সরকারের কর্তৃত্ববাদী ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের মাত্রা আরো বাড়বে: বামজোট

বামজোট

ভোটাধিকার-গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও জনজীবনের সংকট দূর করতে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের সংগ্রাম অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট।

বৃহস্পতিবার জোটের সভায় বলা হয়, বিরোধী সব রাজনৈতিক দল ও অধিকাংশ জনগণের মতামতকে উপেক্ষা করে সরকার একতরফা প্রহসনের নির্বাচন করে বছরের শুরুতেই যে ন্যাক্কারজনক অধ্যায় শুরু করল, তা দেশের গণতন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ওপর চরম আঘাত হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। 
এই অবস্থা বহাল থাকলে সরকারের কর্তৃত্ববাদী ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের মাত্রা আরও বাড়বে বলে মনে করে বামজোট। 

তারা বলছে, রাজনীতিতে দুর্বৃত্তায়িত ধারা, মূল্যবৃদ্ধির সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য, দুর্নীতি, লুটপাট ও অর্থপাচার বাড়বে, যা দেশের সাধারণ মানুষের জীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলবে। একইসঙ্গে জনসমর্থনহীন সরকারের কারণে বিদেশি সাম্রাজ্যবাদী-আধিপত্যবাদী শক্তি নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় নানা পদক্ষেপ নিতে সক্রিয় হবে।

'দেশের অধিকাংশ মানুষ বর্জন করেছে' উল্লেখ করে সভায় বলা হয়, এ নির্বাচন সম্পর্কে সরকার ও নির্বাচন কমিশন দিয়ে যে তথ্য উপস্থাপন করেছে, তার বিপরীতে হেরে যাওয়া নৌকা, স্বতন্ত্র এবং জাতীয় পার্টি, ১৪ দল ও সরকার সমর্থিত পার্টিসহ অন্যান্য দলের প্রার্থীদের দেওয়া যেসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে তা শুধু নির্বাচনী প্রহসন নয়, এতে পুরো নির্বাচন ব্যবস্থার সংকট উন্মোচিত হয়েছে। 

এ অবস্থায় এই 'আমি-ডামি' নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠনের কোনো নৈতিক অধিকার কারও নেই বলে সভায় উল্লেখ করা হয়।

বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি সিপিবির কার্যালয়ে বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জোটের সমন্বয়ক কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ।

সভায় বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মো. শাহ আলম, সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের আব্দুস সাত্তার, বাসদ মার্কসবাদীর কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, সমাজতান্ত্রিক পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা রুবেল শিকদার, সিপিবির সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, বাসদের সহ-সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির শহিদুল ইসলাম সবুজ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সভায় নিত্যপণ্যের লাগাতার মূল্যবৃদ্ধি, নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় উদ্বেগ প্রকাশ করে চলমান রাজনৈতিক সংকট দূর করা ও অনিবার্য অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা করতে অবিলম্বে ভুয়া ভোটে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের নিয়ে সরকার গঠন না করে পদত্যাগ করে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি পুনর্ব্যক্ত করা হয়। 

এসব দাবিতে সব বাম প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল ও শ্রেণী-পেশার গণসংগঠনের ঐক্যবদ্ধ গণআন্দোলন গড়ে তোলার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

আগামী ১৭ জানুয়ারি ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে চলমান পরিস্থিতি সম্পর্কে বিস্তারিত বক্তব্য ও করণীয় তুলে ধরবে বাম গণতান্ত্রিক জোট। 

ওই সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচিও ঘোষণা করা হবে।

এছাড়া, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স আগামী তিন মাসের জন্য বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করবেন বলে সভায় সিদ্ধান্ত হয়।

Comments

The Daily Star  | English

Power, Energy Sector: Arrears, subsidies weighing down govt

The interim government is struggling to pay the power bill arrears that were caused largely by “unfair” contracts signed between the previous administration and power producers, and rising international fuel prices.

6h ago