চুরির সাইকেলসহ ছাত্রলীগ নেতা আটক, বিপাকে সাইকেল মালিক
লালমনিরহাটের পাটগ্রামে চুরি যাওয়া একটি বাইসাইকেলসহ এক ছাত্রলীগ নেতাকে আটক করায় উল্টো সাইকেলের মালিকের বিরুদ্ধে মামলা ও অন্যান্য হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
ছাত্রলীগ নেতা মমিনুর ইসলাম পাটোয়ারী ওরফে ফুয়াদ পাটোয়ারীকে গত ১৭ জানুয়ারি গ্রামের ব্যবসায়ী লিটু সাহার চুরি হওয়া বাইসাইকেলসহ আটক করে স্থানীয়রা।
অভিযুক্ত ফুয়াদ পাটোয়ারী পাটগ্রামের বাউড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি। প্রকাশ্যে মাদক গ্রহণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছড়িয়ে পড়লে তাকে সংগঠন থেকে গত ৪ ফেব্রুয়ারি বহিষ্কার করা হয়।
পুলিশ ও ইউনিয়ন পরিষদ সূত্র জানায়, গত ১০ জানুয়ারি রাতে বাউড়া বাজার এলাকায় লিটু সাহার বাড়ি থেকে মালামাল চুরি হয়। এ ঘটনায় পরদিন পাটগ্রাম থানায় লিখিত অভিযোগ করেন লিটু। গত ১৭ জানুয়ারি চুরির বাইসাইকেলসহ ছাত্রলীগ নেতা ফুয়াদকে আটক করে স্থানীয়রা। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধি, গ্রাম পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের উপস্থিতিতে চুরির বাইসাইকেল ফেরত দেন ফুয়াদ। এসময় ফুয়াদ লিখিত মুচলেকা দেন 'আমি আর কোন চুরির ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত হবো না।'
তবে এরপরপরই লিটু সাহার বিরুদ্ধে গত ২১ জানুয়ারি আদালতে গিয়ে ৭ ধারায় মামলা করেন ফুয়াদ। মামলায় অভিযোগ করেন, লিটু সাহা দলবদ্ধ হয়ে ফুয়াদকে বাড়ির সামনে মারধরের চেষ্টা করেন।
জানতে চাইলে লিটু সাহা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেতা ফুয়াদ আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা করেছেন।'
তিনি বলেন, 'চুরির সাইকেলসহ ফুয়াদকে স্থানীয় লোকজন আটক করেছে। ফুয়াদ লিখিতভাবে চুরির দায় স্বীকার করেছেন। তার প্রকাশ্যে হেরোইন সেবনের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। তিনি সংগঠন থেকে বহিষ্কার হয়েছেন। এজন্য ফুয়াদ আমাকে ও আমার পরিবারের লোকজনকে দোষ দিচ্ছেন।'
'ফুয়াদ ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে এসে গোলযোগের চেষ্টা করছে। আমাকে ও পরিবারের লোকজনকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছে। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি,' বলেন লিটু।
অভিযোগ নিয়ে জানতে চাইলে ছাত্রলীগ নেতা ফুয়াদ বলেন, 'আমি এ ব্যাপারে কোনো কথা বলব না।'
বাউড়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মামুন হোসেন সরকার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ফুয়াদের বিরুদ্ধে চুরি ও প্রকাশ্যে মাদক সেবন প্রমাণিত হয়েছে। কিছুদিন আগে বাউড়া এলাকায় চুরির প্রবণতা বেড়েছিল। ফুয়াদকে আটকের পর কোনো চুরির ঘটনা ঘটেনি। তবে প্রকাশ্যে মাদক সেবন এখনো চলছে। ফুয়াদ লিখিতভাবে জানিয়েছেন, তিনি আর কোনো দিনই চুরির সাথে জড়িত হবেন না। প্রতিশোধ নিতে লিটু সাহার বিরুদ্ধে বানোয়াট মামলা করেছে ফুয়াদ। তিনি ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা লিটু সাহাকে হুমকি দিচ্ছে,' তিনি বলেন।
পাটগ্রাম থানার সাব ইন্সপেক্টর (এসআই) মোহাম্মদ কাওছার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, লিটু সাহা অভিযোগ প্রত্যাহার করায় অভিযুক্ত চোরের বিরুদ্ধে পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। বাউড়া এলাকায় প্রকাশ্যে মাদকদ্রব্য সেবনের প্রবণতা বেড়েছে। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে জানানো হয়েছে। পুলিশ মাদকের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে।
লালমনিরহাট পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, বিষয়টি পুলিশ জেনেছে। এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অপরাধীকে আইনের আওতায় আনা হবে।
Comments