চিনি-ভোজ্যতেলের শুল্ক যৌক্তিক করতে রাজস্ব বোর্ডকে পরামর্শ দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়
চিনি ও ভোজ্যতেল আমদানিতে আরোপিত শুল্ক হার আরও যৌক্তিক পর্যায়ে আনতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) পরামর্শ দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
গতকাল মঙ্গলবার বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি জাতীয় সংসদে এ কথা জানান।
তার দাবি, সরকারের সময়োপযোগী উদ্যোগের কারণে পণ্যের দাম ও সরবরাহ স্থিতিশীল রাখা সম্ভব হয়েছে।
সংসদে গণফোরামের সদস্য মোকাব্বির খানের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ভবিষ্যতে যাতে বাজারে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি না হয় সে জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বাজারে অস্থিতিশীলতা রোধে নজর রাখছে।
মন্ত্রী জানান, বাজারে পণ্য সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে আমদানিতে বাধা দূর, শুল্ক কমানো, গ্যাস-বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করা, বন্দরগুলোয় দ্রুত ক্লিয়ারেন্স নিশ্চিত করা, লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) অনুযায়ী পণ্য আমদানি তদারকিসহ সম্ভাব্য সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
পোল্ট্রি বাজারে অনিয়ম বা সেখানে কেউ একচেটিয়াভাবে ব্যবসা করছেন কি না তা খতিয়ে দেখতে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনকে অনুরোধ করা হয়েছে।
ভোজ্যতেল ও চিনির দাম আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তা নানা সময়ে সমন্বয় করা হয়েছে।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন খানের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, 'পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও ডলারের দাম বাড়ার কারণে আমদানি করা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে।'
'মশলাসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামে এসবের প্রভাব দেখা যাচ্ছে,' বলে মন্তব্য করেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য বেনজীর আহমেদের আরেক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে ভারত ও পাকিস্তানসহ সার্কভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের মোট বাণিজ্য ঘাটতি হয়েছে সাড়ে সাত শ কোটি ডলার।
সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ভারতের সাথে সর্বোচ্চ সাত দশমিক ১৬ বিলিয়ন ডলার বাণিজ্য ঘাটতি আছে। এ ছাড়াও, পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি আছে ৪৬৬ দশমিক ৩৩ মিলিয়ন ডলার, ভুটানের সঙ্গে ১৪ দশমিক ২৯ মিলিয়ন ডলার ও আফগানিস্তানের সঙ্গে এক দশমিক ৪৯ মিলিয়ন ডলার।
সার্কভুক্ত অন্য দেশগুলোর মধ্যে নেপাল, শ্রীলংকা ও মালদ্বীপের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত আছে।
অন্যদিকে, চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি ১৫ দশমিক ৪৮৮ বিলিয়ন ডলার।
আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আলী আজমের প্রশ্নের জবাবে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমদ সংসদে বলেন, সরকারের কার্যকর উদ্যোগের ফলে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১১ লাখ ২৫ হাজার কর্মী বিদেশে কাজ করছেন।
আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, জনশক্তি রপ্তানির জন্য ১৮ দেশ ও হংকংয়ের সঙ্গে চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক আছে।
এই ১৮ দেশ হলো—কুয়েত, কাতার, ওমান, লিবিয়া, মালদ্বীপ, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া, জর্ডান, বাহরাইন, ইরাক, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, ব্রুনাই, সিঙ্গাপুর, মরিশাস, কম্বোডিয়া, গ্রিস ও জাপান।
মাল্টা, আলবেনিয়া, রোমানিয়াসহ ইউরোপের অন্যান্য দেশের সঙ্গে চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সইয়ের পরিকল্পনা আছে বলেও জানান তিনি।
Comments