কনকনে ঠান্ডায় নিম্ন আয়ের মানুষের দুর্ভোগ

কনকনে ঠান্ডায় নিম্ন আয়ের মানুষের দুর্ভোগ
ছবি: স্টার

কনকনে ঠান্ডা আর কুয়াশার কারণে ঠিকমতো কাজ করতে না পারায় দুর্ভোগে পড়েছেন লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামের শ্রমজীবী মানুষ। হাড় কাঁপানো ঠান্ডা উপেক্ষা নিম্ন আয়ের মানুষেরা কাজে যোগ দিলেও বেশিক্ষণ টিকতে পারছেন না। এতে কমছে তাদের আয়-উপার্জন।

লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার সাকোয়া গ্রামের ইটভাটার শ্রমিক আতোয়ার রহমান (৪৮) দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, তার স্ত্রী আকলিমা বেগমসহ তিনি ইটভাটায় ইট তৈরির কাজ করেন। কনকনে শীত উপেক্ষা করেই তারা প্রতিদিন সকালে বাইসাইকেলে চড়ে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে একটি ইটভাটায় কাজে যান। তিন সপ্তাহ আগে তারা দুই জন প্রতিদিন ১২শ টাকা রোজগার করতেন। ঠান্ডার কারণে ঠিকমতো কাজ করতে না পারায় এখন ৫০০-৬০০ টাকা রোজগার করতে পারছেন। 

'ঠান্ডার কারণে হাত-পা জমে যায়। আধা ঘণ্টা কাজ করার পর আর কাজ করার অবস্থা থাকে না,' তিনি বলেন।

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার হাতিয়া গ্রামের কৃষি শ্রমিক মফিদুল ইসলাম (৫৫) গেল পাঁচ দিন ধরে তিনি কাজে যোগ দিতে পারছেন না ঠান্ডার কারণে। ঠান্ডায় যবুথবু হয়ে বাড়িতেই সময় কাটাচ্ছেন। ঠান্ডায় উপার্জন কমে যাওয়ায় খুব কষ্টে আছেন তারা।

একই গ্রামের জেলে সুভাষ দাস (৫০) দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ঠান্ডার কারণে জেলেরা খাল-বিল ও নদ-নদীতে মাছ ধরতে সাহস পাচ্ছেন না। অনেকে ঠান্ডা উপেক্ষা করে পানিতে নামলেও বেশিক্ষণ টিকতে পারছেন না। ঠান্ডার কারণে তাদের উপার্জন নেই বললেই চলে। ঠান্ডা না কমা পর্যন্ত তাদের দুর্ভোগ কমবে না।

আগুনে দগ্ধ নারী কৃষি শ্রমিকের মৃত্যু

ঠান্ডা থেকে রেহাই পেতে গত সোমবার রাতে বাড়ির উঠানে খড়কুটোর আগুনে জ্বালিয়ে তাপ নেওয়ার সময় নারী শ্রমিক সাজেদা বেগম (৫৭) দগ্ধ হন। পুড়ে যায় শরীরের প্রায় ৫৫-৬০ শতাংশ। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বুধবার রাতে মারা যান সাজেদা।

নিহত সাজেদা বেগম লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার সাপ্টিবাড়ী ইউনিয়নের পশ্চিম দৈলজোর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি পেশায় একজন কৃষি শ্রমিক ছিলেন।

তার স্বামী নুর ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, তিনিও একজন কৃষি শ্রমিক। অসুস্থতার কারণে তিনি কাজ করতে পারছেন না। তার স্ত্রী সাজেদা বেগম কৃষি শ্রমিক হিসেবে মাঠে কাজ করে উপার্জন করত। ঠান্ডা থেকে রেহাই পেতে আগুনে তাপ নেওয়ার সময় দগ্ধ হয়।

তিনি বলেন, তারা ঠান্ডা সহ্য করতে পারছেন না। পর্যাপ্ত গরম কাপড় না থাকায় তারা বাধ্য হয়েই সকালে ও রাতে খড়কুটোর আগুন জ্বালছেন।

কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পযর্বেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্বতা সুবল চন্দ্র সরকার গতকাল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, গেল কয়েকদনি ধরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭-৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানামা করছে। চারদিক ঢেকে থাকছে ঘন কুয়াশায়। দুপুরের পর সূর্যের দেখা মিললেও তা বেশিক্ষণ থাকছে না। এ রকম আবহাওয়া আরও ২-৩ দিন থাকতে পারে।

Comments

The Daily Star  | English

US retailers lean on suppliers to absorb tariffs

Rather than absorbing the cost or immediately passing it on to consumers, many US apparel retailers and brands have turned to their suppliers in Bangladesh, demanding they share the pain

8h ago