আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০২৩

ডাচদের উড়িয়ে অবশেষে জয়ের দেখা পেল ইংল্যান্ড

অবশেষে! টানা পাঁচ হারের পর ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা একটু হলেও স্বস্তির রঙ দেখতে পেল। ইউরোপিয়ান প্রতিপক্ষ নেদারল্যান্ডসকে তারা হারিয়ে দিল নিজেদের রেকর্ড ব্যবধানে।

ডাচদের উড়িয়ে অবশেষে জয়ের দেখা পেল ইংল্যান্ড

ইংল্যান্ড বনাম নেদারল্যান্ডস

অবশেষে! টানা পাঁচ হারের পর ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা একটু হলেও স্বস্তির রঙ দেখতে পেল। ইউরোপিয়ান প্রতিপক্ষ নেদারল্যান্ডসকে তারা হারিয়ে দিল নিজেদের রেকর্ড ব্যবধানে। ১৯৭৫ সালের পর জস বাটলারের দল পেল বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের সবচেয়ে বড় জয়ের দেখা। ৩৭.২ ওভারেই ডাচদের অলআউট করে দিয়ে ১৬০ রানের জয় মিলল ইংল্যান্ডের।

সেই জয়ে ৮ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে ইংল্যান্ড পৌঁছে গেল পয়েন্ট টেবিলের সপ্তম স্থানে। সমান পয়েন্ট নিয়েও নেট রানরেটে পিছিয়ে সবার শেষে নেদারল্যান্ডস। সেইসাথে আনুষ্ঠানিকভাবে ডাচদের সেমির স্বপ্নেরও সমাধি ঘটে গেল।

বুধবার পুনেতে বেন স্টোকসের সেঞ্চুরির সাথে ক্রিস ওকস ও ডাভিড মালান ফিফটি পান। তাদের ইনিংসে ভর করে ইংল্যান্ডের পাওয়া ৩৩৯ রানের পুঁজি নিয়ে ইংলিশ বোলাররা গুড়িয়ে দেন ডাচদের। আদিল রশিদ ও মঈন আলী পান তিনটি করে উইকেট।

পাওয়ারপ্লেতে অবশ্য দুর্দান্ত সুইং বোলিং প্রদর্শনীতে দুই ইংলিশ বোলার ছুড়তে থাকেন একের পর এক প্রশ্ন। বলের নাচন দেখতে থাকা ডাচ দুই ওপেনার দিশেহারা হয়ে পড়েন। ম্যাক্স ও'ডাউড শেষমেশ ১১ বলে ৫ রানে আউটই হয়ে যান ওকসের বলে। পঞ্চম ওভারে তার ফেরার পর পরের ওভারে একই পথ ধরেন কলিন আকারম্যানও। উইলির বলে কিপারে ক্যাচ দিয়ে আকারম্যান শূন্যতেই ফিরে গেলে ১৩ রানে দুই উইকেট হারিয়ে ফেলে ডাচরা।

২৩ রানে পাওয়ারপ্লে শেষের সাথে উইলি-ওকস জুটিরও শেষ হলে কিছুটা স্বস্তিতে আসে নেদারল্যান্ডস। বড় লক্ষ্য তাড়ায় খেলতে নেমে কচ্ছপগতিতে খেলে গিয়ে তৃতীয় উইকেট জুটিতে পঞ্চাশের বেশি রান তুলে তারা৷ কিন্তু ৬৮ রানেই ওয়েসলি বারেসি ফিরে যান রানআউট হয়ে। স্লিপে শুরুতে জীবন পেয়েও বারেসি ৬২ বলে ৩৭ রানের বেশি করতে পারেননি।

অপরপ্রান্তে থিতু হয়ে যাওয়া সিব্র‍্যান্ড এঙ্গেলব্রেখটও আউট হয়ে যান ৩৩ রানেই। উইলির বলে মিডঅনে ধরা খেয়ে যখন এঙ্গেলব্রেখট ফিরছেন, দল তখনও ৯০ রানে। ইনিংসের অর্ধেক শেষেও ডাচরা শতরান পেরিয়ে যেতে পারেনি। ২৬তম ওভারে বাস ডি লিডাকে আদিল রশিদ বোল্ড করে দিলে অর্ধেক উইকেটও হারিয়ে ফেলে নেদারল্যান্ডস। ১০৪ রানে পঞ্চম উইকেট হারিয়ে এরপর ডাচরা পঞ্চাশ রানের বড় জুটি পায়। অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডস স্বচ্ছন্দ্যে খেলে গেলেও ৩৮ রানে তারও বিদায় ঘটে যায়। ১৬৩ রানে এডওয়ার্ডের ফেরার পর হুড়মুড় করে ভেঙে যায় নেদারল্যান্ডসের ইনিংস। একে একে ফিরে যেতে থাকেন শেষ চার ব্যাটার। কেউই ৪ রানের বেশি করতে পারেন না। ৩৭.২ ওভারেই অলআউট হয়ে যাওয়ার সময় একপাশে সর্বোচ্চ ৪১ রান করে অপরাজিত থাকেন তেজা নিদামানুরু।

