শিশুদের প্রসাধনী ব্যবহার প্রবণতা বৃদ্ধি ঝুঁকিপূর্ণ: বিশেষজ্ঞ

শিশুদের প্রসাধনী ব্যবহার প্রবণতা বৃদ্ধি ঝুঁকিপূর্ণ: বিশেষজ্ঞ
প্রতীকী ছবি | সংগৃহীত

শিশুদের মধ্যে প্রসাধনী (স্কিনকেয়ার) পণ্য ব্যবহারের প্রবণতা দিনকে দিন যেভাবে বাড়ছে, তাতে তাদের ত্বকের অপূরণীয় ক্ষতি হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন ব্রিটিশ চর্মরোগ বিশেষজ্ঞরা।

এক বিবৃতিতে ব্রিটিশ অ্যাসোসিয়েশন ফর ডার্মাটোলজিস্ট জানিয়েছে, আট বছর বা তার কম বয়সী শিশুরাও যেভাবে প্রসাধনী পণ্য ব্যবহার করছে, তা উদ্বেগজনক।

ইউটিউব ও টিকটকের মতো প্ল্যাটফর্মের ইনফ্লুয়েন্সারদের মাধ্যমে কিছু শিশু প্রভাবিত হয়ে তাদের বাবা-মায়ের কাছে বিলাসবহুল প্রসাধনী পণ্যগুলো কিনে দেওয়ার অনুরোধ করছে।

কিন্তু এসব পণ্যের অনেকগুলোর মধ্যে সম্ভাব্য ক্ষতিকারক উপাদান রয়েছে এবং এগুলো কেবলমাত্র প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য তৈরি। যেমন: এক্সফোলিয়েটিং অ্যাসিড।

এসব উপাদান অ্যালার্জি বা অ্যাকজিমা সৃষ্টি করতে পারে।

কসমেটিকস পণ্যের রঙিন ও প্রাণীদের কার্টুনযুক্ত প্যাকেজিংয়ের কারণেও শিশুরা আকৃষ্ট হচ্ছে।

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, প্রসাধনী পণ্যের প্রতি শিশুদের আগ্রহ এবং তাদের ওপর সামাজিক মাধ্যম ও বন্ধুদের প্রভাবে বাবা-মায়েরা উদ্বিগ্ন।

সামাজিক মাধ্যমগুলোতে প্রসাধনী পণ্যের ভিডিওতে বয়স সম্পর্কিত কোনো বিধি-নিষেধ নেই। তাই ভিডিওগুলো সব বয়সী ব্যবহারকারীদের কাছেই পৌঁছায়। অসংখ্য ইনফ্লুয়েন্সার সামাজিক মাধ্যমে তাদের দৈনন্দিন স্কিনকেয়ার রুটিন এবং তারা কীভাবে বাইরে যাওয়ার জন্য তৈরি হয়, তার ভিডিও প্রকাশ করেন। এসব ভিডিও লাখো ভিউ পায়।

শিশুদের মধ্যে যেসব ব্র্যান্ডের প্রসাধনী পণ্য বেশি জনপ্রিয়, তার মধ্যে একটি হচ্ছে 'ড্রাঙ্ক এলিফ্যান্ট'। সামাজিক মাধ্যমের ইনফ্লুয়েন্সারদের মধ্যে এই ব্র্যান্ডের পণ্যের বিজ্ঞাপন বেশি দেখা যায়।

শিশুদের মধ্যে ড্রাঙ্ক এলিফ্যান্ট এতটাই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে যে এর প্রতিষ্ঠাতা টিফানি মাস্টারসন সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছেন, বাচ্চারা যাতে তাদের পণ্যগুলো থেকে দূরে থাকে। কারণ এগুলোতে অ্যাসিড ও রেটিনল আছে।

এই ব্র্যান্ডের পণ্য ব্যবহারের পর যেসব শিশুদের ত্বকের ক্ষতি হয়েছে, তাদের একজন স্যাডি। বন্ধুদেরকে ব্যবহার করতে দেখে স্যাডি তার মা লুসিকে ড্রাঙ্ক এলিফ্যান্টের প্রসাধনী কিনে দেওয়ার অনুরোধ করে। কিন্তু এত কম বয়সে এসব পণ্য ব্যবহারে ঝুঁকি থাকতে পারে, এই চিন্তা থেকে লুসি তার সন্তানকে সেগুলো কিনে দেননি। মায়ের কাছে ব্যর্থ হয়ে স্যাডি পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের কাছেও একই আবদার করে। পরে দেখা গেছে, পণ্যগুলো ব্যবহারের পর স্যাডির ত্বক লাল হয়ে গেছে এবং ত্বকে জ্বালা সৃষ্টি হয়েছে।

লুসি বলেন, তিনি নিজেও নিয়মিত প্রসাধনী পণ্য ব্যবহার করেন। তবে স্যাডি যেসব ব্র্যান্ডের নাম বলে, সেগুলো তিনি আগে কখনো শুনেননি।

বাধ্য হয়ে স্যাডির টিকটক অ্যাকাউন্টটি বন্ধ করে দেন লুসি।

ব্রিটিশ চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ড. টেস ম্যাকফেরসন বলেন, শিশুরা যাতে প্রসাধনী পণ্যের ব্যাপারে 'ভুল তথ্য' না পায়, সেটি নিশ্চিত করা জরুরি। এসবের অনেকগুলোই বয়সের ছাপ দূরীকরণ পণ্য। এগুলো প্রাপ্তবয়স্কদের ত্বকের জন্য উপযুক্ত হলেও শিশুদের জন্য উপযুক্ত নয়।

তিনি বলেন, 'আপনার বয়স যাই হোক না কেন, এই পণ্যগুলো ত্বকে জ্বালা সৃষ্টি করতে পারে। তবে স্পষ্টতই অল্পবয়সী শিশুদের ত্বকের জন্য এগুলো সম্ভাব্য বিপজ্জনক হতে পারে। অ্যাকজিমা বা সংবেদনশীল ত্বকের শিশুদের জন্য এগুলো উল্লেখযোগ্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এসব পণ্যের অনেকগুলোতে সুগন্ধি যোগ করা থাকে, যার ফলে অ্যালার্জি তৈরি হতে পারে।'

সূত্র: বিবিসি

গ্রন্থনা করেছেন আহমেদ হিমেল

Comments

The Daily Star  | English
Apparel Buyers Delay Price Increases Post-Wage Hike Promise

Garment exports to US grow 17%

Bangladesh shipped apparels worth $5.74 billion in the July-March period to the USA

4h ago