কাজী নজরুলের ‘লাঙল’ যেভাবে পাঠকপ্রিয় হয়

কাজী নজরুল ইসলামের সাহিত্যিক জীবন আমরা অনেকাংশে জানলেও সম্পাদক জীবন কম জানি। অথচ নজরুলের সম্পাদক-জীবন ও সাহিত্য-জীবনের বয়স প্রায় কাছাকাছি। যেমন তার প্রথম লেখা প্রকাশিত হয় ১৯১৮ সালে স‌ওগাতে। আর ১৯২২ সালের আগস্টে নজরুলের সম্পাদনায় প্রকাশিত অর্ধ-সাপ্তাহিক 'ধূমকেতু'। 'আনন্দময়ীর আগমনে' কবিতার কারণে গ্রেফতার হলে 'ধূমকেতু' পত্রিকার ইতি ঘটে। ১৯২৫ সালের ১ নভেম্বর কাজী নজরুল ইসলাম, শামসুদ্দীন হোসায়ন, হেমন্তকুমার সরকার ও কুতুব উদ্দীন আহমদ প্রমুখ মিলে 'শ্রমিক-প্রজা-স্বরাজ সম্প্রদায়' গঠন করেন।

সংগঠনের মুখপত্র হিসেবে ১৬ ডিসেম্বর ১৯২৫ সালে প্রকাশিত হয় 'লাঙল' পত্রিকা। যার 'নগদ মূল্য এক আনা'। এর প্রধান পরিচালক ছিলেন কাজী নজরুল ইসলাম। সম্পাদক ছিলেন শ্রীমণিভূষণ মুখোপাধ্যায়। সম্পাদক হিসেবে তার নাম থাকলেও, সব কাজ করতে হতো নজরুলকেই।

প্রসঙ্গে মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীনের লেখা: "লাঙল পরিচালনাকালে হুগলি থেকে কলকাতায় এসে অফিস করার দুর্ভোগ পোহানো ছাড়া নজরুলের বিশেষ কোনো আর্থিক লাভ হয়নি। বরং একটা আদর্শগত অনুভূতির তাড়নায় নিদারুণ অর্থকষ্টের মধ্যে থেকেও তিনি 'লাঙল' পরিচালনা করতেন। অনেক সময় 'লাঙল' অফিসে যাতায়াতের খরচ‌ও তাঁর কাছে থাকতো না।" ১৯২৬ সালের ১৫ এপ্রিলে শেষ সংখ্যা প্রকাশের মাধ্যমে পত্রিকাটি বন্ধ হয়ে যায়। 'লাঙল'র মোট ১৫টি সংখ্যা প্রকাশিত হয়। এখন আমরা এই পত্রিকার বিভিন্ন বিষয়ে আলোকপাত করবো।

নজরুলের উপস্থিতি

পত্রিকাটির গায়ে লেখা থাকতো— 'প্রধান পরিচালক নজরুল ইস্‌লাম'। প্রথম সংখ্যার প্রধান আকর্ষণ ছিল নজরুলের সাম্যবাদী কাব্যগ্রন্থের কবিতাগুলো। প্রথম পৃষ্ঠার মাঝখানে বড় করে লেখা ছিল — "এই সংখ্যার লাঙলের সর্ব্ব প্রধান সম্পদ কবি নজরুল ইসলামের কবিতা সাম্যবাদী"। ১৬ পৃষ্ঠার পত্রিকায় ৮ পৃষ্ঠাজুড়ে ছিল নজরুলের সাম্যবাদী কাব্যগ্রন্থের সবগুলো কবিতা। এর কারণে পত্রিকার ৫ হাজার কপি দ্রুত শেষ হয়ে যায়। দ্বিতীয় সংখ্যায় লেখা হয়: "গতবার আমরা ৫ হাজার 'লাঙল' ছেপেছিলাম—কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সমস্ত কাগজ ফুরিয়ে যাওয়াতে কলিকাতায় অনেকে কাগজ পান নি এবং মফস্বলে একবারেই কাগজ পাঠানো হয় নি। ঐ সংখ্যার প্রধান সম্পদ কবি নজরুলের 'সাম্যবাদী' গ্রাহকগণের আগ্রহাতিশয্যে পুস্তিকাকারে বের করা হ'ল, দাম করা হয়েছে মাত্র দু'আনা।"

