শীতে বুটজুতা কেন চাই
শীতকালে একদিকে রিকশাওয়ালারা শীত নিবারণের জন্য গায়ে জড়ান কয়েক পরতের শাল, আর অন্যদিকে সারা বছর ওয়ারড্রবে ফেলে রাখা কোট আর লেদার জ্যাকেট ওঠে ফ্যাশনপ্রেমীদের গায়ে।
এর পাশাপাশি ঢাকার শীতের অন্যতম নেপথ্য নায়ক 'বুটজুতা'।
ঢাকার শীত হলিউড সিনেমার বরফশীতল তুষাররাজ্যের মতো না। এই শীতের আবহাওয়াকে আমি বলি 'ইন্ট্রোভার্টেড ঠাণ্ডা' বা অন্তর্মুখী স্বভাবের হালকা ঠাণ্ডা। খুবই হালকা শীত, তবে সে আছে। বিশ্বাস হচ্ছে না? পাশের বাড়ির রাকিবকে দেখবেন, ডিসেম্বরের শীতে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বারমুডার শর্টস পরে চা খেতে খেতে শীতে কাঁপবে।
আপনি কি বুটের দলে?
বুটের প্রসঙ্গে ঢাকার বাসিন্দারা কয়েক ভাগে বিভক্ত। এক দল আছেন, যারা সারা বছরই স্যান্ডেল পরে কাটিয়ে দেন। তাদের মতে, এমন শীতের জন্য বুটজুতা অতিরিক্ত হয়ে যায়। আর বাকিরা ঠিক আমার মতোই, বুটপ্রেমীদের দলে। বুটপ্রেমীদের স্লোগান হচ্ছে—বুট শুধুমাত্র ফ্যাশন নয়, নিজেকে তুলে ধরার মাধ্যম।
বুট পায়ে দিয়ে চলার সঙ্গে চাইলে বন-পাহাড়ের কাদা-গর্ত উপেক্ষা করে ভারী গাড়ি চালিয়ে চষে বেড়ানোর তুলনা করতে পারেন। ঢাকার রাস্তা চলাচলের জন্য খুব একটা যুৎসই না। তবে বুট পায়ে থাকলে রাস্তার কাদা, গর্ত, খানাখন্দ পাড়ি দেওয়া কোনো বিষয়ই না।
বুটজুতা যেন শীতকালের সত্যিকারের সুপারহিরো। এটি এক নিমিষেই যেকোনো লুকের জন্য তৈরি করে দেয়। শহরের ক্যাজুয়াল থেকে শুরু করে জঙ্গলের অ্যাডভেঞ্চার লুক—সবখানেই বুটজুতার ব্যবহার দেখা যায়।
ঢাকার এই কংক্রিটের জঙ্গলে বুটজুতা যেন সুইস আর্মি নাইফের মতো কাজ করে। এর রয়েছে বহুবিধ ব্যবহার। অফিসের পর ফ্যান্সি ডিনার, বৃষ্টির দিনে বন্ধুদের সঙ্গে কফি, এমনকি লম্বা উচ্চতার কারো পাশে পাল্লা দিতে চলতেও বুটের কোনো জুড়ি নেই।
ধরুন, আপনি একটি কাঠের বেঞ্চে বসে হিমালয়ের চূড়ার দিকে তাকিয়ে আছেন। কী মনে হয়, এই ট্রেকিংয়ে সবচেয়ে বিশ্বস্ত বন্ধু কে হবে? গায়ে গরম কাপড় আর পায়ে 'ট্রেকিং বুটস'ই হতে পারে সবচেয়ে ভালো বন্ধু।
যেকোনো শীতের পোশাকের সঙ্গেই বুট একটু বাড়তি স্টাইল যোগ করে পুরো লুককে বদলে দিতে পারে। ঠিক যেন শীতের সকালে মন ভালো করে দেওয়া এক কাপ দুর্দান্ত চা।
অনুবাদ: সৈয়দা সুবাহ আলম
Comments