‘বাংলাদেশে গণতন্ত্র ছাড়া অন্য কোনো পদ্ধতি চলবে না’

গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলনরত বিরোধী দলগুলো রাজপথ ছাড়বে না বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান।
‘গণতন্ত্রের পক্ষে গণস্বাক্ষর’ কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান। ছবি: সংগৃহীত

গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলনরত বিরোধী দলগুলো রাজপথ ছাড়বে না বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান।

আজ শনিবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে নাগরিক ঐক্য আয়োজিত 'গণতন্ত্রের পক্ষে গণস্বাক্ষর' কর্মসূচিতে তিনি এ কথা বলেন।

মঈন খান বলেন, 'আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলে দিতে চাই, বাংলাদেশে গণতন্ত্র ব্যতিরেকে অন্য কোনো পদ্ধতি কোনোদিন চলবে না। এই সরকার গায়ের জোরে ক্ষমতায় আছে, বন্দুকের নলের জোরে ক্ষমতায় আছে। শুধু আমরাই এ কথা বলছি না, সারাবিশ্বের মিডিয়া দেখুন, বিভিন্ন রাষ্ট্রের যে বক্তব্য এসেছে সেগুলো দেখুন, ৭ জানুয়ারির প্রহসনের নির্বাচন সম্পর্কে আমরা বিরোধী গণতান্ত্রিক দলগুলো যে কথা বলে গেছি বিগত কয়েক বছর ধরে, তারা এই কথার প্রতিধ্বনি করেছে বিগত প্রহসনের নির্বাচনের সময়।'

'কাজেই আজকে এটা প্রতিষ্ঠিত দেশে এবং আন্তর্জাতিকভাবে যে, বাংলাদেশে গণতন্ত্র মৃত। আমাদের একটিমাত্র প্রতিজ্ঞা, একটিমাত্র লক্ষ্য, আমরা বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনব। আমাদের গণতন্ত্রের আন্দোলন চলতেই থাকবে। গণতন্ত্রের অধিকার যতক্ষণ না আমরা বাংলাদেশের মানুষকে ফিরিয়ে দিতে পারব, ততক্ষণ আমরা রাজপথ ছাড়ব না', বলেন তিনি।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, 'ওরা (আওয়ামী লীগ) সরকারে যাওয়ার যোগ্যতা রাখেন না, এটা ভোট হয়নি। এজন্য এই সইয়ের ব্যবস্থা আমরা করেছি। বাংলাদেশের ১০ কোটি ভোটার কেবল নয়, বাংলাদেশের ১৭ বা ১৮ কোটি জনগণের কাছে আমরা পৌঁছাবার চেষ্টা করব, আমাদের এই কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে, অফলাইন ও অনলাইনে।'

'শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে তার স্ত্রী আসমা কিবরিয়া যেমন শান্তির স্বপক্ষে নীলিমা করেছিলেন… আমরাও বলেছি, গণতন্ত্রের পক্ষে গণস্বাক্ষর। এটাও আমরা ঘোষণা করছি যে, আমরা গণতন্ত্রের পক্ষে গণসংগীত করব, গণতন্ত্রের পক্ষে গণনাটক করব, সর্বত্র এই সরকারকে ধিক্কার জানাতে চাই আমরা। এত বড় ফোরটোয়েন্টি টাইপের গভর্নমেন্ট দুনিয়ার কোথাও হয়েছে কি না সন্দেহ', বলেন তিনি।

মান্না বলেন, 'তথাকথিত ভোট ভোট খেলা… এটা এতোই ন্যক্কারজনক বিষয় যে, বাংলাদেশের শিশুরা পর্যন্ত জানে ভোটের নামে ৭ জানুয়ারি খেলা হয়েছে। কত পারসেন্ট ভোট পড়েছে? নির্বাচন কমিশন এমনকি প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিজেই কথা বলতে গিয়ে দ্বিধার মধ্যে পড়ে গেছেন… বলে ফেলেছিলেন ২৮ শতাংশ, পরে তাকে পাশ থেকে একজন সংশোধন করে বলেন সংখ্যাটি ৪০ শতাংশ হবে... তখন তিনি বলেন ৪০ শতাংশ হতে পারে… এরপরও কিছু প্রমাণ করা যাচ্ছে না?'

বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, 'পরিস্থিতিটা কী রকম? সরকার কতখানি নাজেহাল দেখেন… ডিপ্লোমেটরা রাষ্ট্র রাষ্ট্র যে সম্পর্ক, তারা সেখানে যাচ্ছেন… সৌজন্য সাক্ষাত করছেন…কথা-বার্তা বলছেন, কেউ কেউ ফুল দিচ্ছেন। সেটাকে সরকার তাদের প্রতি তাদের একটা রাজনৈতিক সমর্থন হিসেবে বিবেচনা করে একটা প্রচারের ঢামাঢোল তৈরি করেছে।'

'আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই, কূটনীতিকদের এই ফুল নিয়ে যাওয়া সৌজন্য সাক্ষাতকার… এটাকে সরকার তার অবৈধ শাসন চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে কোনো সমর্থন হিসেবে বিবেচনা করার কারণ নেই এবং কূটনীতিকের এই ফুল নিয়ে যাওয়াকে আরও পাঁচ বছরের জন্যে লাইসেন্স হিসেবে যদি বিবেচনা করেন, বড় ধরনের ভুল হবে', বলেন তিনি।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, 'মানুষের শক্তিকে, জনতার ঐক্যবদ্ধ শক্তিকে কোনো ফ্যাসিস্ট গণহত্যা চালিয়ে দাবিয়ে রাখতে পারেনি… এ দেশে একাত্তর সাল তার প্রমাণ। কাজেই আওয়ামী লীগ যত মিথ্যা, যত ভয়ের আর ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করুক না কেন, যত দমন-পীড়ন আসুক না কেন, তারা আমাদের দেশের মানুষকে দাবিয়ে রাখতে পারবে না।'

'সময় ঘনিয়ে আসছে। ওরা ভাবছে, পাঁচ বছর টিকে গেলাম, পাঁচ বছর টিকে গেলাম… আর বিদেশিরা আমাদের সমর্থন দিচ্ছে… এটা বললেই বোধহয় টিকে যাবে। আমরা পরিষ্কার করে বলি, আপনাদের এতো নিশ্চিন্তে ঘুমানোর কোনো জায়গা নেই, বাংলাদেশের মানুষ আপনাদের নিশ্চিন্তে ঘুমাতে দেবে না এবং তারা ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে… নতুন করে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং অচিরেই রাজপথে জনতার সংগ্রাম ফুলে-ফুসে উঠবে… অভ্যুত্থানে রূপ নেবে', যোগ করেন তিনি। 

নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সারের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন জাতীয় গণফ্রন্টের প্রধান সমন্বয়ক টিপু বিশ্বাস, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, ১২ দলীয় জোটের সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান রিজু, গণঅধিকার পরিষদের নেতা বাবুল বিশ্বাস এবং নেজামে ইসলাম পার্টির নির্বাহী সভাপতি এ কে এম আশরাফুল হক প্রমুখ।

Comments

The Daily Star  | English

An economic corridor that quietly fuels growth

At the turn of the millennium, travelling by road between Sylhet and Dhaka felt akin to a trek across rugged terrain. One would have to awkwardly traverse bumps along narrow and winding paths for upwards of 10 hours to make the trip either way.

12h ago