তিতুমীর কলেজ: সড়ক অবরোধে নাকাল অর্পিতাদের কী দোষ?
স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করাসহ সাত দফা দাবিতে সরকারি তিতুমীর কলেজের প্রধান ফটকের সামনে শিক্ষার্থীদের অবস্থান নেওয়ার কারণে আজ সকাল ১১টা থেকে কলেজের সামনের সড়কের দুই পাশে (আমতলী থেকে গুলশান ১ এবং গুলশান ১ থেকে আমতলী) যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
এর প্রভাবে কিছুক্ষণের মধ্যে আমতলীসহ আশপাশের সড়কগুলোতেও যানজট ছড়িয়ে পড়ে।
এতে ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়েন পথচলতি মানুষেরা।
এদিন দুপুর ১টার দিকে মহাখালীর জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল থেকে চোখের টিউমারের পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজ শেষে শিশু অর্পিতাকে নিয়ে ফিরছিলেন তার বাবা-মা।
পথে যানজটে ঘণ্টাখানেক বাসে আটকে থাকার পর বাস থেকে নেমে অর্পিতাকে কোলে নিয়ে আগারগাঁওয়ের বাসার উদ্দেশে হাঁটতে শুরু করেন তারা।
অর্পিতার বাবা অরজিৎ চন্দ্র বর্মণ জানান, 'অসুস্থ বাচ্চাটাকে নিয়ে এমন কষ্টের মধ্যে পড়ব বুঝিনি। নিজেরা না হয় কষ্ট সহ্য করলাম। বাচ্চার কষ্ট সহ্য করা যায় না।'
শফিউল আলম নামের আরেক ব্যক্তি একটা কাজে গুলশানে গিয়েছিলেন। মিরপুরের বাসায় ফেরার পথে যানজটে অর্পিতাদের মতোই অবস্থা হয় তার। ভাঙা একটি হাত নিয়ে আধঘণ্টার ওপর বাসের অপেক্ষায় থেকে হাঁটতে শুরু করেন তিনি।
শফিউল প্রশ্ন রাখেন, 'তাদের (শিক্ষার্থীদের) দাবি-দাওয়ার কারণে আমাদের মূল্য দিতে হবে কেন? এই যে অসুস্থ শরীর নিয়ে আমাকে হেঁটে যেতে হচ্ছে, হাজার হাজার মানুষ পথে আটকা পড়েছেন, তাদের দোষ কোথায়?
এদিন সোয়া ১২টার দিকে আমতলীর মুখে কথা হয় বিআরটিসির একটি বাসের চালকের সঙ্গে। তিনি জানালেন, যানজটে আটকে থাকতে থাকতে বাসের সব যাত্রী নেমে গেছেন। দূরের যাত্রীদের ভাড়া ফেরৎ দিতে হয়েছে।
এর আগে গতকাল বুধবার বিকাল ৫টার পর পাঁচ শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরসহ সাত দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেন।
তারও আগে গত সোমবার রাতে 'তিতুমীর ঐক্য'র পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাঠামো গঠনে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেওয়া হয়।
দাবি মানা না হলে বৃহস্পতিবার থেকে মহাখালীতে সড়ক ও রেলপথ অবরোধের ঘোষণাও দেওয়া হয় তখন। সেই সঙ্গে মঙ্গলবার থেকে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ করে 'শাটডাউন তিতুমীর' কর্মসূচি পালন করে আসছে কলেজের শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনকারীরা এর আগে ৭ জানুয়ারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির প্রধান ফটকে 'তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়' লেখা ব্যানার টানিয়ে দেন।
একই দাবিতে গত ১৮ নভেম্বর মহাখালীর আমতলী, কাঁচাবাজার ও রেলক্রসিংয়ে শত শত শিক্ষার্থী জড়ো হয়ে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন।
সেদিনও তীব্র ভোগান্তির মুখে পড়েন হাজারো মানুষ। মহাখালী ক্রসিংয়ে একটি চলন্ত ট্রেনের কয়েকটি বগি ভাঙচুরের ঘটনাতেও ব্যাপক সমালোচনা হয়।
Comments