বিপিএল

আলিসের ঘূর্ণিতে বিধ্বস্ত সিলেটের টানা তৃতীয় হার

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

সামিত প্যাটেলের স্পিনে দিক হারিয়ে ফেলা কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স পেল মামুলি পুঁজি। কিন্তু সেই রানকে সিলেট স্ট্রাইকার্সের জন্য আকাশছোঁয়া বানিয়ে ফেললেন আলিস আল ইসলাম। তার ঘূর্ণি জাদুতে রীতিমতো বিধ্বস্ত সিলেট তিন ম্যাচ খেলে হারের বৃত্তেই বন্দি রইল। আর হার দিয়ে বিপিএল শুরু করা কুমিল্লা পেল টানা দ্বিতীয় জয়ের স্বাদ।

শুক্রবার আসরের সিলেট পর্বের প্রথম দিনের দ্বিতীয় ম্যাচটি হয়েছে লো স্কোরিং। তারপরও সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে ৫২ রানের বড় ব্যবধানে জিতেছে লিটন দাসের নেতৃত্বাধীন কুমিল্লা। তাদের ৮ উইকেটে ১৩০ রানের জবাবে ২২ বল বাকি থাকতে স্রেফ ৭৮ রানে গুটিয়ে গেছে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার সিলেট।

টি-টোয়েন্টিতে ক্যারিয়ারসেরা বোলিংয়ে অফ স্পিনার আলিস নেন ১৭ রানে ৪ উইকেট। ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জেতেন তিনি। তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন রোস্টন চেজ। তিনি ২ উইকেট দখল করেন ১৭ রানে। তবে উইকেটশূন্য থাকেন বাঁহাতি পেসার মোস্তাফিজুর রহমান। খরুচে বোলিংয়ে ২ ওভারে ২২ রান দেন তিনি।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ওভারেই লিটনকে হারায় কুমিল্লা। ২ চার মেরে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়েন অধিনায়ক। ধাক্কা সামলে মোহাম্মদ রিজওয়ানকে নিয়ে দলকে টানেন ইমরুল কায়েস। দ্বিতীয় ওভারে রিভিউ নিয়ে জীবন পাওয়ার পর আক্রমণে মনোযোগী হন ইমরুল। পাওয়ার প্লেতে পড়েনি আর কোনো উইকেট, কুমিল্লার সংগ্রহ দাঁড়ায় ১ উইকেটে ৫৩ রান।

এরপর বাঁহাতি স্পিনে ভেলকি দেখিয়ে কুমিল্লাকে এলোমেলো করে দেন সামিত। ইংল্যান্ডের বাঁহাতি স্পিনারের কল্যাণে সিলেট ঘুরে দাঁড়ায়। সপ্তম ওভারে তিনি ভাঙেন ৩৫ বলে ৪৭ রানের জুটি। ধুঁকতে থাকা পাকিস্তানের ওপেনার রিজওয়ান ফেরেন ১৬ বলে ১৪ রানে। নিজের পরের দুই ওভারে ইমরুল ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের চেজকেও মাঠছাড়া করেন সামিত। বাঁহাতি ইমরুল ২৮ বলে ৩ চার ও ১ ছয়ে করেন সর্বোচ্চ ৩০ রান। চেজ থিতু হতে পারেননি। মাঝে তাওহিদ হৃদয় কাটা পড়েন রানআউটে।

৭৪ রানে ৫ উইকেট হারানো কুমিল্লার সংগ্রহ সম্মানজনক অবস্থায় পৌঁছায় জাকের আলি অনিক ও পাকিস্তানের খুশদিল শাহের অবদানে। ষষ্ঠ উইকেটে তারা যোগ করেন ৪০ বলে ৩৯ রান। জাকের ২৭ বলে ২৯ ও খুশদিল ২২ বলে ২১ রান করেন। দুজনকেই সাজঘরে পাঠান জিম্বাবুয়ের পেসার রিচার্ড এনগারাভা। সামিত ১৬ রানে নেন ৩ উইকেট। এনগারাভা ২ উইকেট পান ২৫ রানে। অভিজ্ঞ পেসার মাশরাফি ৪ ওভারে ১৯ রান দিয়ে পাননি কোনো উইকেট।

প্রতিপক্ষকে অল্প রানে বেঁধে ফেলার স্বস্তি উবে যেতে সময় লাগেনি সিলেটের। ব্যাটিং ব্যর্থতার হতাশাজনক পারফরম্যান্স উপস্থাপন করে তারা। দলটির হয়ে দুই অঙ্কে যেতে পারেন কেবল দুজন। চারে নামা জাকির হাসান ৩৪ বলে ৬ চারে করেন ৪১ রান। জিম্বাবুয়ের রায়ান বার্ল আটে নেমে আউট হন ১৮ বলে ১৪ রানে। কোনো বাউন্ডারি নেই তার ইনিংসে।

দ্বিতীয় ওভারে মোহাম্মদ মিঠুনের রানআউট হওয়া দিয়ে সিলেটের দুর্দশার শুরু। ওই ওভারেই আক্রমণে যাওয়া আলিস অসাধারণ এক ডেলিভারিতে এলবিডব্লিউ করেন নাজমুল হোসেন শান্তকে। রিভিউ নিলেও লাভ হয়নি। পরের ওভারে সামিতকে বোল্ড করেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসার ম্যাথু ফোর্ড। ওই ডেলিভারিটিও ছিল নজরকাড়া।

১১ রানে ৩ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর দলের বিপর্যয়ে হাল ধরতে পারেননি ইয়াসির আলি, বেন কাটিং ও মাশরাফি। তিনজনই আলিসের ঝুলিবন্দি হন। কাটিং ও মাশরাফিকে টানা দুই বলে সাজঘরে পাঠিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও জাগান তিনি। অষ্টম ওভারে ২৮ রানে ৬ উইকেট খোয়ানো সিলেট এরপর কোনো নাটকীয় পরিস্থিতি তৈরি করতে পারেনি। জাকির ও বার্লের ৩৬ বলে ৪০ রানের সপ্তম উইকেট জুটির পর ফের হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে তারা। ১০ রানে হারায় শেষ ৪ উইকেট।

Comments

The Daily Star  | English

‘Shockingly insufficient’

"The proposed decision to allocate USD 250 billion per year for all developing countries is shockingly insufficient," said the adviser

4h ago