দুই-তিন হাত ঘুরে এলপিজি সিলিন্ডারের দাম বেড়ে যায়: জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, এলপিজি সিলিন্ডারের ডিলারদের অনেক এজেন্ট থাকে। তাদের আরও সাব-এজেন্ট থাকে। যার কারণে তিন-চার হাত ঘুরে এটা কাস্টমারের কাছে যায়। ফলে দাম বেড়ে যায়।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, তিনি নিজে দেখেছেন যে, এলপিজি সিলিন্ডার ঘোষিত দামের চেয়ে ১০০ থেকে ২০০ টাকা বেশি বিক্রি হচ্ছে।
'এটা কিন্তু অনেক টাকা। আমাদের দেখার বিষয় যে, কতটা সহনীয় মূল্যে আমরা এলপিজি গ্রাহকদের কাছে পৌঁছাতে পারি। এটা নিশ্চিত করার কোনো বিকল্প নেই। এ খাতের সব ব্যবসায়ীকে নজরদারির মধ্যে আনতে হবে।
আজ রোববার রাজধানীর টিসিবি ভবনে আয়োজিত 'হোটেল-রেস্তোরায় এলপিজি সিলিন্ডারের নিরাপদ ব্যবহার' শীর্ষক এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন এই কর্মশালার আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এলপিজির দামের ব্যাপারে কমিশন বহু নজরদারি করছে। তবে বাজারে গেলে দেখা যায়, খুচরা দোকানদারেরা বিভিন্ন এলাকাতে বিভিন্ন উপায়ে দামটা বাড়িয়ে দেয়। এক্ষেত্রে এলপিজি ডিস্ট্রিবিউটর ও তাদের যারা নিয়ন্ত্রণ করেন, তাদের দায়িত্ব রয়েছে। এলপিজি ডিস্ট্রিবিউটরদের সংগঠনগুলোর দায়িত্ব আছে। কমিশন হয়তো রেন্ডমলি কোথাও কোথাও দাম যাচাই করতে পারে। কিন্তু এটা ডিস্ট্রিবিউটরদেরই দায়িত্ব তাদের নিজস্ব এলাকায় কী দামে এলপিজি বিক্রি হচ্ছে, সেটা নজরদারি করা।
প্রতিমন্ত্রী জানান, ২০০৯ সালে এলপিজির বার্ষিক চাহিদা ছিল প্রায় ৬৬ হাজার টনের মতো। বর্তমানে যা ১৪ লাখ টনের বেশি।
হোটেল রেস্তোরায় এলপিজি সিলিন্ডার ব্যবহারের জন্য নীতিমালার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে নসরুল হামিদ বলেন, 'যে কোনো দোকানে দেখি ৪-৫টা সিলিন্ডার সামনে রেখে দিচ্ছে। হোটেলে চুলার পাশে রেখে দিচ্ছে। এগুলো খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। যেকোনো সময় যেকোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। বিইআরসির পাশাপাশি রাজউক, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, কক্সবাজার সিটি ডেভেলপমেন্ট অথরিটির মতো সংস্থাগুলোকেও এ বিষয়ে নজর দিতে হবে।'
আবাসিক ভবনগুলোতে এখন আর পাইপলাইনের গ্যাসের প্রয়োজন নেই উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, 'হাইরাইজগুলোতে নিচে ট্যাঙ্ক বসিয়ে সবাই কিন্তু খুব সহজে ও সেফলি এলপিজি ব্যবহার করতে পারেন। এলাকাভিত্তিকও এ ধরনের ট্যাঙ্ক বসানোর কাজ করা যেতে পারে।'
তিনি বলেন, তিতাসের পাইপলাইনগুলো অনেক পুরোনো হয়ে গেছে। ৫০-৬০ বছরের পুরনো। অধিকাংশ পাইপলাইন লিক। অনেক চোরাই লাইন তৈরি হয়েছে। বিচ্ছিন্নভাবে বছরকে বছর ধরে এ কাজগুলো হয়ে আসছে। এগুলোর সমাধানে বড় প্রজেক্ট নিয়েছে তিতাস। সে প্রকল্প শেষ হতেও ৪-৫ বছর সময় লাগবে।
বিইআরসির চেয়ারম্যান মো. নুরুল আমিনের সভাপতিত্বে কর্মশালায় জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব মো. নুরুল আলম, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার উপস্থিত ছিলেন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের সাবেক অধ্যাপক মাকসুদ হেলালী।
Comments