ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে অন্তত ৫৭ সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মী নিহত: সিপিজে

১৯ নভেম্বর গাজার এক হাসপাতালে বোমা হামলায় নিহত ফিলিস্তিনি সাংবাদিক হাসুনা স্লিম ও সারি মানসৌরের লাশকে ঘিরে রেখেছেন শোকার্ত আত্মীয়-পরিজন। ছবি: রয়টার্স
১৯ নভেম্বর গাজার এক হাসপাতালে বোমা হামলায় নিহত ফিলিস্তিনি সাংবাদিক হাসুনা স্লিম ও সারি মানসৌরের লাশকে ঘিরে রেখেছেন শোকার্ত আত্মীয়-পরিজন। ছবি: রয়টার্স

সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় সোচ্চার বৈশ্বিক সংগঠন কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে) জানিয়েছে, গত ৭ অক্টোবর গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলা শুরুর পর থেকে মোট ৫৭ জন সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মী নিহত হয়েছেন।

আজ মঙ্গলবার কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা এই তথ্য জানিয়েছে।

নিহত সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মীদের সংখ্যাটি সোমবার প্রকাশ করা হয়। এর আগে, সংস্থাটি নিশ্চিত করে, গত সপ্তাহান্তে চার ফিলিস্তিনি সাংবাদিক নিহত হয়েছেন।

সিপিজে জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৫০ ফিলিস্তিনি, চার ইসরায়েলি ও তিন লেবানিজ নাগরিক আছেন। আরও ১৯ সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সিপিজে বেশ কয়েকটি অসমর্থিত প্রতিবেদনের সত্যতা যাচাই করছে, যেখানে আরও বেশ কয়েকজন সাংবাদিক নিহত, আটক, আহত বা হুমকির শিকার হওয়ার তথ্য রয়েছে।

সিপিজের মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা শাখার সমন্বয়কারী শেরিফ মানসৌর এক বিবৃতিতে বলেন, 'সিপিজে গুরুত্বসহকারে বলতে চায় যে সাংবাদিকরা বেসামরিক ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত। তারা সংকটের মুহুর্তগুলোতে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করছেন। যুদ্ধে জড়িত পক্ষদের তাদেরকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো উচিত নয় ।'

দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে প্রাণ হারান ফিলিস্তিনি সাংবাদিক মোহাম্মেদ আবু হাত্তাব। ছবি: রয়টার্স
দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে প্রাণ হারান ফিলিস্তিনি সাংবাদিক মোহাম্মেদ আবু হাত্তাব। ছবি: রয়টার্স

'যারা গাজায় আছেন, বিশেষত তাদেরকে বড় মূল্য চুকাতে হচ্ছে এবং আগামীতে তারা নজিরবিহীন কষ্ট ও ক্রমবর্ধমান হুমকির মধ্য দিয়ে যাবেন। অনেকেই সহকর্মী, পরিবারের সদস্য ও গণমাধ্যমের কাজ পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা হারিয়েছেন। অনেকেই নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন, কিন্তু তাদের জন্য নেই কোনো নিরাপত্তা কিংবা বের হয়ে আসার নিরাপদ পথ।'

কাতারের মধ্যস্থতায় ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে টানা পঞ্চম দিন ধরে চলছে বিরতি। প্রথম দফায় চার দিনের বিরতির পর দুই পক্ষ আরও দুই দিন যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়াতে সম্মত হয়।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হওয়ার ৪৮ দিন পর গত শুক্রবার কাতার ও মিশরের মধ্যস্থতায় উভয় পক্ষের মধ্যে ৪ দিনের যুদ্ধবিরতি শুরু হয়।

শুক্রবার থেকে এ ৪ দিনে হামাস ৫৮ জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে এবং ইসরায়েলের কারাগার থেকে ১১৭ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

৭ অক্টোবরের পর ইসরায়েল হামাসকে নির্মূল করার অঙ্গীকার নিয়ে টানা সাত সপ্তাহ ধরে গাজায় নিরবচ্ছিন্ন ও প্রতিশোধমূলক স্থল-বিমান হামলা চালাচ্ছে। এই হামলায় এখন পর্যন্ত ১৪ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, নিহতদের ৪০ শতাংশই শিশু।

 

Comments