টসে জিতে ব্যাটিং নেওয়া ইংল্যান্ড ঝড়ো শুরু পেয়ে যায়। ৭ম ওভারেই যদিও হারিয়ে ফেলে জনি বেয়ারস্টোর উইকেট। আরিয়ান দত্তের অফ স্পিনে খাড়া ক্যাচ তুলে দিয়ে ১৭ বলে ১৫ রানে আউট হয়ে যান। তার ওপেনিং সঙ্গী মালানের ব্যাটে যদিও রানের গতিতে হেরফের হয়নি। দুর্দান্ত কয়েকটি স্ট্রেইট ড্রাইভ মারেন মালান, নিয়মিত বাউন্ডারি খুঁজে ৩৬ বলেই ফিফটি পেয়ে যান। জো রুট এসেও আত্মবিশ্বাসের সাথে শুরু করেন।

৭০ রানে পাওয়ারপ্লে শেষ করা ইংল্যান্ড ১৬তম ওভারে শতরান পেরিয়ে যায়। ৪৮ রানে প্রথম উইকেট হারানো ইংল্যান্ড মালান-রুট জুটিতে এগিয়ে যেতে থাকে। কিন্তু শেষমেশ ৮৫ রানেই ভেঙে যায় সে জুটি। সাম্প্রতিককালে রিভার্স স্কুপ রুটের ট্রেডমার্ক শটই হয়ে গেছে। এর আগে সাফল্যে ভরপুর সে শটে এদিন কাল হয়ে যায় তার। রিভার্স স্কুপ খেলতে যাওয়া রুটের পায়ের ফাঁক গলে লোগান ফন বিকের বল ঢুকে ভেঙে দেয় স্টাম্প। ২৮ রানে রুট ফিরে যান ২১তম ওভারেই। পরের ওভারেই মালানের উইকেটও হারিয়ে বসে ইংল্যান্ড। রানআউট হয়ে ৭৪ বলে ১০ চার ও ২ ছক্কার ৮৭ রানের ইনিংস খেলে সেঞ্চুরির আক্ষেপ নিয়ে ফিরে যান মালান।

একাদশে ফেরা হ্যারি ব্রুকও একই পথ ধরেন দ্রুতই। ১১ রানে ব্রুকের ফেরার পর বাটলারেরও বিদায়ের সময় ঘনিয়ে আসে দ্রুত। নিজের চেনা রুপ থেকে যোজন যোজন দূরে থাকা বাটলার আউট হয়ে যান ৫ রানেই৷ বাস ডি লিডার বলে মিডঅফে খেয়ে যান ধরা।

চারে নামা বেন স্টোকস যদিও একপাশ আগলে রেখেছিলেন। কিন্তু মঈন এসেও ৪ রানেই আউট হয়ে গেলে কোন বড় জুটি গড়তে পারছিল না ইংলিশরা। এরপর ক্রিস ওকসের সাথে স্টোকসের জুটি জমে যায়। ওকস দুর্দান্তভাবে খেলতে থাকেন। দেখেশুনে খেলতে থাকা স্টোকস ৫৮ বলে ফিফটি হাঁকানোর পর শুরু করেন ঝড়। গিয়ার পাল্টাতে উস্তাদ স্টোকস শুরু করেন ধুমধাড়াক্কা ব্যাটিং।

৭৮ বলেই পূর্ণ করেন শতক। ক্রিস ওকসও তার ফিফটির দেখা পেয়ে যান ৪৪ বলে। এরপরই যদিও কিপারে ক্যাচ দিয়ে চলে যান ওকস। ৪৫ বলে ৫ চার ও ১ ছয়ে ৫১ রানের ইনিংস খেলে যখন ফিরছেন ওকস, ইংল্যান্ড পৌঁছে গেছে ৩২১ রানে। ১২৯ রানের জুটির পর ডেভিড উইলি এসে এক ছক্কা মেরেই আউট হয়ে যান৷ স্টোকসও ফিরে যান শেষ ওভারে। ৬টি করে ছক্কা ও চারের মারে ৮৪ বলে ১০৮ রানের ইনিংস খেলে থামেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। শেষ দশ ওভারে ১২৪ রান এনে শেষমেশ ইংল্যান্ড থামে ৯ উইকেটে ৩৩৯ রানে৷

Comments

The Daily Star  | English
Banks income from investment in bonds

Bond boom contributes half of bank income

The 50 banks collectively earned Tk 39,958 crore from treasury bonds in 2024, up from Tk 27,626 crore in the previous year, according to an analysis of their audited financial statements.

13h ago