল ৮৯ দশমিক ৯ শতাংশ।

স্টুডেন্ট ভিসা আবেদনকারীদের অস্ট্রেলিয়ার অভিবাসন আইনে নির্ধারিত নিয়ন্ত্রক মানদণ্ডের বিপরীতে তাদের ব্যক্তিগত যোগ্যতার ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা হয়। যার মূল শর্ত হল আবেদনকারীকে অবশ্যই  একজন 'প্রকৃত শিক্ষার্থী' হতে হবে ।

অস্ট্রেলিয়ার শীর্ষ ক্যাটাগরির একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে 'কম ঝুঁকিপূর্ণ'রেটিং থাকে কারণ তারা যে শিক্ষার্থীদের ভর্তি করে তাদের বেশিরভাগই প্রকৃত ছাত্র এবং প্রতারণার হারের দিক থেকে তুলনামূলকভাবে কম।

অনেক  বিশ্ববিদ্যালয় বেশি শিক্ষার্থীকে  আকৃষ্ট করার জন্য নানা রকম কৌশল অবলম্বন করে থাকে। যার ফলে সেখানে জালিয়াতির সম্ভাবনা বেশি থাকে এবং  তারা একটি 'উচ্চ ঝুঁকি' রেটিং পায়।  তাদের আবেদনগুলো আরও কঠোরভাবে  যাচাই করা হয়।

স্বরাষ্ট্র দপ্তরের সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী গত ছয় মাসে দুই লাখ ৮২ হাজার ৩০২টি স্টুডেন্ট ভিসা আবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে এক লাখ ৩১ হাজার ৮৭৮টি উচ্চশিক্ষার আবেদন ও ৬৫ হাজার ৪৭০টি বৃত্তিমূলক শিক্ষার আবেদন।

এর মধ্যে উচ্চ শিক্ষার জন্য ৯৮ হাজার ১৯৮ এবং বৃত্তিমূলক শিক্ষার জন্য ৩৩ হাজার ৮৩৫ জনকে ভিসা দেওয়া হয়েছে।

উচ্চ শিক্ষার ভিসার জন্য অনুমোদন হার ৮২ দশমিক পাঁচ শতাংশে নেমে এসেছে। ২০২২ সালে এই হার ছিল ৮৭ দশমিক পাঁচ শতাংশ। ২০২১ সালে এই হার ছিল ৯৬ শতাংশ।

অস্ট্রেলিয়ান স্টুডেন্ট ভিসা অনুমোদনের ক্ষেত্রে ভিসা প্রক্রিয়া কড়াকড়ি করার ফলে  'ঝুঁকি রেটিং' এর দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্তরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সবচেয়ে বেশি সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও'নিল এবং শিক্ষামন্ত্রী জেসন ক্লেয়ারকে তাদের উদ্বেগের কথা জানিয়ে ১৬ জন ভাইস-চ্যান্সেলর একটি খোলা চিঠি পাঠিয়েছেন।

আকিদুল ইসলাম: অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী লেখক, সাংবাদিক

Comments

The Daily Star  | English

Teknaf customs in limbo as 19 mt of rice, authorised by AA, reaches port

The consignment of rice weighing 19 metric tonnes arrived at Teknaf land port on Tuesday evening with the documents sealed and signed by the Arakan Army

24m ago