দ্বিতীয় সংখ্যার চতুর্থ পৃষ্ঠায় নজরুলের 'কৃষাণের গান' কবিতা  প্রকাশিত হয়। প্রথম সংখ্যার মতো তৃতীয় সংখ্যার মাঝখানেও বর্ডার লাইন টেনে লেখা ছিল— "এই সংখ্যায় কবি নজরুল ইসলামের সব্যসাচী"। বোঝাই যাচ্ছে, নজরুলের সমকালীন জনপ্রিয়তাকে কিভাবে ব্যবহার করা হয়েছে এই পত্রিকা প্রতিষ্ঠার পেছনে।

এই সংখ্যার ১১ পৃষ্ঠায় লেখা হয়: "কবি নজরুল ইসলাম এখন অসুস্থ। তাঁর শরীরটা একটু সারলেই তিনি কাউন্সিলের প্রজাদলের সম্পাদক শ্রীযুত হেমন্তকুমার সরকারের সহযোগে প্রজা আন্দোলন উপলক্ষে মফস্বলে ঘুরবেন। যাঁরা তাঁদের চান, অনুগ্রহ করে এখন‌ই পত্র দিবেন।" তৃতীয় সংখ্যা প্রকাশের পর নজরুলকে উপলক্ষে করে কলকাতার ঐতিহাসিক এলবার্ট হলে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিলো। কিন্তু নজরুলের অসুস্থতার কারণে সে অনুষ্ঠান বন্ধ করতে হয়। এই ব্যাপারে 'লাঙল'র চতুর্থ সংখ্যার প্রথম পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে: "কাজি সাহেবের বিশেষ অসুস্থতার জন্য এলবার্ট হলে 'ভ্যারাইটি এনটারটেন্‌মেন্ট্' আপাতত স্থগিত রাখিতে হইল। যাঁহারা টিকিট কিনিয়াছেন, অনুগ্রহপূর্ব্বক বিক্রেতাগণের নিকট জমা দিলেই টাকা ফেরৎ পাইবেন।" 

পঞ্চম সংখ্যায় নজরুলের একটি পত্র প্রকাশিত হয়, যে পত্রটি তিনি ময়মনসিংহের জেলা কৃষক সম্মেলনে অসুস্থতার কারণে অংশগ্রহণ করতে না পেরে সম্মেলন কর্তৃপক্ষের প্রতি এই পত্রিকা মারফত প্রেরণ করেছিলেন। সপ্তম সংখ্যার প্রথম তিন পৃষ্ঠাজুড়ে নজরুলের 'অশ্বিনীকুমার' কবিতাটি ছাপা হয়। অষ্টম সংখ্যায় নজরুলের কোনো লেখা প্রকাশিত হয়নি। নবম সংখ্যায় প্রকাশিত হয় 'শ্রমিকের গান'। দশম ও একাদশ সংখ্যা বাদ দিয়ে দ্বাদশ সংখ্যায় ছাপা হয় নজরুলের 'জেলেদের গান' কবিতা। ত্রয়োদশ সংখ্যা বাদ দিয়ে চতুর্দশ সংখ্যায় প্রকাশিত হয় 'সর্ব্বহারা'। পঞ্চদশ অর্থাৎ শেষ সংখ্যায় নজরুলের কোনো লেখা প্রকাশিত হয়নি।

প্রতিটি সংখ্যার শেষ পৃষ্ঠায় নজরুলের বিভিন্ন কাব্যগ্রন্থের বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়েছে। পত্রিকা চলাকালীন নজরুলের যে কাব্যগ্রন্থগুলো প্রকাশিত হয়েছে সবগুলোর আগাম খবর ছাপা হতো।

