‘বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি কমলেও দেশের জনগণের সঙ্গে তো কমেনি’

রুহুল কবির রিজভী বলেন, সরকার দেশটাকে জর্জ অরওয়েলের অ্যানিমেল ফার্মে পরিণত করেছে।
রুহুল কবির রিজভী। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় লক্ষ্য করছে এই সরকারের বৈশিষ্ট্য। একজনের ক্ষমতা ধরে রাখতে এই সরকার দেশকে নরকে পরিণত করেছে। 

আজ মঙ্গলবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, 'একজন মন্ত্রী বলেছেন যে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আমাদের যে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে সেগুলো কমে আসছে। কিন্তু জনগণের সঙ্গে যে ভুল বোঝাবুঝি, সেটা তো কমেনি।'

সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, 'জনগণ তো আপনাদের বিশ্বাস করে না, জনগণ যে আপনাদের অত্যাচারী সরকার হিসেবে গণ্য করে, এই জনগণের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি কমানোর কোনো উদ্যোগ তো আপনারা নেননি।'

'চেষ্টা করছেন যে, অমুক দেশ যদি আমাদের সঙ্গে না আসে, তাহলে তার পাল্টা কে আছে। সেই দেশের সঙ্গে সখ্যতা বজায় রাখার চেষ্টা করছেন। যখন দেখছেন পারছেন না, তখন তাদের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করছেন,' যোগ করেন তিনি।

বিএনপি নেতা রিজভী বলেন, 'দুয়েকদিন আগে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে দেখলাম বলছেন দূরত্ব অনেক কমে আসছে। কয়েকদিন আগেই না আপনারা বললেন যে বিদেশিরা অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছে, জাতিসংঘে চিঠি দিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। আবার দূরত্ব কমানোর কথা বলছেন। একটা ডাবল স্ট্যান্ডার্ড সরকার বাংলাদেশে আসন গেঁড়ে বসে আছে।'

তিনি বলেন, 'সরকারের পতন না হলে অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে আমরা সবাই বন্দীই থেকে যাব। যারা তাদের খবরদারির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করবেন তারা নিরুদ্দেশ হয়ে যাবেন, তাদের অদৃশ্য করে ফেলা হবে।'

'সরকার দেশকে নরকে পরিণত করেছে' উল্লেখ করে রিজভী বলেন, 'কিছুদিন আগে এক বিচারপতিও একই কথা বলেছেন। গত দেড় দশক ধরে তা সুস্পষ্ট। কারও কোনো নিরাপত্তা নেই। সবাই ভয়-আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। এদের অধীনে কোনোভাবেই অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হতে পারে না।'

'আমরা একটা ঔপনিবেশিক শাসনে আছি' উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের সরকার কিছু দেশের স্বার্থ রক্ষা করছে। দুয়েকটি দেশ আছে যারা বাংলাদেশের কৃষ্টি-কালচারের ধার ধারে না। অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করছে। বাংলাদেশে গণতন্ত্র থাকল, কী থাকল না, সেটাকে তারা তোয়াক্কা করে না।' 

'এখনো গ্রেপ্তার অভিযান চলছে, আমাদের নেতাকর্মীদের বিনিদ্র রজনী কাটাতে হচ্ছে। খেতে-খামারে, নদীর মধ্যে নেতাকর্মীরা রাত কাটাচ্ছেন। আপনারা উন্নয়নের কথা বলেন। উন্নয়ন করেছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংখ্যা বাড়িয়েছেন বিরোধীদের দমন করার জন্য,' যোগ করেন তিনি।

রিজভী বলেন, 'কেউ কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচির কথা চিন্তা করলেই, থট পুলিশ চলে আসছে। এসে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। পরিস্থিতি এরকমই। শেখ হাসিনার রাজত্বের এসব ঘটনার কথা আগেই চিন্তা করে প্রতিভাবান লেখকরা এসব বিষয় নিয়ে উপন্যাস লিখেছেন। বাংলাদেশের পরিস্থিতি এখন জর্জ অরওয়েলের "নাইনটিন এইটি ফোর" উপন্যাসের অবস্থার মতো। আমরা এখন তার অ্যানিমেল ফার্মের মধ্যে বসবাস করছি। শেখ হাসিনা দেশের জনগণকে পশুর খোয়ারে আটকে রেখেছেন।' 

তিনি বলেন, 'চারিদিকে এখন শুধু নৈরাজ্য। সরকারের লুটপাটের কারণে বিদেশে আমাদের পণ্য রপ্তানি হচ্ছে না। পোশাক খাত এখন বড় ধরনের বিপর্যয়ের মধ্যে। এই অবস্থা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। গণতান্ত্রিক সংগ্রামকে আরও জরদার করতে হবে। আমাদের গণতন্ত্রকামী নেতাকর্মীরা শত বাধার মধ্যে রাজপথে নেমে আসছে।' 

বিএনপির ডাকা ৩৬ ঘণ্টার চলমান অবরোধ সফল করার জন্য রিজভী সবার প্রতি আহ্বান জানান।

Comments

The Daily Star  | English

Post-August 5 politics: BNP, Jamaat drifting apart

The taunts and barbs leave little room for doubt that the 33-year-old ties have soured. Since the fall of Sheikh Hasina’s government on August 5, BNP and Jamaat-e-Islami leaders have differed in private and in public on various issues, including reforms and election timeframe.

7h ago