পশ্চিম তীরের জেনিনে নজিরবিহীন ইসরায়েলি ড্রোন হামলা, নিহত ৬
![জেনিনে ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় ৬ জন নিহতের পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করছেন ফিলিস্তিনিরা। ছবি: রয়টার্স জেনিনে ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় ৬ জন নিহতের পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করছেন ফিলিস্তিনিরা। ছবি: রয়টার্স](https://tds-images-bn.thedailystar.net/sites/default/files/styles/big_202/public/images/2024/01/07/jenin_2.jpg?itok=NqZZiPBK×tamp=1704603906)
অধিকৃত পশ্চিম তীরের জেনিন শহরে ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় ছয় ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এই হামলার বিষয়টিকে নজিরবিহীন বলে অভিহিত করেছেন বিশ্লেষকরা।
আজ রোববার ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে এএফপি। আজ সকালে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে।
পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের আওতাধীন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, 'জেনিনে ফিলিস্তিনি নাগরিকদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনী হামলা চালালে ছয় জন নিহত হন।'
এর আগে ফিলিস্তিনি সংবাদমাধ্যম ওয়াফা রোববার ভোরে জানায়, জেনিনে বড় আকারে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েল।
আল জাজিরার সাংবাদিকরা স্থানীয় গণমাধ্যম ও প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে জানতে পেরেছেন, জেনিন শহরের দক্ষিণে একটি ব্যস্ত সড়কের মোড়ে বসে থাকা কিছু মানুষের ওপর এই ড্রোন হামলা চালানো হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, আক্রান্ত ব্যক্তিদের সবাই বেসামরিক ব্যক্তি ছিলেন।
আল জাজিরার সাংবাদিকরা মাটিতে ছিন্নবিচ্ছিন্ন মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেছেন।
সরকারী হাসপাতাল ছয় জন নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
স্থানীয় সময় রাত একটায় ইসরায়েলি বাহিনী জেনিন শহরে ঢুকে পড়ে। অভিযান শেষে তারা ভোর পাঁচটার দিকে জেনিন ছেড়ে চলে যায়।
জেনিন ক্যাম্পে অবস্থানরত সশস্ত্র যোদ্ধারা ইসরায়েলি হামলার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
এ সময় অন্তত একটি হাতে বানানো বিস্ফোরক বিস্ফোরিত হয়। যার ফলে একটি ইসরায়েলি সামরিক পরিবহণ ধ্বংস হয়।
![জেনিনে ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় ৬ জন নিহতের পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করছেন ফিলিস্তিনিরা। ছবি: রয়টার্স জেনিনে ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় ৬ জন নিহতের পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করছেন ফিলিস্তিনিরা। ছবি: রয়টার্স](https://tds-images-bn.thedailystar.net/sites/default/files/styles/big_202/public/images/2024/01/07/jenin.jpg?itok=dRtJXBEP×tamp=1704603930)
সামরিক হেলিকপ্টারে করে এক আহত সেনাকে সরিয়ে নিয়েছে ইসরায়েল, এমন তথ্য জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্থানীয় গণমাধ্যম। তবে মোট কতজন সেনা আহত হয়েছেন, সে বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
বিশ্লেষকদের মতে, এটা কোনো বিশেষ অভিযান নয়। ৭ অক্টোবরের পর থেকেই অধিকৃত পশ্চিম তীরে নিয়মিত রাত্রিকালীন অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েল।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে নজিরবিহীন ও অতর্কিত হামলা চালায় হামাস। এই হামলায় এক হাজার ১৪০ জন নিহত হন। হামাসের হাতে জিম্মি হন ২৫০ জন। ইসরায়েলের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, হামাসের হাতে এখনো ১৩২ জন আটক আছেন। জিম্মি অবস্থায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৪ জন। বাকিরা এক সপ্তাহব্যাপী যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তির আওতায় মুক্তি পান।
হামাসের হামলার জবাবে ইসরায়েল টানা তিন মাস ধরে গাজায় নিরবচ্ছিন্নভাবে স্থল ও বিমানহামলা চালিয়ে যাচ্ছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এই হামলায় এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ২২ হাজার ৭২২ ফিলিস্তিনি। তাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
এই সংঘাত শুরুর পর অধিকৃত পশ্চিম তীরেও ছড়িয়ে পড়েছে সহিংসতা। ৭ অক্টোবরের পর সেখানে প্রাণ হারিয়েছেন ৩২৭ ফিলিস্তিনি। আল জাজিরা জানিয়েছে, এই সময়ের মাঝে পশ্চিম তীরে গ্রেপ্তার হয়েছেন অন্তত ৫ হাজার ৬০০ ও আহত হয়েছেন তিন হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি।
![৭ অক্টোবরের পর নিয়মিত আগ্রাসনের শিকার হয়েছেন পশ্চিম তীরের অধিবাসীরা। ফাইল ছবি: রয়টার্স ৭ অক্টোবরের পর নিয়মিত আগ্রাসনের শিকার হয়েছেন পশ্চিম তীরের অধিবাসীরা। ফাইল ছবি: রয়টার্স](https://tds-images-bn.thedailystar.net/sites/default/files/styles/big_202/public/images/2024/01/07/2023-12-14t094332z_1467093167_rc2xw4a2elhw_rtrmadp_3_israel-palestinians-jenin-raid.jpg?itok=RhEuHHQp×tamp=1704604287)
জেনিন শহর ও সেখানে অবস্থিত রিফিউজি ক্যাম্পে অসংখ্যবার হামলা ও অভিযান চালিয়েছে ইসরায়েল।
১৯৬৭ সালের ছয় দিনব্যাপী যুদ্ধের পর পশ্চিম তীর অধিগ্রহণ করে ইসরায়েল।
Comments