লেখার বিষয়বস্তু 

পত্রিকাটি যেহেতু 'শ্রমিক-প্রজা-স্বরাজ সম্প্রদায়ের মুখপত্র' ছিল সেহেতু বলার অপেক্ষা রাখে না যে, এখানে সাম্যবাদী ও বিপ্লবীদের বিষয়‌ই প্রধান ভূমিকায় থাকবে। প্রথম সংখ্যার দুইটি লেখার শিরোনাম দেখে আমরা কিছুটা আঁচ করতে পারবো। ১১ পৃষ্ঠায় 'ভারতীয় জাতীয় মহাসমিতির শ্রমিক-প্রজা-স্বরাজ সম্প্রদায় উদ্দেশ্য ও নিয়মাবলী' এবং ১৪ পৃষ্ঠায় 'মনিব ও কর্ম্মচারী বিদেশী কোম্পানীর নির্ম্মম ব্যবস্থা'।

পত্রিকার প্রথম থেকে অষ্টম সংখ্যা পর্যন্ত হেডিংয়ের ডান পাশে লেখা থাকতো:
"লাঙলে কি কি থাকিবে?
১. বিদ্রোহী কবি নজরুল ইসলামের কবিতা
২. ম্যাক্সিম গর্কীর জগৎবিখ্যাত রোমাঞ্চকর উপন্যাস 'মা'র ধারাবাহিক অনুবাদ।
৩. কাল মার্কসের জীবনী
৪. প্রজাস্বত্ত্ব আইনের ধারাবাহিক আলোচনা
৫. গণ-আন্দোলন সম্বন্ধীয় পুস্তকের আলোচনা ও সঙ্কলন।
৬. প্রতি সংখ্যায় একখানি করিয়া ছবি।"

নজরুলের কোন কোন কবিতা কোন কোন সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছে সেসব আমরা ইতোমধ্যে উল্লেখ করেছি। ম্যাক্সিম গর্কীর মা উপন্যাস ধারাবাহিকভাবে অনুবাদের দায়িত্ব নিয়েছিলেন নৃপেন্দ্রকৃষ্ণ চট্টোপাধ্যায়। ধারণা করা যায়, তার মাধ্যমেই সর্বপ্রথম 'লাঙল' পত্রিকা মারফত বাংলা ভাষায় প্রথমবারের মতো অনুদিত হয়েছিল 'মা' উপন্যাস। প্রকাশিত হয়েছিল কিন্তু ধারাবাহিকভাবে নয়, মাঝখানে ছেদ পড়েছিল। দ্বিতীয় সংখ্যা থেকে চতুর্থ, পঞ্চম বাদ দিয়ে ষষ্ঠ ও সপ্তম, অষ্টম থেকে দশম সংখ্যায় বাদ দিয়ে একাদশ থেকে ধারাবাহিকভাবে চতুর্দশ সংখ্যায়—ভেঙে ভেঙে মোট ৯ কিস্তি অনুবাদ প্রকাশিত হয়েছে। পত্রিকা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সেবারের মতো অনুবাদটি অসম্পূর্ণ‌ই রয়ে যায়।

কার্ল মার্কসের জীবনী প্রকাশিত হয় দ্বিতীয় সংখ্যায়, লিখেছেন দেবব্রত বসু। পরবর্তী সংখ্যা থেকে তিনি ধারাবাহিকভাবে পাঁচ কিস্তিতে লিখেছেন বিরাট কলেবরের প্রবন্ধ, 'লেনিন ও সোভিয়েট রুষিয়া'। সপ্তম সংখ্যায় 'কার্ল মার্কসের শিক্ষা' নামক একটি লেখা ইংরেজি থেকে তরজমা করেছেন কুতুবুদ্দীন আহ্‌মদ। ১৮৫৩ সালে নিউইয়র্কের ডেইলি ট্রিবিউন পত্রিকায় ইংরেজ শাসিত ভারতবর্ষের অবস্থা সম্পর্কে যে দুটি চিঠি লিখেছিলেন সে দুটি চিঠির অনুবাদ প্রকাশিত হয়েছে দ্বাদশ ও ত্রয়োদশ সংখ্যায়। অনুবাদকের নাম প্রকাশিত হয়নি; সম্পাদকের দফতর থেকেই হতে পারে। সুকুমার চক্রবর্তী ও সুরেশ বিশ্বাসের যৌথ অনুবাদে প্রকাশিত হয় 'চীনের নবজন্ম'— দুই কিস্তিতে।

