বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টির ষড়যন্ত্রের অংশীদার বিএনপি: কাদের

বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টির ষড়যন্ত্রের অংশীদার বিএনপি: কাদের
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের | ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

বিএনপি বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টির ষড়যন্ত্রের অংশীদার বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

কাদের বলেন, 'বাংলাদেশের নির্বাচনী ব্যবস্থা, গণতন্ত্রকে সুদৃঢ় ভিত্তির ওপর দাঁড় করানো এবং এ পথকে মসৃণ করার লক্ষ্যে আমরা বিরামহীন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বারবার এ প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন—আমাদের নির্বাচন হবে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ। সুতরাং নিষেধাজ্ঞা আরোপের কোনো যৌক্তিক কারণ আমরা দেখছি না।

'বরং নির্বাচনকে যারা বাধাগ্রস্ত করার জন্য সন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছে, গুপ্ত হত্যা, জ্বালাও-পোড়াও, গুপ্ত হামলা; এদের ওপরই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা উচিত,' বলেন তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, 'বিএনপি নির্বাচনে আসেনি, অংশ নেয়নি। নির্বাচনের বিরুদ্ধে তাদের আন্দোলন এ যাবত ব্যর্থ হয়েছে। ব্যর্থ আন্দোলন করে তারা ক্ষান্ত হয়নি, তারা এখন নাশকতার পরিকল্পনা করছে, বাস পোড়াচ্ছে, গুপ্ত হামলা চালাচ্ছে, গুপ্ত হত্যা করছে, ট্রেনে আগুন দিচ্ছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৩০০টি পরিবহনে তারা আগুন দিয়েছে। লাইনের ওপর দাঁড়ানো ট্রেনে পর্যন্ত তারা আগুন দিয়েছে।'

মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে বিএনপি সারা দেশে কর্মসূচির নামে নাশকতা করার পরিকল্পনা নিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আমরা এ ব্যাপারে; যারা নির্বাচনের পক্ষের শক্তি, তাদের অনুরোধ করছি, আপনারা ঐক্যবদ্ধভাবে এবং জনগণের মধ্যে যারা আজ নির্বাচনের পক্ষের শক্তি, তারা ঐক্যবদ্ধভাবে এদের এই নাশকতা, গুপ্ত হত্যা, অগ্নি সন্ত্রাস প্রতিরোধ করতে সতর্ক-সজাগ থাকবেন।

'আমাদের দলের নেতাকর্মীদেরও সতর্ক অবস্থানে থাকতে হবে, যেন বিএনপি কর্মসূচির নামে কোথাও কোনো নাশকতা করতে না পারে,' নির্দেশ দেন তিনি।

নির্বাচনকে ঘিরে দেশে-বিদেশে ষড়যন্ত্র চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, 'এসব নিয়ে আমরা বিচলিত নই। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, নির্বাচনের পরেও বিভিন্ন রকমের চাপ আসতে পারে। বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টির অশুভ পরিকল্পনাও তাদের রয়েছে।

'এসব মোকাবিলা করার মতো মানসিক শক্তি, রাজনৈতিক শক্তি, দৃঢ়তা আমাদের আছে। আওয়ামী লীগ বারে বারে ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করেই আজকের আওয়ামী লীগ। এই আওয়ামী লীগের পথ-পরিক্রমা ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করেই বারে বারে আমরা গণতন্ত্রের সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়েছি। এখনো গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার যে লড়াই, সেই লড়াইয়ে যত বাধাই আসুক, যত ষড়যন্ত্রই হোক, আমরা এই নির্বাচন অবশ্যই সফল করা এবং এই নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণভাবে শেষ করার যে লড়াই—এ লড়াইয়ে আমরা অবিচল। আমরা পাহাড়ের মতো অনড়,' যোগ করেন তিনি।

আওয়ামী লীগ সভাপতি পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছিলেন একটি ঘোষণাতে যে, এবার তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তাদের দমন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে; স্থানীয় সংসদ সদস্যরা...এক শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর সংক্রান্ত জটিলতা তৈরি করে (স্বতন্ত্র প্রার্থী) তাদের হেনস্থা করা হচ্ছে বলে একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করেছেন। এটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে কমিউনিটির কাছে যে দায়বদ্ধতা আওয়ামী লীগের, একে ক্ষতি করবে কি না জানতে চাইলে গণমাধ্যমকর্মীদের কাদের বলেন, 'এ ধরনের কোনো অভিযোগ আমাদের কাছে আসেনি। আমরা তো এই অফিসেই বসে থাকি সকাল থেকে রাত পর্যন্ত।'

তিনি আরও বলেন, 'নেত্রী যা বলেছেন, অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে আমরা সচেষ্ট।'

দুর্ভিক্ষ সৃষ্টির ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় কী পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে কাদের বলেন, 'প্রতি নিয়ত বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং এখানে যারা বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ, আমাদের অর্থ বিভাগ—নেত্রী প্রায় প্রতিদিনই এদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করছেন। ভবিষ্যতে সংকট যাতে না হয়, সংকট এড়ানো যায়, সে ব্যাপারে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যায়; এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত সক্রিয় এবং সচেষ্ট।'

বিএনপি নিজেরাই অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে, তারা কীভাবে দুর্ভিক্ষ আনবে—গণমাধ্যমকর্মীদের এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'তারা ষড়যন্ত্রের অংশীদার। এই ষড়যন্ত্রে অনেকেই আছে। দেশে আছে, বিদেশেও আছে। গণআন্দোলন করতে বিপুল জনগোষ্ঠী লাগে কিন্তু ষড়যন্ত্র করতে, গুপ্ত হত্যা করতে, নাশকতা করতে বেশি লোক লাগে না। আর লোক না থাকলে রাস্তার টোকাই ভাড়া করে বাসে আগুন লাগায়।'

আপনারা বলছেন, বিচলিত নন, কোনো চাপ অনুভব করছেন না। একইসঙ্গে জাতিসংঘের কাছে চিঠি পাঠানোর বিষয় সম্পর্কে বলবেন—গণমাধ্যমকর্মীরা মত জানতে চাইলে কাদের বলেন, 'যেহেতু জাতিসংঘ থেকে কিছু কথা বলা হচ্ছে। জাতিসংঘ বিশ্বের সকল দেশের। আমরা জাতিসংঘের সদস্য। কাজে অভিযোগের বিষয়টা রাজনৈতিক ব্যাপার জাতিসংঘের কাছে যায়। কিছু কিছু চাপের ব্যাপার নিশ্চয়ই আছে। তা না হলে এত কিছু হলো কেন! বাংলাদেশে গত কয়েক মাস কত রকমের ঘটনা ঘটে গেল। এই নিষেধাজ্ঞা আসে, এই ভিসা নীতি আসে! এসব তো ছিল। সেখানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাতিসংঘকে জানিয়ে রাখলেন যে, আমরা ভালো নির্বাচন করছি। কোনো অসুবিধা নেই, অহেতুক যেন কেউ আমাদের চাপ না দেয়।'

Comments

The Daily Star  | English

US welcomes Bangladesh election plan

The US yesterday welcomed plans by Bangladesh's interim leader to hold elections next year or in early 2026

41m ago