আসন ছাড়ে শরিকদের ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত ঝুলিয়ে রাখল আ. লীগ

আ. লীগ

আসন্ন সংসদ নির্বাচনে আসন ছাড়ের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট। 

শরিকদের সঙ্গে গতকাল রাতে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হলেও, কোনো যথাযথ সিদ্ধান্তের কথা জানাতে পারেনি আওয়ামী লীগ।

সংসদ ভবনে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজমের কার্যালয়ে এ বৈঠক হয়। 

বৈঠকে 'আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র' প্রার্থীদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের বিষয়েও ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেননি অংশগ্রহণকারীরা।

সূত্র জানায়, শরিকদের ঝুলিয়ে রাখা এবং আওয়ামী লীগের বক্তব্যে হতাশ হয়ে ১৪ দলের কয়েকজন নেতা বলেছেন যে নির্বাচন নিয়ে তাদের সিদ্ধান্ত তারা নিজেরাই নেবেন।

এদিকে, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষদিন ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত শরিকদের অপেক্ষা করতে বলছে আওয়ামী লীগ। এরপর দলটি আসন ভাগাভাগির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে।

সূত্র আরও জানায়, আওয়ামী লীগ শরিকদের জন্য কয়টি আসন ছাড়তে পারবে, গতকালের বৈঠকে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এবং জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু তা স্পষ্ট করতে বলেন। শরিকদের ঝুলিয়ে রাখতে না করেন এই দুই নেতা। 

বৈঠকে ইনু বলেন, আওয়ামী লীগ যদি আসন না ছাড়তে চায়, তাহলে জাসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ দেখাতে শুধু একজন প্রার্থী দেবে এবং বাকিরা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করবেন। 

মেনন বলেন, নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে তার দলের নেতারাই সিদ্ধান্ত নেবেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের তাদের আশ্বস্ত করে বলেছেন, আওয়ামী লীগ ১৪ দলের ব্যানারে নির্বাচনে থাকবে এবং তাদের অন্য কোনো জোট নেই।

তিনি জানান, প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি তাদের নির্বাচনী প্রতীক 'লাঙ্গল' নিয়েই আলাদাভাবে নির্বাচন করবে।

১৪ দলের শরিকদের সঙ্গে আসন ভাগাভাগির বিষয়ে আওয়ামী লীগের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করার আহ্বান জানান তিনি।

বৈঠকে কাদের বলেন, নির্বাচনকে আরও বেশি অংশগ্রহণমূলক করতে এবং বেশি ভোটার উপস্থিতির জন্য আওয়ামী লীগ নেতাদের 'স্বতন্ত্র' প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিতে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বৈঠকে তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বাশার মাইজভাণ্ডারী যত দ্রুত সম্ভব আসন ভাগাভাগির সমাধান করতে বলেন। বাকি আসনের বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে বলে জানান তিনি।

বৈঠকে ইনু বলেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা ইতোমধ্যে প্রচারণা শুরু করে দিয়েছেন, কিন্তু জোটের নেতারা এখনো অপ্রস্তুত এবং তারা জানেন না তাদের ভাগ্যে কী আছে।

মেনন বলেন, তিনি বরিশালের দুটি আসনে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। কিন্তু, এখনো জানেন না কোন আসনে নির্বাচন করবেন।

ইনু 'আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র' প্রার্থীদের প্রসঙ্গ উত্থাপন করে বৈঠকে বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকলে জোটের প্রার্থীদের জয়ী হওয়া কঠিন হবে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাদের অবশ্য বলেছেন যে, ১৪ দলের প্রার্থীরা যেহেতু 'নৌকা' প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবেন, আওয়ামী লীগই তাদের বিজয় নিশ্চিত করবে।

ইনু বলেন, 'স্বতন্ত্র' প্রার্থীরা শুধু তাদের জন্য নয়, আওয়ামী লীগের অনেক প্রার্থীদের জন্যও সমস্যা হয়ে দেখা দেবে।

সূত্র জানায়, শরিকদের আসন ছাড়ের দাবি নিয়ে বৈঠকের শুরুতেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন ওবায়দুল কাদের।

জোটের নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, তারা ৩০টি আসন দাবি করছেন, কিন্তু বিভিন্ন জরিপে দেখা গেছে যে শরিক দলের নেতারা তেমন কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতাই করতে পারেন না।

জাতীয় পার্টির (জাপা-মঞ্জু) আনোয়ার হোসেন মঞ্জু তখন এসব জরিপের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বলে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে।

বৈঠকে সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া নিজের জন্য একটি আসন দাবি করেন। তখন ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু সাম্যবাদী দলের জনপ্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

বাসদের আহ্বায়ক রেজাউর রশিদ খানও একটি আসন দাবি করেন। আওয়ামী লীগ নেতারা তাকে আগে তার জনপ্রিয়তা প্রমাণ করতে বলেন।

বৈঠক শেষে আমু শরিক দলের নেতাদের শেখ হাসিনার ওপর আস্থা রাখতে এবং আসন ভাগাভাগির বিষয়ে যৌক্তিক সিদ্ধান্ত নিতে বলেন।
 

Comments

The Daily Star  | English

Nowfel gained from illegal tobacco trade

Former education minister Mohibul Hassan Chowdhoury Nowfel received at least Tk 3 crore from a tobacco company, known for years for illegal cigarette production and marketing including some counterfeit foreign brands.

8h ago