১৫ বছরে মুরাদ জংয়ের বার্ষিক আয় বেড়েছে ৪৬ গুণ
গত ১৫ বছরে ঢাকা-১৯ (সাভার-আশুলিয়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য তালুকদার মো. তৌহিদ জং মুরাদের বার্ষিক আয় বেড়েছে প্রায় ৪৬ গুণ এবং উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে তার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে ঢাকা-১৯ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন মুরাদ। নির্বাচন কমিশনে দাখিলকৃত তার হলফনামা ও নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় দাখিলকৃত হলফনামা পর্যালোচনা করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৯ আসন থেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হয়ে দেশের সর্বোচ্চ ভোটে নির্বাচিত হন মুরাদ। এরপর সাভারের রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় রাজনীতি থেকে ছিটকে পরে দীর্ঘ ১০ বছর ক্ষমতার বাহিরে তিনি।
দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেননি মুরাদ।
সম্প্রতি দাখিলকৃত হলফনাফায় তিনি উল্লেখ করেছেন, বর্তমানে তার বার্ষিক আয় ১ কোটি ৪৭ লাখ ১৯ হাজার ২৪৬ টাকা। যার মধ্যে কৃষিখাতে আয় ৭ হাজার টাকা; বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট ও দোকান ভাড়া থেকে আয় ১ কোটি ২৯ লাখ ৬৫ হাজার ৩৮৪ টাকা; ব্যবসা থেকে আয় ২ লাখ ৬৪ হাজার টাকা; এফডিআর থেকে আয় ৯ লাখ ৩৩ হাজার ৮৬২ টাকা এবং অন্যান্য খাত থেকে আয় ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দাখিল করা হলফনামা অনুযায়ী মুরাদের মোট বার্ষিক আয় ছিল ৩ লাখ ১৮ হাজার ৫৬৯ টাকা। যার মধ্যে ২ লাখ ২০ হাজার টাকা আসতো ব্যবসা থেকে এবং বাকিটা সঞ্চয়পত্র ও এফডিআর থেকে।
এই দুই হলফনামা বিশ্লেষণে দেখা যায়, ১৫ বছরের ব্যবধানে তার আয় বেড়েছে প্রায় ৪৬ গুণ।
তার অস্থাবর সম্পদও বেড়েছে ৬ গুণের বেশি। ২০০৮ সালের তার হলফনামায় টাকার অংকে তার মোট অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ছিল ১ কোটি ১৫ লাখ ৯ হাজার ৬৬১ টাকার। যা বর্তমানে দেখিয়েছেন ৭ কোটি ৩১ লাখ ৯৩ হাজার ৬৯১ টাকার।
নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় অনুযায়ী মুরাদের স্থাবর সম্পদ বলতে ছিল শুধুমাত্র ৮৬ হাজার টাকা মূল্যের ১.৭২ একর কৃষিজমি ও ৫ কোটি ৬১ লাখ টাকা মূল্যের ৫.৬১ একর অ-কৃষি জমি।
বর্তমান সময়ে তার স্থাবর সম্পদ বেড়ে কৃষিজমির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৩.২ একরে, যার মূল্য দেখানো হয়েছে ৪ কোটি ৬৪ লাখ ২৪ হাজার ৩৮৬ টাকা এবং অকৃষি জমি রয়েছে ১৫ কাঠা, যার মূল্য ৪৪ লাখ ৭৬ হাজার ২৫০ টাকা। তার একটি মার্কেট রয়েছে, যার মূল্য ৯৪ লাখ ৭ হাজার ৯২৬ টাকা; দুটি ফ্যাক্টরি শেড রয়েছে, যার মূল্য ৩৭ লাখ ৯১ হাজার ৬৬৭ টাকা; ৭টি ফ্ল্যাট রয়েছে, যার মূল্য উল্লেখ করা হয়েছে ১ কোটি ১৭ লাখ ৩৮ হাজার ৫০০ টাকা।
শুধু মুরাদের নয়, বেড়েছে তার স্ত্রীর স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের পরিমাণও। ১৫ বছর আগে তার স্ত্রীর অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ছিল ৭ লাখ টাকা মূল্যের ১০০ ভরি স্বর্ণালংকার ও ২ লাখ টাকার আসবাবপত্র ও ইলেকট্রনিক সামগ্রী। বর্তমানে তার স্ত্রীর নামে অস্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে সাড়ে ৭ লাখ টাকা মূল্যের ১০০ ভরি স্বর্ণালংকার ও ২ লাখ ৭০ হাজার টাকার আসবাবপত্র ও ইলেকট্রনিক সামগ্রী।
নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনী হলফনামায় স্ত্রীর স্থাবর সম্পদ না দেখালেও বর্তমানে তার স্ত্রীর ৫৯ লাখ ৪০ হাজার ৯০০ টাকার ৪টি ফ্ল্যাট রয়েছে।
তবে ২০০৮ সালে দাখিলকৃত হলফনামায় কোনো ঋণের কথা উল্লেখ না থাকলেও, সম্প্রতি দাখিলকৃত হলফনামায় মুরাদ ঋণ দেখিয়েছেন ৫০ লাখ ৩৫ হাজার ৭৬৩ টাকার।
Comments