পর্যাপ্ত যাত্রী নেই, ‘শেয়ারিং’ করে ছাড়ছে বাস

গাবতলী বাস টার্মিনাল। স্টার ফাইল ফটো

বিএনপির ডাকা নবম দফায় সারা দেশে টানা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ চলছে। হরতাল–অবরোধের শুরুর দিকের তুলনায় আজ দূরপাল্লার বাস চলাচল কিছুটা বেড়েছে।

আজ রোববার সকালে সরেজমিনে রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনালে ঘুরে দেখা যায়, হরতাল-অবরোধের শুরুর দিনগুলোর তুলনায় যাত্রীদের আনাগোনা বেড়েছে। সকাল থেকে কয়েকটি দূরপাল্লার বাসও ছেড়ে গেছে।

পর্যাপ্ত সংখ্যক যাত্রী না পাওয়ায় পরিবহনগুলো অন্যান্য পরিবহনের সঙ্গে যোগাযোগ করে যাত্রীদের একত্র করে বাস ছাড়ছে।

টার্মিনালের গেটে প্রায় ২৫-৩০ জন পরিবহন শ্রমিককে দেখতে পাওয়া যায়। যাত্রী আসলেই তারা যাত্রীদের নিয়ে তাদের গন্তব্য অনুযায়ী বাস কাউন্টারে নিয়ে যাচ্ছেন। বিনিময়ে পরিবহনগুলো তাদের কমিশন দিচ্ছেন।

কয়েকজন পরিবহন শ্রমিক দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, হরতাল-অবরোধের শুরুর দিকে একেবারেই যাত্রী হতো না। এখন কিছু যাত্রী আসছে। কিন্তু বাস ছাড়ার মতো পর্যাপ্ত না। স্বাভাবিক সময়ে প্রতি ঘণ্টা/আধা ঘণ্টায় বাস ছাড়া হয়। এখন অবরোধের মধ্যে সকাল, বিকালে ১টা ও রাতে ১টা বা ২টা করে ছাড়া হচ্ছে।

হানিফ এন্টারপ্রাইজের টিকেট মাস্টার বলেন, 'সকাল থেকে ৩টা বাস খুলনার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে। বরিশালের যাত্রী নেই তাই বাস ছাড়তে পারিনি।'

ডিডি পরিবহনের টিকেট মাস্টার আলমগীর হোসেন বলেন, 'সকাল থেকে এখন পর্যন্ত যাত্রী পাইনি। বিকেল ৩টায় মাগুরা-ঝিনাইদহ-দর্শনা একটা বাস ছাড়ার চেষ্টা করছি। ৪০ সিটের বাসে ৩০ জন যাত্রী হলে বাস ছাড়ব। না হলে যে কয়জন পাবো তাদেরকে অন্য বাসের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের যাত্রীসহ শেয়ারিং করে ছাড়ব।'

ঢাকা-গোপালগঞ্জ রুটে চলাচলকারী কমফোর্ট লাইনের টিকেট মাস্টার মো. সুমন বলেন, 'স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন ৮টা গাড়ি যায়। হরতাল-অবরোধে কোনোদিন ১টা যায়, কোনোদিন ২টা যায়। সকালে ৫ জন যাত্রী নিয়ে একটি বাস ছেড়েছি। রাস্তায় আরও ১০/১৫ পাওয়া গেছে। ৩০ জনের নিচে যাত্রী হলে লস। কিন্তু এখন মালিকের অর্ডার বাস ছাড়তে হবে।'

'বিকেল ৪টায় আরেকটা বাস ছাড়ার কথা। এখনো যাত্রী পাইনি। যাত্রী না হলে ছাড়ব না। রাত সাড়ে ৯টায় আরেকটা বাসের শিডিউল আছে। দেখি ওটা ছাড়া যায় কি না,' বলেন তিনি।

বাসের অপেক্ষায় টার্মিনালে রয়েছেন বেশ কয়েকজন যাত্রীও। গতকাল কুষ্টিয়া থেকে স্ত্রী ও ১০ বছরের কন্যা সন্তান নিয়ে ঢাকায় এসেছেন জানারুল ইসলাম। তিনি পেশায় একজন দিনমজুর। তিনি বলেন, 'মেয়ে অসুস্থ। তাই তাকে নিয়ে হাসপাতালে ডাক্তার দেখাতে এসেছি। রাতে হাসপাতালের বারান্দায় ছিলাম। সকালে ডাক্তার বললেন, হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হবে না, ওষুধ নিয়ে যেন বাড়ি চলে যাই। এখন বাসের জন্য অপেক্ষা করছি।'

আরেক যাত্রী আনোয়ার হোসেন বলেন, 'ঝিনাইদহ থেকে আমরা ২ জন ভারতীয় ভিসা কাজে এসেছি। ১২টার দিকে বাস ছাড়ার কথা। এখন প্রায় সাড়ে ১২টা বাজে। অপেক্ষা করছি।'

সরকার পতনের এক দফা দাবিতে সারা দেশে চলছে বিএনপি-জামায়াতসহ সমমনা দল ও জোটের টানা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ।

আজ রোববার ভোর ৬টা থেকে শুরু হওয়া নবম দফায় এই অবরোধ চলবে আগামী মঙ্গলবার ভোর ৬টা পর্যন্ত।

Comments

The Daily Star  | English
IPO drought in Bangladesh 2025

One lakh stock accounts closed amid IPO drought in FY25

The stock market has almost closed the books on the fiscal year (FY) 2024-25 without a single company getting listed through an initial public offering (IPO), a rare event not seen in decades.

12h ago