ভোটাধিকারের আন্দোলনে প্রত্যাশিত ভূমিকা রাখছে না নাগরিক সমাজ: নূরুল কবীর

নূরুল কবীর

গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর সমাবেশে হামলার প্রতিবাদে পরদিন জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে হরতাল পালন করেছেন। কিন্তু নাগরিক সমাজ জোরালোভাবে ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। এমনকি সুবিধা আদায়ের জন্য তাদের একটি অংশ ক্ষমতাশীলদের তোষামোদিও করছে।

শনিবার রাজধানীর বাংলামোটরে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে বঙ্গীয় সাহিত্য সভা আয়োজিত 'দেশের সংকটে নাগরিক সমাজের ভূমিকা' শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।

সেমিনারে বক্তব্য দেন ডেইলি নিউএজ সম্পাদক নূরুল কবীর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক লেখক আসিফ নজরুল, গবেষক রাখাল রাহা, কবি সাখাওয়াত টিপু, শিল্পী অরূপ রাহী, লেখক সালাহ উদ্দিন শুভ্র এবং মানবাধিকারকর্মী রোজিনা বেগম। বঙ্গীয় সাহিত্য সভার আহ্বায়ক মাহবুব মোর্শেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন সংগঠনের সদস্য সচিব এহসান মাহমুদ।

নূরুল কবীর বলেন, ২৯ অক্টোবর বিরোধীদের ডাকা হরতালে জনতার স্বতঃস্ফূর্ত মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে। এই স্বতঃস্ফূর্ত মনোভাব গণভোটের সমান।

'কম গণতন্ত্র বেশি উন্নয়ন'—সরকার সমর্থকদের এই বয়ানের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখানে আমাদের চাওয়া কী এটা আগে নির্ধারণ করতে হবে। আমাদের আশু কর্তব্য হচ্ছে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা। আগামীতে গণতন্ত্রকে সুরক্ষিত করার জন্য রাজনৈতিক বোঝাপড়ায় পৌঁছানো দরকার।

নূরুল কবীর আরও বলেন, দেশে এখন যে অবস্থা বিরাজ করছে তাতে নাগরিক সমাজের যে ভূমিকা রাখার কথা ছিল তার সত্যিকারের প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না। বিরোধীদলসমূহের ভোটাধিকারের আন্দোলনে যেভাবে স্বতঃস্ফূর্ত জনতার অংশগ্রহণ দেখা গেছে সে তুলনায় নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের পাওয়া যায়নি।

কবি সাখাওয়াত টিপু বলেন, লেখক সাহিত্যিকরা কেবল বুদ্ধিবৃত্তিক চিন্তা করবেন তাই নয়। আন্দোলন সংগ্রামে শরিক হয়ে গণতন্ত্রকে সুরক্ষার জন্য তাদেরও এখন রাস্তায় নেমে আসা উচিত।

রাখাল রাহা বলেন, আমরা এখন যে সুশীল সমাজ দেখতে পাচ্ছি তারা রয়ে গেছেন সেই ষাটের দশকের আমলে। কিন্তু যারা স্বৈরাচার, তারা হিংস্রতায় অতীতের যেকোনো সময়কে ছাড়িয়ে গিয়েছে। তাই নাগরিক সমাজকে বর্তমান প্রেক্ষাপটে থেকে বিবেচনা করতে হবে।

অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, ভোটাধিকার না থাকলে মানুষ মূলত দাসে পরিণত হয়। আমরা এখন সেদিকেই এগিয়ে যাচ্ছি। দুঃখজনক বিষয় হলো, আমাদের নাগরিক সমাজের একটি অংশ শাসকগোষ্ঠীর সঙ্গে ভোটাধিকারের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English
future of bangladesh after banning awami league

What are we building after dismantling the AL regime?

Democracy does not seem to be our focus today. Because if it were, then shouldn’t we have been talking about elections more?

17h ago