পঞ্চম সংখ্যার 'লাঙল' পত্রিকা সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিন উপলক্ষে করেছিলো বিশেষ আয়োজন। এতে কবিতা লিখেছেন নরেন্দ্র দেব। সম্পাদকের দফতর থেকে তার সংক্ষিপ্ত জীবনী এবং সুভাষচন্দ্রের ৮টি চিঠির সংকলন প্রকাশিত হয়। পরবর্তী সংখ্যাতেও 'সুভাষচন্দ্রের বিলাতের পত্রাবলী' শিরোনামে ৪টি চিঠি প্রকাশিত হয়।

সমকালীন পরিপ্রেক্ষিত

কেবল যে শ্রমিক-প্রজা-স্বরাজ সম্প্রদায়ের খবর আর বিপ্লবী লেখার অনুবাদ দিয়েই 'লাঙল' চলতো তা নয়, বরং সমকালীন কলকাতার চিত্র‌ও তুলে ধরা হতো। সমকালের দুইটি চাঞ্চল্যকর ঘটনার বিবরণ প্রকাশিত হয়েছে লাঙলে।

স্যার আবদুর রহীম কলকাতার 'জমিয়তে উলামা-ই-হিন্দ্‌' এর সম্মেলনে বলেছিলেন, "বাংলা ভাষা যদি শিক্ষার বাহন হয় তাহলে বাঙালী মুসলমানের সর্ব্বনাশ হবে"। এই ঘটনা উল্লেখ করে 'লাঙল' পত্রিকায় মন্তব্য করা হয়েছে: "স্যার আবদুর রহীম নিজে সাম্প্রদায়িক বিষে জর্জ্জরিত হয়ে আছেন। সে বিষ তিনি বাঙলার সকল মুসলমানকে পান করাবার জন্যে ব্যতিব্যস্ত হয়ে উঠেছেন। মাতৃভাষার মধ্যবর্ত্তিতায় সকল প্রকারের উচ্চ শিক্ষা লাভ করা যে একমাত্র বিজ্ঞান সম্মত উপায় তাঁর মত উচ্চ শিক্ষিত লোক একথা খুব ভাল করেই জানেন। তা সত্ত্বেও তিনি যে এরূপ অদ্ভুত কথা বলেছেন তার মানে এই যে তিনি মুসলমানদের জন্য কানা গরুর পৃথক বাগান সৃষ্টি করতে চান।"

পত্রিকাটি গুরুত্ব সহকারে ত্রয়োদশ সংখ্যার ১৪ পৃষ্ঠায় 'বিবিধ প্রসঙ্গ' শিরোনামে স্যার আবদুর রহীমের সংবাদটি প্রকাশ করে এবং কড়া ভাষায় প্রতিবাদ করে। কিছুদিনের মধ্যেই মিসেস্ এম. রহমান— নজরুল যাকে মা ডেকেছেন— তিনি আবদুর রহীমের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে লাঙলে প্রকাশের জন্য একটি পত্র পাঠান। পঞ্চদশ সংখ্যার ৭ পৃষ্ঠায় এই প্রতিবাদপত্র ছাপা হয়। সেই প্রতিবাদপত্রের একাংশে মিসেম এম. রহমান লিখেছেন: "আজ বাঙালী রহীম সাহেব বাঙলা ভাষার মূলোচ্ছেদ বা মাতৃজিহবা কর্ত্তনে বদ্ধ পরিকর হ‌ইয়াছেন! বিজ্ঞানের আকর দেশসমূহে যাহা সম্ভবপর হয় নাই, হ‌ইবার নহে, বাঙলায় তাহার সূচনা কাহার অভিশাপে! শিক্ষার বূ-কাষ্ঠে বাঙালী না হয় মাতৃভাষা বলি দেবে কিন্তু মা বোনরা কোন ভাষায় পুত্র ভ্রাতাদের সহিত বাক্যালাপ করিবে, উর্দ্দু ফার্সীতে? তাহা হইলে পুরুষদের ভাষা পরিবর্ত্তনের প্রারম্ভে নারীদের জন্য প্রতি গ্রামে উচ্চ স্কুলের প্রতিষ্ঠা অত্যাবশ্যকীয়, অন্তত: কুমারীদিগকে ইরাণী, ইস্পাহানী গড়িয়া তুলিবার জন্য।"

