দেশে লুটপাট-পাচার বন্ধসহ ৪ দফা প্রস্তাব রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের

রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: সংগৃহীত

দেশ থেকে পাচারকৃত অর্থ-সম্পদ ফেরত পাঠাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সহায়তার আহ্বান জানানোসহ ৪ দফা প্রস্তাব রেখেছে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তারা এসব প্রস্তাব তুলে ধরেন।

আয়োজনে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম বলেন, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং আগামী জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের বন্ধুপ্রতীম বিভিন্ন রাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা বেশ জোরেশোরে ভোটাধিকার, গণতন্ত্র, মানবাধিকার, আইনের শাসনসহ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ব্যাপকভাবে উদ্বেগ ও তৎপরতা দেখিয়েছেন। দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে তাদের এইরকম উদ্বেগ প্রকাশকে আমরা সাধুবাদ জানাই। পাশাপাশি সেসব বন্ধুরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের এবং দেশের জনগণকে বলতে চাই, বাংলাদেশে যে ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হতে পারে না, মানবাধিকার চাইলেই কেড়ে নেওয়া যায়, আইনের শাসনের নামে আইন দিয়েই জুলুম করা হয়—সেসবের যতগুলো কারণ আছে, তারমধ্যে প্রধানতম কারণ হচ্ছে—রাষ্ট্রক্ষমতা ব্যবহার করে অবাধ লুটপাট ও পাচারের সুযোগ।'

লিখিত বক্তব্যে সংগঠনটির রাজনৈতিক সমন্বয়ক ফরিদুল হক বলেন, আমেরিকার ওয়াশিংটনভিত্তিক থিংকট্যাংক গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউট নামক প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন দেশের অবৈধ অর্থ পাচার এবং আত্মসাৎ নিয়ে কাজ করে। তারা ২০১৩, ২০১৫ ও ২০১৮ সালে আমাদের দেশের সম্ভাব্য পাচার নিয়ে তিনটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছিল। তাদের হিসাবে ২০০৬ থেকে ২০১৫ সাল—এই ১০ বছরে প্রায় ৬২ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে বলে তারা অনুমান করেছিল। সেই হিসাব অনুযায়ী এ ধারা অব্যাহত থাকলে ২০২৩ সাল নাগাদ প্রতি বছর আমাদের দেশ থেকে ১৪ বিলিয়ন ডলার পাচার হওয়ার কথা। দেশে একটা 'ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট' আছে, যাদের দেশের পাচার বন্ধে কাজ করার কথা। তারা ২০১৮ সালের রিপোর্ট প্রকাশ হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানির তথ্য জিএফআইকে সরবরাহ করা বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে তাদের থেকে আমরা কোনো হিসাব পাচ্ছি না।

সংবাদ সম্মেলনে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের পক্ষ থেকে ৪ দফা প্রস্তাব দেশবাসীর বিবেচনা ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ইতিবাচক ভূমিকার প্রত্যাশায় সংক্ষেপে তুলে ধরা হয়। সেগুলে হলো—

১। বাংলাদেশের লুটপাট ও পাচার বন্ধ করতে হবে। লুটপাট ও পাচার বন্ধের সব আইন-কানুন সংস্কার করতে হবে।

২। পাচার ও লুটপাটবিরোধী আন্তর্জাতিক যেসব আইন, কনভেনশন, প্রতিষ্ঠান রয়েছে, বাংলাদেশকে অবিলম্বে সেসব আইন ও কনভেনশন র‍্যাটিফিকেশন করতে হবে।

৩। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের যারা বাংলাদেশের গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন, তারাসহ অপরাপর সব দেশকে বাংলাদেশ থেকে পাচারকৃত সম্পদ অনুসন্ধান, চিহ্নিত ও বাজেয়াপ্ত করার জন্য দেশের জনগণের পক্ষ থেকে আহ্বান জানাচ্ছি।

৪। স্বাধীনতার পরে বিগত ৫২ বছরে পাচারকৃত অর্থ-সম্পদের হিসাব শ্বেতপত্র আকারে প্রকাশের করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলন থেকে জানানো হয়, দেশের পাচারকৃত অর্থ-সম্পদ ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদেরকে জোরালো ভূমিকা নিতে অনুরোধ জানিয়ে ধাপে ধাপে তাদেরকে চিঠি দিয়ে, সেমিনার আয়োজন করে বিভিন্ন মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হবে। পাশাপাশি এ ব্যাপারে সোচ্চার হতে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী সব মানুষকে এগিয়ে আসতেও আহ্বান জানানো হয়।

Comments

The Daily Star  | English

3 of a family killed in Sirajganj crash

The deceased are Shafikul Islam, 35, his wife Sumona Khatun, 30, and his sister Laki Khatun, 25, of Purbo Baoitara village in Sirajganj's Sadar upazila

28m ago