ডালের উৎপাদন বেড়েছে ৪ গুণ, লক্ষ্য এখন স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া: কৃষিমন্ত্রী
কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ বলেছেন, সরকারের কৃষিবান্ধব নীতি এবং দেশের বিজ্ঞানীদের উন্নত জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবনের ফলে গত ১৫ বছরে দেশে ডালের উৎপাদন বেড়েছে ৪ গুণের বেশি।
আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর হোটেল লা মেরিডিয়ানে আন্তর্জাতিক ডাল দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট (বারি) আয়োজিত আন্তর্জাতিক সেমিনারে কৃষিমন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ২০০৮-০৯ সালে দেশে প্রায় ২ লাখ টন ডাল উৎপাদন হতো, যা বর্তমানে প্রায় ৯ লাখ টনে পৌঁছেছে। কিন্তু তা দেশের চাহিদার এক-তৃতীয়াংশ। সেজন্য, আমাদের এখন লক্ষ্য ডালে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ডালের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য উচ্চফলনশীল জাত উদ্ভাবন, মানসম্পন্ন বীজের পর্যাপ্ত সরবরাহ এবং আধুনিক উৎপাদন প্রযুক্তি ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করা হচ্ছে। উন্নত প্রযুক্তি যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে গবেষণা এবং কৃষকের মাঠের মধ্যে ফলনের ব্যবধান কমিয়ে ফলন বাড়ানো যেতে পারে। এ ছাড়া, আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে জলবায়ু সহনশীল জাত উদ্ভাবনের মাধ্যমে লবণাক্ত, খরা ও চরাঞ্চলে ডালের চাষ বাড়াতে হবে। সেলক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
আয়োজনে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে মোট ১৫০ জন অংশগ্রহণ করেন।
সেমিনারে বারির প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা একেএম মাহবুবুল আলম মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
তিনি বলেন, দেশে ডালের চাহিদা প্রায় ২৫ লাখ মেট্রিক টন। এর এক-তৃতীয়াংশ স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত হচ্ছে এবং বাকিটা আমদানি করতে হয়। গত বছর প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে ডাল আমদানিতে।
তিনি জানান, দেশে চাষযোগ্য জমির ৭৬ শতাংশ জমিতে ধান চাষ হয়, অথচ ডাল চাষ হয় মাত্র ২ দশমিক ৪০ শতাংশ জমিতে। অন্য ফসলের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পারা, উন্নত জাত ও বীজের অপর্যাপ্ততা, জলবায়ু পরিবর্তন, কৃষিযন্ত্রের অপ্রতুলতা প্রভৃতি কারণে ডালের উৎপাদন কম হয়।
ডালের গুরুত্ব তুলে ধরার জন্য জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা প্রতি বছর ১০ ফেব্রুয়ারি বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক ডাল দিবস পালন করে। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য মাটি ও মানুষের পুষ্টির জন্য ডাল।
অনুষ্ঠানে ডাল ফসলের গবেষণা ও উৎপাদনে অসাধারণ অবদানের জন্য তিনজন বিজ্ঞানীকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।
Comments