আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০২৩

ওয়ার্নার-মার্শ জুটির ধ্বংসযজ্ঞে অস্ট্রেলিয়ার বিশাল সংগ্রহ

ডেভিড ওয়ার্নার ১২৪ বলে ১৬৩ রানের ইনিংস খেলেই তবে থেমেছেন। মিচেল মার্শের ১২১ রানের ইনিংসে দুই ওপেনার গড়েন ২৫৯ রানের জুটি। তাতে ভর করে অস্ট্রেলিয়া গড়েছে ৩৬৭ রানের পুঁজি। 

ওয়ার্নার-মার্শ জুটির ধ্বংসযজ্ঞে অস্ট্রেলিয়ার বিশাল সংগ্রহ

ডেভিড ওয়ার্নার ১২৪ বলে ১৬৩ রানের ইনিংস খেলেই তবে থেমেছেন। মিচেল মার্শের ১২১ রানের ইনিংসে দুই ওপেনার গড়েন ২৫৯ রানের জুটি। তাতে ভর করে অস্ট্রেলিয়া গড়েছে ৩৬৭ রানের পুঁজি। 
mitchell starc and david warner

ক্যাচ মিসে যন্ত্রণা তো থাকেই, ক্যাচ মিসের পর জীবন পাওয়া ব্যাটার সেই যন্ত্রণা আরও বাড়িয়ে দিতে পারেন। আর ডেভিড ওয়ার্নারের মতো ব্যাটার হলে তো কথাই নেই। পাকিস্তানিরা হাড়ে হাড়েই টের পেল তা। ডেভিড ওয়ার্নার ১২৪ বলে ১৬৩ রানের ইনিংস খেলেই তবে থেমেছেন। মিচেল মার্শের ১২১ রানের ইনিংসে দুই ওপেনার গড়েন ২৫৯ রানের জুটি। তাতে ভর করে অস্ট্রেলিয়া গড়েছে ৩৬৭ রানের পুঁজি। 

টসে জিতে বোলিং নেওয়ার পর পাকিস্তানের উপর দিয়ে যে ঝড় বয়ে গেল! পাওয়ারপ্লেতেই অস্ট্রেলিয়া এনে ফেলে ৮২ রান। অবশ্য ইনিংসের শুরু থেকেই এমন ধুড়ুমধাড়াক্কা মার চলেনি। বোলিং ভালোই করেছিলেন পাকিস্তানিরা, তবে প্রত্যেক ওভারে দুয়েকটি বাউন্ডারি বল দেওয়ায় সমস্যা বাধে। চিন্নাস্বামীর ব্যাটিং-স্বর্গে যদিও তা তাদের অত পিছিয়ে দেয়নি। ৮ ওভার শেষে অস্ট্রেলিয়ার রান থাকে ৪৩। শেষ দুই ওভারে আসে ৩৯ রান। ইফতিখার পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে ১৫ রান দেওয়ার আগে হারিস রউফ দিয়ে দেন ২৪ রান!

এলোমেলো বোলিংয়ে রউফ যেন নিজের ছায়া হয়ে ছিলেন। প্রথম তিন স্পেলে বাউন্ডারি বৃষ্টিতে ৩ ওভারেই দিয়ে ফেলেন ৪৭ রান। অস্ট্রেলিয়া ১৩তম ওভারেই একশ পেরিয়ে যায়। ওয়ার্নার ৩৯ বলে ফিফটি হাঁকান, কিছুক্ষণ পর মিচেল মার্শও ৪০ বলে ফিফটি ছুঁয়ে ফেলেন।

ডেভিড ওয়ার্নার চড়াও হচ্ছিলেন, আর পাকিস্তানের আক্ষেপ বেড়েই চলছিলো। মাত্র ১০ রানে ছিলেন ওয়ার্নার, ৫ম ওভারে যখন শাহীন আফ্রিদির বলে আড়াআড়ি খেলতে গিয়ে ক্যাচ তুলেছিলেন। এত লোপ্পা ক্যাচ দশবারে দশবার ধরতে পারার কথা। শাদাবের জায়গায় সুযোগ পাওয়া উসামা মীর বিশ্বকাপে অভিষেকের দিন স্নায়ুযুদ্ধে পারেননি।

