টানা বৃষ্টিতে বান্দরবানে পাহাড় ধসের শঙ্কা, নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার নির্দেশ

বান্দরবানে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ি এলাকায় আতঙ্কে আছেন বাসিন্দারা। ছবি: স্টার

মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে টানা দুই দিনের ভারী বর্ষণে বান্দরবানে পাহাড় ধসের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে মাইকিং করছে স্থানীয় প্রশাসন।

আজ শুক্রবার বান্দরবান শহরের ইসলামপুর, স্টেডিয়ামপাড়া ও আশপাশের পাহাড়ি এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ ও আতঙ্ক দেখা গেছে।

ইসলামপুর এলাকার বাসিন্দা কামাল হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আরও কয়েকদিন বৃষ্টি হলে পাহাড় ধস শুরু হবে। আমাদের এখনই নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে হবে, নইলে বড় বিপদে পড়তে পারি।'

বান্দরবানে সড়কের পাশে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ি এলাকা। ছবি: স্টার

স্টেডিয়াম সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা গোপাল মল্লিক বলেন, 'আমরা নিম্নআয়ের মানুষ। আমাদের সামর্থ্য নেই সমতলে বা নিরাপদ জায়গায় যাওয়ার। তাই ঝুঁকি নিয়ে এখানেই থাকতে হচ্ছে।'

জলাবদ্ধতা ও পাহাড়ি ঢলের আশঙ্কা

টানা বৃষ্টিতে শহরের বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। উজান থেকে পানি নেমে আসায় পাহাড়ি ঢল ও বন্যার সম্ভাবনার কথাও জানিয়েছে প্রশাসন।

জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত বছরের অভিজ্ঞতা মাথায় রেখে ১৭ মে থেকেই আমরা দুর্যোগকালীন জরুরি সেবা কমিটি গঠন করেছি। এতে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, সিভিল সার্জন, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও এনজিও প্রতিনিধিরা আছেন।'

তিনি জানান, দুর্ঘটনা ঘটলে তাৎক্ষণিক উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের নির্ধারিত আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হবে।

জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, বিভিন্ন স্কুল-কলেজে মোট ২২০টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। জেলা, উপজেলা ও পৌরসভা পর্যায়ে খোলা হয়েছে জরুরি সেবা বুথ। 

সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মাধ্যমে দুর্যোগকালীন সময়ে জরুরি চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে সব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সরবরাহ করা হয়েছে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও প্রয়োজনীয় ওষুধ। 

পাশাপাশি পর্যাপ্ত খাদ্য সহায়তাও মজুত রয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক।  

এক প্রশ্নের জবাবে জেলা প্রশাসক বলেন, 'পাহাড় কাটা সম্পূর্ণ অবৈধ। অনেকেই রাতে পাহাড় কাটছে। আমরা নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছি। তারা খবর পেয়ে পালিয়ে যায়। এটা বন্ধ না হলে পাহাড় ধসের ঝুঁকি আরও বাড়বে।'

জেলা আবহাওয়া দপ্তরের উপপরিচালক সনাতন কুমার মন্ডল ডেইলি স্টারকে জানান, মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে আজ সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বান্দরবানে ১৭৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামীকাল পর্যন্ত টানা বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে।

Comments

The Daily Star  | English

What are the five charges against Hasina at ICT?

Former home minister Kamal and ex-IGP Mamun have also been accused

47m ago