নাটোর

মামলা রেকর্ড না করায় ওসিকে সতর্ক করলেন আদালত

ওসি মিজানুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

মামলা রেকর্ড না করায় সিংড়া থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে সতর্ক করেছেন আদালত।

নাটোরের সিংড়া আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু সাঈদ এ আদেশ দেন।

আজ বৃহস্পতিবার আদালতের আদেশের কপি হাতে পেয়েছেন সিংড়া থানার সাবেক ওসি মিজানুর রহমান। বর্তমানে তিনি নাটোর সদর থানার ওসি হিসেবে কর্মরত আছেন।

আদেশে আদালত বলেন, মামলাটি রেকর্ড না করে সিংড়া থানার ওসি মো. মিজানুর রহমান (বর্তমানে নাটোর থানার অফিসার ইনচার্জ) পিআরবি ২৪৪(ক) প্রবিধান লঙ্ঘন করেছেন, যা পুলিশ আইনের ২৯ ধারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ এবং একইসঙ্গে বিভাগীয় শাস্তিযোগ্য ঘটনা বলে আদালতের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে।

আদালত তার আদেশে উল্লেখ করেন, 'পিআরবি (পুলিশ রেগুলেশন অব বেঙ্গল) ১৯৪৩ এর ২৪৪(ক) প্রবিধানে বলা হয়েছে যে, পুলিশের নিকট পেশকৃত সকল আমলযোগ্য অভিযোগ প্রথম দৃষ্টিতে তাহা মিথ্যা বা সত্য, গুরুতর বা সাধারণ তাহা দন্ডবিধির অধীনে শাস্তিযোগ্য বা অন্য কোন বিশেষ আইনে শাস্তিযোগ্য যাহাই হোক না কেন তাহার এফআইআর গ্রহণ করতে হইবে।'

সিংড়া আমলি আদালতের বেঞ্চ সহকারী রাজু আহমেদ বলেন, 'সিংড়া উপজেলার বলিয়াবাড়ি এলাকার বাসিন্দা জুবায়ের আলম জীবু জমিজমি নিয়ে বিরোধের জেরে মারামারিতে আহত হন গত নভেম্বরে। ঘটনার পরে জীবু সিংড়া থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা গ্রহণ না করে তাকে বারবার ফিরিয়ে দেয়। পরে সিংড়া আমলি আদালতে মামলা করেন তিনি।'

আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সিংড়া থানার তৎকালীন ওসি মিজানুর রহমানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন।

কারণ দর্শানোর লিখিত জবাবে মো. মিজানুর রহমান উল্লেখ করেন, মামলার ফরিয়াদি কোনো লিখিত এজাহার না দেওয়ায় বা ভুক্তভোগীকে তার সামনে উপস্থাপন না করায় এ বিষয়ে বিধিগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেননি তিনি। বিষয়টি তার অনিচ্ছাকৃত ত্রুটি হওয়ায় ক্ষমা প্রার্থনা করেন। তলবমাত্র তিনি আদালতে ধার্য্যকৃত তারিখে হাজির হয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে প্রস্তুত আছেন।

মামলার নথি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এজাহারকারী ৪-৫ দিন থানায় যাওয়া স্বত্বেও সিংড়া থানার ওসি মামলাটি রেকর্ড করেননি।

মিজানুর রহমান তার লিখিত জবাবে দুটি বিষয় বলেছেন। একটি হচ্ছে, ভুক্তভোগীকে তার কাছে উপস্থাপন না করায় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেননি এবং অপরটি হচ্ছে তিনি নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করতে প্রস্তুত।

তার জবাব আদালতের কাছে পরস্পর বিরোধী এবং সন্দেহযুক্ত বলে প্রতীয়মান হয়েছে।

কিন্তু তিনি নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করায় তাকে আদালত ক্ষমা প্রদর্শন করেন এবং ভবিষ্যতের জন্য সতর্ক করেন।

এই বিষয়ে মিজানুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আদালত কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছিলেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে লিখিতভাবে আমি জবাব দিয়েছি এবং আদালতের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছি। আদালতের রায়ের কপি হাতে পেলে সেখানে উল্লেখ করা আদেশ-নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করব।'

Comments

The Daily Star  | English

Election in first half of April 2026

In his address to the nation, CA says EC will later provide detailed roadmap

6h ago