ইফতিখার ও নাওয়াজ মিলে মার্শকে আটকাতে পেরেছিলেন, স্ট্রাইক বদলে ব্যর্থ হচ্ছিলেন লম্বা সময়ে মার্শ। তবে স্পিনারদের বিপক্ষে আগ্রাসী হয়ে সেসব পুষিয়ে দিচ্ছিলেন ওয়ার্নার। ৩০তম ওভারেই তাই দুইশ পেরিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। পরের ওভারে ৮৫ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করে ফেলেন ওয়ার্নার, যা ওয়ানডেতে পাকিস্তানের বিপক্ষে তার টানা চতুর্থ সেঞ্চুরি। পরের বলেই মার্শও তার শতকের দেখা পেয়ে যান ৮৫ বলে।

শতকের উদযাপনে মেতে উঠার পর যেন 'পাগলামি'ই শুরু হয়ে যায়! দুজনেই ভয়ঙ্কর রুপ ধারণ করেন। এভাবেই মীরকে মারতে গিয়ে ১০৫ রানে থাকা ওয়ার্নার ক্যাচ দিয়ে ফেলেছিলেন। কিন্তু আব্দুল্লাহ শফিকের কল্যাণে দ্বিতীয় জীবন পেয়ে যান ওয়ার্নার। মার্শ সেঞ্চুরির পর ৭ বলে ২১ রান এনে আউট হয়ে যান আফ্রিদির বলে ফাইন লেগে ক্যাচ দিয়ে। ১০ চার ও ৯ ছক্কায় ১০৮ বলে ১২১ রানে থামে তার বিধ্বংসী ইনিংস। 

২৫৯ রানের জুটি ভাঙ্গলে ওয়ান ডাউনে ম্যাক্সওয়েল নেমে প্রথম বলেই এলোপাতাড়ি ব্যাট চালিয়ে আউট হয়ে যান। স্মিথ এলে মীরের বলে ১ রানে ক্যাচ উঠে স্লিপে, আবারও পাকিস্তানের ক্যাচ মিস, অধিনায়কের হাতে এবার৷ স্মিথ বেশিক্ষণ টিকেননি অবশ্য, ৭ রানে মীরের বলেই আউট হন। ওয়ার্নার একপাশে রানের গতি ধরে রেখেছিলেন। ৪১তম ওভারে অস্ট্রেলিয়া ছাড়িয়ে যায় তিনশ। দলের তিনশর সঙ্গে ১১৬ বলে নিজের দেড়শও পেয়ে যান ওয়ার্নার। 

শেষ দশ ওভারে অস্ট্রেলিয়া উড়াল দেওয়ার জন্য প্রস্তত ছিল। কিন্ত শাহীন ও রউফের দুর্দান্ত বোলিংয়ে একের পর এক উইকেট হারায় অজিরা। ওয়ার্নার ১২৪ বলে ১৬৩ রানের ইনিংস খেলে থামেন, ১৪টি চারের সঙ্গে ৯টি ছক্কা ছিল যে ইনিংসে। শেষ দশ ওভারে ৭০ রানের বেশি আনতে পারেনি অজিরা। হারিয়ে ফেলে ৬ উইকেট। ৫ ওভারে ৭০ রান দেওয়া রউফ নিজের শেষ তিন ওভারে ১৩ রান দিয়ে লাগাম টেনে ধরেন। শাহীন ম্যাচজুড়ে দুর্দান্ত বোলিং করে ফাইফার পেয়ে ৫৪ রানে দশ ওভার শেষ করেন। শেষমেশ অস্ট্রেলিয়াকে তাই ৩৬৭ রানে অন্তত আটকাতে পারে তারা৷

Comments

The Daily Star  | English

Inside the lives of RMG workers

In the shadowy predawn hours, the air in Ashulia, a small industrial town on the outskirts of Dhaka, is thick with anticipation.

11h ago