ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২: ডিসি-এসপিকে তদন্ত কমিটিতে রাখায় প্রার্থীর আপত্তি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে যাত্রাপুর নুরানিয়া হাফেজিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রে ব্যালট পেপারে প্রকাশ্যে নৌকায় সিল মারা হচ্ছে। ছবি: স্টার

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উপনির্বাচনের গেজেট প্রকাশ স্থগিত রেখে অনিয়মের অভিযোগ তদন্ত করতে যাদেরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তাদের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউল হক মৃধা।

বুধবার (৮ নভেম্বর) তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ জমা দেন।

নির্বাচন কমিশনের গঠন করা তদন্ত কমিটির প্রতি অনাস্থার কারণ হিসেবে তিনি বলেছেন, নির্বাচনের দিন তিনি নিজেই জাল ভোটের ব্যাপারে পুলিশ সুপার ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে মৌখিকভাবে জানিয়েছিলেন। তবুও তারা জাল ভোট বন্ধে উদ্যোগ নেননি। তাই তাদেরকে দিয়েই নিরপেক্ষ তদন্ত সম্ভব নয়।

অভিযোগে বলা হয়, গত ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে সরাইল উপজেলার কয়েকটি কেন্দ্রে ও আশুগঞ্জ উপজেলার অধিকাংশ কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকের সমর্থকরা প্রশাসন, প্রিসাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসারদের সহযোগিতায় ব্যাপক জাল ভোট দেয়। অবৈধ ভোটের মাধ্যমে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।

'সরাইল উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় পরিকল্পিতভাবে সেখানকার কালীকচ্ছ পাঠশালা ভোট কেন্দ্রসহ অধিকাংশ কেন্দ্রে অসামঞ্জস্যপূর্ণ ভোটার তালিকা সরবরাহ করে। ভোটার তালিকায় গরমিল থাকায় শত শত ভোটারদেরকে ফিরে যেতে হয়েছে। সরাইল উপজেলা সদর ইউনিয়ন, শাহবাজপুর, শাহাজাদাপুর, অরুয়াইল, পাকশিমুল ও পানিশ্বর ইউনিয়নের একাধিক কেন্দ্রে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা প্রকাশ্যে নৌকা প্রতীকের ব্যালটে সিল মারেন। একইভাবে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর নিজ উপজেলা আশুগঞ্জের বড়তল্লা ও যাত্রাপুরসহ প্রায় সকল কেন্দ্রে ব্যাপকভাবে জাল ভোট দেওয়া হয়।'

জিয়াউল হক মৃধা অভিযোগে আরও বলেছেন, তিনি সরাইলে যেসব কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন, সেগুলোতে ভোটার উপস্থিতি ছিল খুবই নগণ্য। অথচ বেসরকারি ফলাফল প্রকাশের পর দেখা গেল অস্বাভাবিক সংখ্যায় ভোট পড়েছে। কয়েকটি কেন্দ্রে ব্যালটে সিল মারার ভিডিও গণমাধ্যমে ভাইরাল হয়। তিনি নিজে পুলিশ সুপার ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে মৌখিকভাবে জাননোর পরও তারা জাল ভোট বন্ধে তৎপর হননি।

তার অভিযোগ, যেহেতু রিটার্নিং কর্মকর্তা, পুলিশ সুপার ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের তত্ত্বাবধানে এই নির্বাচন পরিচালিত হয়েছে, তাই তাদের দিয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত হতে পারে না। বিচার বিভাগীয় বা নির্বাচন সংশ্লিষ্ট নয় এমন কাউকে দিয়ে তদন্ত করার দাবি জানান তিনি। অন্যথায় তিনি উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হবেন বলেও উল্লেখ করেন।

জানতে চাইলে জিয়াউল হক মৃধা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত ৫ নভেম্বর জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার মিলে এই কুকীর্তি করেছেন। ৩০ থেকে ৩৫টি কেন্দ্রে ভোট কারচুপি হয়েছে। তারা কোনো ব্যবস্থা নেননি। তাদেরকেই তদন্তভার দেওয়া হয়েছে। এই তদন্ত কমিটির ওপর আমার কোনো আস্থা নেই।'

উল্লেখ্য, উপনির্বাচনের বেসরকারি ফলাফল অনুযায়ী, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু নৌকা প্রতীকে ৬৬ হাজার ৩১৪ ভোট এবং তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউল হক মৃধা কলার ছড়ি প্রতীকে পেয়েছেন ৩৭ হাজার ৫৫৭ ভোট।

Comments

The Daily Star  | English

US fund crunch hits development projects in Bangladesh

Thousands of Bangladeshi development professionals face uncertainty as US government-funded projects have been halted following an executive order by the Trump administration on January 20.

9h ago