ঘুমধুম সীমান্তের বাসিন্দাদের সরে যেতে মাইকিং, খোলা হলো ২ আশ্রয়কেন্দ্র

সরকারি বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহীদের লড়াইয়ের মধ্যেই নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম দিয়ে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির সদস্যরা বাংলাদেশে আসেন। ছবি: সংগৃহীত

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্তের দুটি বিদ্যালয়কে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে, স্থানীয় ২৪০টি পরিবারকে ওই এলাকা ছেড়ে নিরাপদ জায়গায় সরে যাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ও তুমব্রু সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারে সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহী আরাকান আর্মির মধ্যে চলমান সংঘর্ষে বাংলাদেশের ভেতরে পড়া মর্টার শেল বিস্ফোরণে দুজন নিহত হওয়ার পর এই ব্যবস্থা নেওয়া হলো।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকে সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের দুটি আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য মাইকে প্রচার চালানো হয়। সেই সঙ্গে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে বলা হচ্ছে।

ঘুমধুম ইউনিয়নের সংরক্ষিত নারী সদস্য খালেদা বেগম জানান, সীমান্তের পরিস্থিতি খারাপ হতে থাকায় মাইকিং করে স্থানীয় লোকজনকে সরে যেতে বলা হচ্ছে। গতকাল থেকেই নারী ও শিশুরা সীমান্ত এলাকা ছেড়ে আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। তবে পরিবারের পুরুষ সদস্যরা অনেকেই এখনো সেখানে আছেন।

তিনি বলেন, 'যারা এখনও আছেন তারা বাইরে বের হচ্ছেন না। বাজারে দোকানপাট বন্ধ রাখা হয়েছে। রাস্তায় লোকজনের চলাচল নেই বললেই চলে। আশ্রয়কেন্দ্র খোলার কথা শুনেছি। তবে লোকজন আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে যাচ্ছে বেশি।'

ঘুমধুম ইউনিয়নের সচিব এরশাদ উল্লাহ হক সাংবাদিকদের বলেন, সীমান্ত এলাকায় গোলাগুলি থামেনি। ঘুমধুম ইউনিয়নের একেবারে সীমান্তঘেঁষা গ্রামের বাসিন্দাদের নিরাপদ জায়গায় সরে যেতে বলা হচ্ছে। গ্রামগুলো হলো তুমব্রু কোনার পাড়া, তুমব্রু মাঝের পাড়া, ভাজাবনিয়া পাড়া, তুমব্রু বাজার পাড়া, তুমব্রু চাকমা হেডম্যান পাড়া, তুমব্রু পশ্চিমকুল পাড়া, ঘুমধুম নয়াপড়া, ঘুমধুম পূর্বপাড়া এবং ঘুমধুম মধ্যম পাড়া। মূলত এসব পাড়ায় মাইকিং করে বাসিন্দাদের সরে যেতে বলা হচ্ছে। এই পাড়াগুলোতে প্রায় ২৪০টি পরিবার বসবাস করে।

আজ বিকেল ৩টার দিকে বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন সীমান্ত পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, তিন দিন ধরে সীমান্ত এলাকায় সংকট চলছে। নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে দুটি স্কুলে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার লোকজনকে আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার অনুরোধ করা হচ্ছে।

সীমান্তের ওপার থেকে আসা বুলেট ও বোমার অংশে তাৎক্ষণিকভাবে হাত না দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, অনেক সময় অবিস্ফোরিত বুলেট ও বোমা বিস্ফোরণ হয়ে মানুষ হতাহত হতে পারে। সবাইকে এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে।

এদিকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, সীমান্ত পরিস্থিতি, আশ্রয় নেওয়া লোকজনদের খাবার ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে বান্দরবান ও কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারদের উপস্থিতিতে একটি সভা হওয়ার কথা রয়েছে।

 

Comments

The Daily Star  | English

Dhaka airport receives 2nd bomb threat

Operations at HSIA continue amid heightened security

2h ago