রাস্তায় কে ঘেউ ঘেউ করে বেড়ালো, সেটাকে বিদেশে বিরোধী দল হিসেবে ধরে না: প্রধানমন্ত্রী

গণভবনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিন। ছবি: পিআইডি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রাস্তায় কে ঘেউ ঘেউ করে বেড়ালো, সেটাকে কিন্তু বিদেশে কখনো বিরোধী দল হিসেবে ধরে না। এটা সকলের মনে রাখা উচিৎ। যারা বলে বেড়াচ্ছে, তারা বলতে থাকুক, কোনো অসুবিধা নাই।

আজ শুক্রবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে এটিএন নিউজের সাংবাদিক আরাফাত সিদ্দিকী বলেন, 'আপনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরার পর বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়, আপনি খালি হাতে ফিরেছেন। এর জবাব দিতে গিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন যে, আপস হয়ে গেছে। পুরো বিষয়টি নিয়ে আপনার মন্তব্য শুনতে চাই।'

জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, 'বিএনপি বলেছে আমি খালি হাতে এসেছি, আমি কোনো উত্তর দিতে চাই না। আমি শুধু দেশবাসীকে বলতে চাই, বিএনপির নেতারা মাইক লাগিয়ে কী হারে মিথ্যা কথা বলে, সেটাই আপনারা জেনে নেন। মিথ্যা বলা যে তাদের অভ্যাস, আর সবকিছুকে যে খাটো করে দেখার চেষ্টা, এটা সম্পর্কে যেন দেশবাসী সচেতন থাকে। তারা যা বলে, সবই মিথ্যা কথা বলে। এই মিথ্যা কথায় কেউ কান দেবেন না, বিশ্বাস করবেন না। দেশবাসীর কাছে এটাই আমার আহ্বান।'

'তাদের জন্মই হয়েছে অবৈধভাবে। আর টিকেই আছে মিথ্যার উপরে। ওদের আর কোনো শেকড় তো নেই। অবৈধভাবে অস্ত্রধারীর পকেট থেকে যারা জন্মায় তারা মিথ্যার ওপরই নির্ভর করে,' যোগ করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, 'আমাদের কিছু কিছু স্বনামধন্য অর্থনীতিবিদ থেকে শুরু করে কেউ কেউ বলেন মেগাপ্রজেক্ট আমরা করে ফেলেছি, কিন্তু দরিদ্রদের জন্য কিছু করিনি। এরকম বক্তব্য শুনলে মনে হয় তারা বাংলাদেশকে দেখেনি। ঘরের ভেতরেই আছেন। টেলিভিশনে হয়ত দেখেন, দিন-দুনিয়া তাকায়ে দেখেন না।'

এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দারিদ্র বিমোচনে তার সরকারের নেওয়া বিভিন্ন প্রকল্পের কথা তুলে ধরেন।       

এরপর তিনি বলেন, 'আমরা যদি কিছু নাই করতে পারি, তাহলে শতভাগ বিদ্যুৎ পেলেন কোথা থেকে। এতগুলো টেলিভিশন চ্যানেল খুলে দিয়েছি, সেখানে টকশোতে টক-মিষ্টি কথা বলে যাচ্ছেন। বলেন, কোনো আপত্তি নেই। যে যার মতো সারাদিন কথা বলে। বিএনপির তো মাইক একটা লাগানোই থাকে। সারাদিন কথা বলে, আর বলে যে আমাদের কথা বলতে দেয় না। আর আমরা নাকি তাদের মিছিল-মিটিং করতে দেই না। আমার মাঝে মাঝে মনে হয়, যখন বিএনপি ক্ষমতায় ছিল, ২০০১ সালে আমাদের সাথে কী আচরণ করত। আমাদের নেতাকর্মীদের ধরে নিয়ে দিনের পর দিন টর্চার করেছে, অত্যাচার করেছে। আমরা যদি তার একটা কণাও করতাম, তাহলে ওদের অস্তিত্বই থাকত না। আমরা তো তাদের খুলে দিয়েছি যে তোমাদের যা খুশি করো। নিজেদের কাজের মধ্য দিয়ে মানুষের হৃদয় জয় করে আস।'

'অবশ্যই প্রতিদ্বন্দ্বী থাকতে হবে, বিরোধী দল থাকতে হবে। কিন্তু বিরোধী দল কে? যাদের পার্লামেন্টে একটা সিট নাই, তাদের বিরোধী দল বলা যায় না। যাদের নির্বাচন করার সাহস নেই, নির্বাচন করে পার্লামেন্টে আসতে পারে না, তারা আবার বিরোধী দল কীসের,' বলেন প্রধানমন্ত্রী। 
 
'আমরা ওয়েস্টমিনিস্টার টাইপ ডেমোক্রেসিতে বিশ্বাস করি' উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, 'ডেমোক্রেটিক সিস্টেমে গণতান্ত্রিক ধারায় বিরোধী দলে যাদের আসন আছে সংসদে, সেটাই হচ্ছে বিরোধী দল। রাস্তায় কে ঘেউ ঘেউ করে বেড়ালো, সেটাকে কিন্তু বিদেশে কখনো বিরোধী দল হিসেবে ধরে না। এটা সকলের মনে রাখা উচিৎ। যারা বলে বেড়াচ্ছে, তারা বলতে থাকুক, কোনো অসুবিধা নাই।' 

নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৮তম অধিবেশনে যোগদানের ফলাফল সম্পর্কে গণমাধ্যমকে অবহিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে ১৬ দিনের সরকারি সফর শেষে বুধবার দেশে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী।

  
 

Comments

The Daily Star  | English

NBR revises VAT, SD on 9 items following public outcry 

The tax authority brought down the indirect taxes two weeks after the government hiked rates of nearly 100 goods and services drawing opposition from criticisms that the spike would stoke inflation which has been staying over 9 percent since March 2023

22m ago