জামালপুরে বন্যায় ৪০ হাজার মানুষ পানিবন্দি

বাড়িঘরে পানি ঢুকে ৪০ হাজারের বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। ছবি: স্টার

জামালপুরে যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। জেলার সদর উপজেলা ছাড়া বাকি ৬ উপজেলার নদী তীরবর্তী অঞ্চলে বসবাসকারীদের বাড়িঘরে পানি ঢুকে পড়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন ৪০ হাজারের বেশি মানুষ।

ইতোমধ্যেই তলিয়ে গেছে ১ হাজার ৩২৮ হেক্টর রোপা আমনের খেত। পানি ঢুকে পড়ায় পাঠদান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ২৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে।

বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টের পানি পরিমাপক আব্দুল মান্নান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত ২৪ ঘণ্টায় বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি ৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৩০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।'

সরেজমিনে দেখা গেছে, ইসলামপুর ও দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন বন্যায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যা কবলিত ইউনিয়নগুলো হলো—দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চিকাজানী ও চুকাইবাড়ি ইউনিয়ন এবং ইসলামপুর উপজেলার কুলকান্দি, চিনাডুলী, বেলগাছা, পাথর্শী, সাপধরী ও নোয়ারপাড়া ইউনিয়ন।

ইসলামপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম বলেন, 'বন্যার কারণে ইসলামপুর উপজেলার ২৫ কিলোমিটার সড়ক ডুবে গেছে। পানি ঢুকে পড়ায় পাঠদান বন্ধ করা হয়েছে ২৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে।'

জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ, বকশীগঞ্জ, ইসলামপুর, সরিষাবাড়ী, মাদারগঞ্জ ও মেলান্দহ উপজেলার নিম্নাঞ্চলে ২ হাজার ৮৭ হেক্টর জমির আমন ধান পানিতে তলিয়ে গেছে।

দেওয়ানগঞ্জের চিকাজানী গ্রামের মহর মিয়া বলেন, 'যমুনাপাড়ে থাকি। ৭ বার ঘরবাড়ি ভেঙেছি। যমুনা আমাদের সর্বশান্ত করেছে। এবারও বন্যায় আমার ধান ও মরিচের খেত নষ্ট হয়েছে।'

ইসলামপুরের চিনাডুলী গ্রামের মতিন মিয়া বলেন, '৭ দিন আগে আমার বাড়িতে পানি উঠেছে। উপজেলা থেকে অল্প শুকনো খাবার পেয়েছি। সেগুলো শেষ।'

সরিষাবাড়ীর মেন্দারবেড় গ্রামের সালেহা বেগম বলেন, 'বাড়িতে পানি উঠেছে ৫ দিন আগে। খাবার নেই। সরকার থেকে কোনো সহযোগিতা পাইনি এখনো। অনেক কষ্ট হচ্ছে।'

জেলার ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিস সূত্রে জানা যায়, বন্যা কবলিত দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় ৯০টি পরিবার ও ইসলামপুর উপজেলার ১৫টি পরিবারের মাঝে ২৪ মেট্রিক টন চাল ও শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।

Comments