জীবন থেকে অপ্রয়োজনীয় জিনিস দূর করবেন যেভাবে

জীবন থেকে অপ্রয়োজনীয় জিনিস দূর করবেন যেভাবে
ছবি: সংগৃহীত

অপ্রয়োজনীয় জিনিস দূর করার কথা বললে প্রথমেই মনে হয় বাসায় অপ্রয়োজনে পড়ে থাকা জিনিসের কথা। এগুলো অনেক সময় ফেলে দিতে ইচ্ছে করে না, কিন্তু জমতে জমতে ঘরের প্রায় সব জায়গা দখল করে ফেলে। তবে শুধু ঘরবাড়ি নয়, নানা ক্ষেত্রে অনেক অপ্রয়োজনীয় জিনিস, বিষয়, ব্যক্তি আমাদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময় ও স্থান দখল করে রাখে। এগুলো যদি জীবন থেকে সরিয়ে ফেলা যায় যায় তবে জীবন হয়ে ওঠে গোছালো, সহজ ও চাপমুক্ত।

চলুন জেনে নিই আমাদের জীবনে কী কী ক্লাটার থাকে এবং সেগুলো কীভাবে ডিক্লাটার করা যায়-

ফিজিক্যাল ক্লাটার

বাসার অপ্রয়োজনীয় জিনিসগুলোই ফিজিক্যাল ক্লাটার। আলমারির অতিরিক্ত জামাকাপড়, বাচ্চাদের অতিরিক্ত ও অপ্রয়োজনীয় খেলনা কিংবা প্রয়োজনের বেশি বিছানার চাদর, তোয়ালে, থালাবাসন এই সবকিছুই ফিজিক্যাল ক্লাটারের মধ্যে পড়ে। যেসব জিনিস জীবনে দুই থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে একেবারেই কাজে আসবে না বলে মনে হচ্ছে, সেগুলো যার কাজে লাগে তাকে দিয়ে দিতে পারেন। যেমন- ওজন বাড়লে আগের পোশাকগুলো কাউকে দিয়ে দিয়ে পারেন। পুরোনো থালাবাসন যার প্রয়োজন তাকে দিয়ে দিতে পারেন। বাড়তি কাপড়চোপড় বা অযথা পড়ে থাকা ঘরের জিনিস বিক্রিও করে দিতে পারেন।

 

টাইম ক্লাটার

এ ধরনের ক্লাটার মূলত আমাদের শিডিউলের অংশ। দিনের অনেকটা সময় এসব ক্লাটারের পেছনে চলে যায়। যেমন- সবার সব অনুরোধে 'হ্যাঁ' বলা, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক বেশি সময় দেওয়া, খুব বেশি গল্প করা ইত্যাদি অনেক কিছুই হতে পারে টাইম ক্লাটারের অংশ। প্রতিদিন কোন কাজগুলো আপনার সময় নষ্ট করে তা খুঁজে বের করুন এবং ধীরে ধীরে সরে আসুন।

ডিজিটাল ক্লাটার

এ ধরনের ক্লাটার আমাদের ফোন, কম্পিউটারে থাকে। ইনবক্সে অপ্রয়োজনীয় ইমেইল, স্প্যাম ফোল্ডারের জাংক ইমেইল অথবা আগ্রহী নন এমন নিউজ লেটার, এ সবকিছুই ডিজিটাল ক্লাটারের উদাহরণ। আবার ফোনের গ্যালারিতে যদি প্রয়োজনীয় ছবিটি খুঁজে না পান তবে বুঝতে হবে ফোনের ছবিও ডিক্লাটার করার সময় এসেছে। ফোনে অনেক সময় এমন অনেক অ্যাপ থাকে যেগুলো সচরাচর ব্যবহার করা হয় না। সেগুলো আনইনস্টল করে দেওয়া যেতে পারে।

মেন্টাল ক্লাটার

এ ধরনের ক্লাটার আমাদের মনকে দখল করে রাখে। নেতিবাচক চিন্তা, মানসিক চাপ, ঈর্ষা, অতীতের কোনো ঘটনার মতো বিষয় মেন্টাল ক্লাটার হয়ে উঠতে পারে। ভয়, দুঃশ্চিন্তাকেও মেন্টাল ক্লাটার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এগুলো দূর করতে হবে। নিজে না পারলে মনোবিদের সাহায্য নিন।

 

ফাইন্যান্সিয়াল ক্লাটার

অর্থনৈতিক ক্লাটার কঠিন কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ। ঋণ, বিভিন্ন দোকানের মেম্বারশিপ কার্ড ও ক্রেডিট কার্ড, অপ্রয়োজনীয় সাবস্ক্রিপশন ইত্যাদি ফাইন্যান্সিয়াল ক্লাটার। যে জিনিসটার সাবস্ক্রিপশন আপনার না হলেও চলে সেটা বাদ দিন। জরুরি না হলে ক্রেডিট কার্ডে কম খরচ করার চেষ্টা করুন। ঋণ যত দ্রুত সম্ভব শোধ করে ফেলার চেষ্টা করুন। আর্থিক হিসাব একটু গুছিয়ে রাখতে মাসিক আয় ও ব্যয় হিসাব করতে পারেন এবং ব্যয়ের জন্য বাজেট তৈরি করতে পারেন, যেন নতুন করে ঋণে পড়তে না হয়।

পারসোনাল ক্লাটার

জীবন চলার পথে নানা রকম মানুষের সঙ্গে পরিচয় হয়। জীবনের গুরুত্বপূর্ণ মানুষ ভাবেন যাদের, আপনি নিশ্চয়ই তাদের বিপদে এগিয়ে যান। খেয়াল  করুন তো, আপনার প্রয়োজনে তাদের পাচ্ছেন কি না? উত্তর যদি বারবারই 'না' আসে, তবে সময় এসেছে সেই সুসময়ের বন্ধুদের জীবন থেকে বাদ দেওয়ার। আবার, কারো টক্সিক আচরণে আপনার মানসিক প্রশান্তিতে ব্যাঘাত ঘটলে তার কাছ থেকেও সরে আসুন।

 

Comments

The Daily Star  | English

Climate finance: $250b a year needed

COP29 draft deal says rich nations should pay the amount to fight climate change

9m ago