হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছেন খালেদা জিয়া, যা জানালেন চিকিৎসক

খালেদা জিয়া মুক্ত
খালেদা জিয়া। ফাইল ছবি সংগৃহীত

স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে হাসপাতাল থেকে গুলশানের বাসায় ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা ৪৮ মিনিটে তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে পৌঁছান এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে রাত ১২টার দিকে বাসায় পৌঁছান।

পরে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন তার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে সাংবাদিককে ব্রিফ করেন।

তিনি জানান, বিএনপি চেয়ারপারসন কিছুটা সুস্থ বোধ করায় তাকে বাসায় নিয়ে আসা হয়েছে। তবে, এটা সাময়িক সুস্থতা। মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা মনে করেন, প্রকৃত সুস্থতার জন্য তাকে যত দ্রুত সম্ভব বিদেশে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করাতে হবে।

ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, 'স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও চিকিৎসা শেষে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে রাতে বাসায় নিয়ে আসা হয়েছে। হাসপাতালে ৫ মাস থাকার পর গত ১১ জানুয়ারি তাকে বাসায় আনা হয়েছিল। তখন বলেছিলাম, উনাকে মাঝে মাঝে হাসপাতালে নিতে হবে, কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা প্রয়োজন হবে।'

'আজ উনাকে (খালেদা জিয়া) ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে নেওয়া হয়, সেখানে কিছু চেকআপ করা হয়। ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদার, ডা. মো. জাফর ইকবাল, ডা. এফ এম সিদ্দিকী, প্রফেসর নুরুদ্দীন আহমেদ, শামসুল আরেফীনের সমন্বয়ে মেডিক্যাল বোর্ড পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর কিছু ওষুধ নতুন করে দেন। বিএনপি চেয়ারপারসন কিছুটা সুস্থ বোধ করায় মেডিক্যাল বোর্ডের পরামর্শে রাত সাড়ে ১১টার দিকে উনাকে হাসপাতাল থেকে বাসায় আনা হয়,' যোগ করেন তিনি।

ডা. জাহিদ আরও বলেন, 'চিকিৎসকরা বলেছেন, উনার যে সুস্থতা এটা ক্ষণিকের সুস্থতা। উনাকে সুস্থ রাখার যে চেষ্টা, জন হপকিনসের বিশেষজ্ঞরা যেগুলো বলে গেছেন, সেগুলোর কারণে উনি কিছুটা সুস্থ আছেন। এর মানে উনার ক্রনিক লিভার ডিজিজ ভালো হয়ে গেছে, তা কিন্তু নয়। আগেও যেমন বলা হয়েছে, আজকেও মেডিক্যাল বোর্ড বলেছে যে, যদি উনাকে মাল্টি-ডিসিপ্লিনারি সেন্টারে নিয়ে লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্টেশনের চেষ্টা করা হয়, তবেই কেবল উনার ক্রনিক লিভার ডিজিজ বা পোর্টাল হাইপারটেনশন নিরসন করা যাবে। তখন তিনি প্রকৃত সুস্থ অবস্থায় যাবেন। যত দ্রুত আমরা এটা করতে পারব, তত উনার জন্য মঙ্গল। এটাই চিকিৎসকরা মনে করেন।'

'উনার পরিবার, উনার দল সবাই এটাই চায়। আমরা আশা করি উনার বিদেশ যাওয়ার যে প্রতিবন্ধকতা, সেটা যত দ্রুত নিরসন হবে, যত দ্রুত আমরা উনাকে বিদেশে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করাতে পারব, তাহলে উনি সুস্থ হতে পারবেন। আমরা সবাই মিলে যদি চেষ্টা করি এবং যদি উনাকে সুযোগ দেওয়া হয়, তবেই উনি সুস্থ হতে পারবেন,' বলেন তিনি।         

গত বছরের ৯ আগস্ট হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর থেকে সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।

খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গত ২৫ অক্টোবর মার্কিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের একটি দল ঢাকায় আসে। তারা লিভারসিরোসিসে আক্রান্ত খালেদা জিয়ার ট্রান্সজাগুলার ইন্ট্রাহেপ্যাটিক পোর্টোসিস্টেমিক শান্ট (টিআইপিএস) প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন।

উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরে তার পরিবারের সদস্যরা সরকারের কাছে আবেদন জানিয়ে আসছেন।

খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট ও চোখের সমস্যাসহ নানা রোগে ভুগছেন।

কারাদণ্ড পাওয়া বিএনপি চেয়ারপারসনকে ২০২০ সালে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দেওয়া হয়। এরপর থেকে তিনি হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বাধীন মেডিকেল বোর্ডের অধীনে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

 

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh alleges border abuse by BSF

Those pushed-in allege torture, abuses in India

A Bangladeshi woman has alleged that India’s Border Security Force (BSF) tied empty plastic bottles to her and her three daughters to keep them afloat, then pushed them into the Feni river along the Tripura border in the dark of night, in a chilling account of abuse at the border.

3h ago