উত্তর গাজায় হামাসের সামরিক অবকাঠামো ধ্বংসের দাবি

ইসরায়েলি হামলার পর উত্তর গাজার দৃশ্য। ছবি: রয়টার্স (২ জানুয়ারি)
ইসরায়েলি হামলার পর উত্তর গাজার দৃশ্য। ছবি: রয়টার্স (২ জানুয়ারি)

ইসরায়েল দাবি করেছে, তারা গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলে হামাসের নিয়ন্ত্রণ অবকাঠামো ধ্বংস করেছে এবং সশস্ত্র সংগঠনের যোদ্ধারা এখন নেতৃত্বহীন অবস্থায় আছে। 

আজ রোববার এ বিষয়টি জানিয়েছে আল জাজিরা।

ইসরায়েলের পরবর্তী পরিকল্পনা

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি। ছবি: এএফপি
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি। ছবি: এএফপি

গতকাল শনিবার ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি সাংবাদিকদের বলেন, 'আমরা উত্তর গাজায় হামাসের সামরিক অবকাঠামো ধ্বংসের কাজটি শেষ করেছি।'

তিনি আরও জানান, ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাসের যোদ্ধারা এখন বিচ্ছিন্নভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করছেন এবং 'তাদের কোনো কমান্ডার নেই'।

'এখন আমরা গাজার কেন্দ্র ও দক্ষিণ অঞ্চল থেকে হামাসকে নির্মূল করার দিকে নজর দিচ্ছি', যোগ করেন তিনি।

হাগারি জানান, গাজার কেন্দ্রে ও দক্ষিণে ভিন্ন কৌশলে আগাবে সেনাবাহিনী। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাননি তিনি।

'গাজার কেন্দ্রের রিফিউজি ক্যাম্পগুলোতে অনেক জঙ্গি সদস্য লুকিয়ে আছেন', যোগ করেন তিনি।

দক্ষিনে খান ইউনিসে মাটির নিচে বিশাল আকৃতির সুড়ঙ্গ নেটওয়ার্ক আছে বলেও দাবি করেন তিনি।

গাজাবাসীর উদাসীনতা

গাজায় অভিযান পরিচালনা করছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। ছবি: রয়টার্স
গাজায় অভিযান পরিচালনা করছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। ছবি: রয়টার্স

তবে ইসরায়েলের এসব দাবির বিষয়ে গাজাবাসীরা উদাসীনতা প্রকাশ করেছে। এর আগেও ইসরায়েলি বাহিনী বেশ কয়েকবার এ ধরনের বক্তব্য রেখেছে।

আল শিফা হাসপাতালে অভিযান চালানোর আগে ইসরায়েল দাবি করেছিল, সেখানে সামরিক অভিযান চলছে। কিন্তু তার স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ দেয়নি দেশটি।

একই ভাবে, উত্তর গাজায় শিশুদের পরিধানযোগ্য আত্মঘাতী বেল্ট পাওয়ার দাবি করলেও কোনো প্রমাণ দেয়নি ইসরায়েল।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সর্বশেষ এই বিবৃতিতে আট হাজারেরও বেশি হামাস 'সহযোগী' নিহত হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে, কিন্তু এই দাবির পক্ষেও নেই কোনো প্রমাণ।

গাজার বাসিন্দারা ইসরায়েলের দাবি নিয়ে পুরোপুরি উদাসীন। তারা চলমান ধ্বংসযজ্ঞের মাঝে নিজেদের প্রাণ বাঁচানো নিয়ে চিন্তিত ও ব্যস্ত আছেন। আল জাজিরার সাংবাদিকরা গাজাবাসীদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি জানতে পেরেছেন।

বিশ্লেষকদের ভাবনা

ইসরায়েলের দাবির বিষয়ে বিশ্লেষক আদেল আবদেল গাফার জানান, এই তিন মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের বাস্তবসম্মত ফল আনার চাপে আছে ইসরায়েল। যার ফলে তারা এ ধরনের দাবি করে থাকতে পারে।

মিডল ইস্ট কাউন্সিল অন গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্সের বৈদেশিক নীতিমালা ও নিরাপত্তা প্রকল্পের পরিচালক আদেল বলেন, 'ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ নীতিনির্ধারকদের কাছে সেনাবাহিনীকে প্রমাণ করতে হবে যে তারা যুদ্ধক্ষেত্রে কিছু অর্জন করছে'।

তিনি আল জাজিরাকে জানান, ইসরায়েলি মন্ত্রিসভার বক্তব্যের সঙ্গে সেনাবাহিনী স্থল হামলা সংক্রান্ত দাবির কোনো মিল নেই।

'ইসরায়েলি মন্ত্রিসভার কিছু কট্টর ডানপন্থী নেতার বক্তব্য বেশ লক্ষণীয়। তারা চায় না ফিলিস্তিনিদের কাছে ত্রাণ আসুক। বা বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা উত্তর গাজায় ফিরে যাক। তারা চায় ফিলিস্তিনিদের তাদের ভূখণ্ড থেকে বহিষ্কার করা হোক', যোগ করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, 'এখন দেখার বিষয় হল ইসরায়েলি মন্ত্রিসভা ফিলিস্তিনিদের কাছে আরও ত্রাণ পৌঁছাতে দেবে কি না, বা তাদেরকে উত্তর গাজায় ফিরে যাওয়ার অনুমতি দেবে কি না।

নেতানিয়াহুর বক্তব্য

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ছবি: রায়টার্স

শনিবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানান, তার সরকার সেনাহাবিনীকে নির্দেশ দিয়েছে 'হামাসকে নির্মূল' করতে, সব জিম্মিদের ফিরিয়ে আনতে এবং গাজা 'যাতে আর কখনোই ইসরায়েলের প্রতি হুমকি হয়ে দাঁড়াতে না পারে', সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে।

এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, 'যতক্ষণ পর্যন্ত না আমরা সব লক্ষ্য অর্জন করছি, ততক্ষণ যুদ্ধ থামা চলবে না।'

 

Comments

The Daily Star  | English

Torch procession at DU demanding justice for JCD leader Shammo

The procession, under the banner of "Students Against Terrorism", began around 8:20pm

1h ago