৯৭ শতাংশ স্মার্টফোন ব্যবহারকারী গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন: গবেষণা
বৈশ্বিক টেলিকম কোম্পানি টেলিনরের এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ৯৭ শতাংশ মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ফোন ব্যবহারের সময় গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন।
'টেলিনর এশিয়া ডিজিটাল লাইভস ডিকোডেড' শিরোনামের গবেষণা প্রতিবেদনটি তৈরিতে এশিয়ার আটটি দেশের আট হাজারেরও বেশি মানুষের ওপর জরিপ চালানো হয়েছে। দেশগুলো হলো- বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, পাকিস্তান, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম।
এই গবেষণার উদ্দেশ্য ছিল- মোবাইল সংযোগের প্রতি আচরণ ও দৃষ্টিভঙ্গি জানা এবং এটি কীভাবে এশিয়ার মানুষের জীবনযাপনে পরিবর্তন আনছে তা তুলে আনা।
গবেষণায় দেখা গেছে, এই আটটি দেশের মধ্যে দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার বিষয়ে সবচেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন বাংলাদেশিরা। প্রায় ৯৭ শতাংশ বাংলাদেশি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, তাদের যে ডিজিটাল দক্ষতা আছে তা আগামী বছরগুলোতে প্রযুক্তির সর্বাধিক ব্যবহারের জন্য যথেষ্ট নাও হতে পারে।
প্রায় ৯১ শতাংশ বাংলাদেশির উত্তর ছিল, মোবাইল ব্যবহারের মাধ্যমে তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়েছে। এছাড়া প্রায় ৭৩ শতাংশ মনে করেন, আগামী ১২ থেকে ২৪ মাসের মধ্যে স্মার্টফোনের ব্যবহার বৃদ্ধি পাবে।
তবে পুরুষের (প্রায় ৫০ শতাংশ) তুলনায় বেশি সংখ্যক নারী (প্রায় ৫৯ শতাংশ) জানিয়েছেন, মোবাইল তাদের জীবনযাত্রার মানকে উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত করেছে। প্রায় ৫১ শতাংশ নারীর মতে, স্বাস্থ্যসেবা, আর্থিকসেবা ও শিক্ষামূলক পরিষেবা ও অ্যাপের
অ্যাক্সেস তাদের জীবনযাত্রার মানে পরিবর্তন এনেছে। যেখানে প্রায় ৩৭ শতাংশ পুরুষ বলেছেন, মোবাইল তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে অবদান রেখেছে।
গবেষণায় অংশ নেওয়া বাংলাদেশের প্রায় ৭৪ শতাংশ মনে করেন, কাগজ ও বর্জ্য কমিয়ে এবং আরও দক্ষ যোগাযোগের মাধ্যমে ভবিষ্যতে সুস্থ জীবনযাপনে ডিজিটাল অ্যাক্সেস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রায় ৪৮ শতাংশ বাংলাদেশি বলেছেন, তারা উৎপাদনশীল উপায়ে প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন। প্রায় ৭৩ শতাংশ বাংলাদেশি মনে করেন, বর্তমানে মোবাইল প্রযুক্তির অনুন্নত ব্যবহারের কারণে তাদের কোম্পানি আয়ের সুযোগ হারাচ্ছে।
মোবাইল ব্যবহারকারীরা জানান, বাংলাদেশে কর্মক্ষেত্রে মোবাইল প্রযুক্তির পূর্ণ ব্যবহারের প্রতিবন্ধকতার মধ্যে আছে- গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা উদ্বেগ (৬১ শতাংশ), দক্ষতা ও জ্ঞানের অভাব (৬০ শতাংশ) এবং প্রযুক্তির প্রতি আস্থার অভাব (৪৯ শতাংশ)।
টেলিনর এশিয়ার হেড অব এক্সটারনাল রিলেশনস মনীষা ডোগরা বলেন, 'আমাদের ডিজিটাল লাইভস ডিকোডেড গবেষণায় দেখা গেছে, মোবাইল সংযোগ মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত করেছে, অর্থনৈতিক সুযোগ উন্মুক্ত করে এবং শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার মতো বিষয়গুলোতে প্রবেশাধিকার বাড়িয়েছে।'
তিনি আরও বলেন, 'বাংলাদেশে প্রতিযোগিতামূলক ও সমৃদ্ধ ডিজিটাল অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে এবং মোবাইল সংযোগ এগিয়ে নিতে উদ্ভাবন ও নতুন প্রযুক্তি গ্রহণে উৎসাহিত করে এমন প্রগতিশীল নীতিমালা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভবিষ্যতের সম্ভাবনাগুলো কাজে লাগাতে এবং সবার উপকারে স্মার্ট বাংলাদেশের সম্ভাবনা অর্জনে আমাদের একে অপরের শক্তি ও দক্ষতা কাজে লাগিয়ে যৌথ চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।'
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের সম্ভাবনা অর্জনের মূল চাবিকাঠি হচ্ছে মোবাইল কানেকটিভিটি গ্রহণ করা।
Comments