মিরপুরে রাস্তা অবরোধ করে গার্মেন্টস শ্রমিকদের বিক্ষোভ

মিরপুরে গার্মেন্টস শ্রমিকদের বিক্ষোভে রাস্তায় সতর্ক অবস্থানে পুলিশ। শনিবার বিকেলে মিরপুর-১৩ এলাকা। ছবি: শাহীন মোল্লা

ঢাকার মিরপুরে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন তৈরি পোশাক কারখানার কয়েকশ শ্রমিক। আজ দুপুর ২টা থেকে সাড়ে ৩টা পর্যন্ত মিরপুর-১৩ ও মিরপুর-১৪ এলাকায় শ্রমিক বিক্ষোভ হয়। শ্রমিকরা তাদের কারখানা থেকে রাস্তায় বেরিয়ে এসে রাস্তার দুই পাশেই অবরোধ করে আশপাশের বিভিন্ন পোশাক কারখানায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন।

শ্রমিকদের দাবি, ন্যূনতম বেতন বাড়ানোর যে ঘোষণা এসেছে প্রথমত তাতে তারা সন্তুষ্ট নন। এর পরও আজ তারা কাজে যোগ দিতে গিয়ে দেখেন সবার বেতন সমান হারে বেড়েনি। সরকার ৫৬ শতাংশ বেতন বাড়ানোর ঘোষণা দিলেও, শ্রমিকদের মধ্যে সামান্য একটি অংশের এই হারে বেতন বাড়ানো হয়েছে। বিশেষ করে যারা অভিজ্ঞ শ্রমিক তাদের বেতন বেড়েছে ২০-৩০ শতাংশ।

বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের কয়েকজন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, শ্রমিকদের মধ্যে শুধু 'হেলপারদের' ৫৬ শতাংশ বেতন বাড়িয়ে সাড়ে ১২ হাজার টাকা করা হয়েছে। অথচ, একটি গার্মেন্টসের শ্রমিকদের মধ্যে হেলপারের সংখ্যা ১০ শতাংশের বেশি নয়। সিংহভাগ শ্রমিকের বেতন সেই অনুপাতে বাড়ানো হয়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন নারী শ্রমিক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, চার বছর ধরে তিনি মিরপুর-১৩ এলাকার একটি গার্মেন্টসের তৃতীয় গ্রেডে ১১ হাজার ১০০ টাকা বেতনে মেশিন অপারেটর হিসেবে কাজ করছেন। আজ সকালে কর্মক্ষেত্রে এসে জানতে পারেন একই গ্রেডে তার বেতন বাড়িয়ে ১৩ হাজার ৭২৫ টাকা করা হয়েছে। অর্থাৎ তার বেতন বেড়েছে ২ হাজার ৬২৫ টাকা। অন্যদিকে হেলপারদের বেতন বেড়েছে সাড়ে ৪ হাজার টাকা।

তিনি বলেন, সরকার ৫৬ শতাংশ বেতন বাড়িয়েছে বলে প্রচার করেছে। এখন হিসাব করে দেখা যাচ্ছে বেশিরভাগ শ্রমিকের বেতন ৩০ শতাংশও বাড়ানো হয়নি। যারা অভিজ্ঞ শ্রমিক তাদেরকে বঞ্চিত করা হয়েছে।

আরেকজন গার্মেন্টস শ্রমিকের দাবি, তিনি দেড় বছর ধরে চতুর্থ গ্রেডে বেতন পেয়েছেন ১০ হাজার ৭০০ টাকা। এখন তার বেতন করা হয়েছে ১৩ হাজার ২৫ টাকা। হিসাব অনুযায়ী বেতন বেড়েছে ২২-২৩ শতাংশ। এ কারণে আমরা রাস্তায় নেমেছি।

শ্রমিকরা বলছেন, যে হারে বেতন বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে সেটাই আমরা মানিনি। এখন দেখা যাচ্ছে তারা যে ঘোষণা দিয়েছে সেই পরিমাণও বাড়ায়নি। শ্রমিকদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। যারা ১৪-১৫ বছর ধরে কাজ করছেন তদের বেতন নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫ হাজারের কম। এটা মেনে নেওয়া যায় না।

কাফরুল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফারুকুল আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, প্রকৃত বেতন বৃদ্ধি ও ঘষিত বেতন নিয়ে আপত্তিতে দুপুর ২টার পর প্রায় পৌনে ১ ঘণ্টা গার্মেন্টস শ্রমিকরা মিরপুর-১৩ ও মিরপুর-১৪ এলাকায় শ্রমিকরা রাস্তার দুই পাশে অবরোধ করে রেখেছিলেন। পরে শ্রমিকরা শান্তিপূর্ণভাবে রাস্তা ছেড়ে চলে যান। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

Comments