১৯২৫ সালে কলকাতায় হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে দাঙ্গা শুরু হয়। ২০শে চৈত্র, ১৩৩২ তারিখে বের হ‌ওয়া চতুর্দশ সংখ্যায় 'কলিকাতায় দাঙ্গা' শিরোনামে খবর প্রকাশিত হয়। খবরের একাংশে লেখা হয়: "এবারকার দাঙ্গার একটা বৈশিষ্ট্য এই হয়েছে যে হিন্দু-মুসলমান উভয় সম্প্রদায়‌ই পরস্পরের মন্দির ও মসজিদ কোথাও ধ্বংস করেছে এবং কোথাও বা ধ্বংস করার চেষ্টা করেছে। জাকারিয়া স্ট্রীটে যে মন্দিরটি ছিল সেটি মুসলমানরা নষ্ট করে দিয়েছে। আরও অন্যান্য অনেক মন্দির তারা আক্রমণ করতে চেষ্টা করে ব্যর্থ মনোরথ হয়েছে। হিন্দুরা কয়েকটি মসজিদে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল। হাওড়া পুলের নিকটবর্ত্তী জুম্মাশার দরগা ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। বানারসী ঘোষ স্ট্রীট অঞ্চলেও একটি দরগা ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।" বিবরণ আরও লম্বা, আমরা একাংশ তুলে ধরলাম। এই দাঙ্গার প্রভাবে লাঙলের পরবর্তী সংখ্যায় মুজফ্‌ফর আহ্‌মদ লিখেছেন 'ধর্ম্ম ও রাষ্ট্র' প্রবন্ধ ; সৌম্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছেন 'ধর্ম্ম রক্ষায় হিন্দু-মুসলমান'। 'বিবাদ' নামে মুজফ্ফর আহ্‌মদ দাঙ্গার ভয়াবহতা নিয়ে লিখেছেন আরও একটি লেখা। সম্পাদকের দফতর থেকে লেখা হয়েছে 'ধর্ম্ম বিভীষিকা'। সবচেয়ে চমকপ্রদ তথ্য পাওয়া যায় একটি সংবাদে।

চতুর্দশ সংখ্যায় একটি সংবাদ প্রকাশ হয়: "শ্রীযুক্ত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাড়ীতেও প্রায় ৫০ জন মুসলমান আশ্রয় নিয়েছিল। এজন্য অ-বাঙালী হিন্দুগণ ঠাকুর বাড়ী ঘেরাও করেছিল। তারা বলছিল যে মুসলমানদের তাদের হাতে ছেড়ে না দিলে তারা ঠাকুর বাড়ীতে আগুন ধরিয়ে দেবে। পুলিশের নিকটে ফোন করাতে কনস্টেবল ও গোরা পল্টন যখন আসে তখন এ সকল লোক পালিয়ে যায়। আশ্রিত মুসলমানদিগকে পুলিশের হেফাজতে লালবাজার পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।" দাঙ্গার বিভীষিকাময় মুহূর্তে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাড়িতে মুসলমানরা যে আশ্রয় পেয়েছিল এবং তাদেরকে নিরাপদ জায়গায় পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে এ তথ্য চমকপ্রদ তো অবশ্যই, দুর্লভ‌ও। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে কেউ কেউ মুসলিমবিদ্বেষী প্রমাণের অপচেষ্টায় তথ্যটি বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারে!

এমন বহু দুর্লভ তথ্য আবিষ্কার করা যেতে পারে প্রায় শতবর্ষী 'লাঙল' পত্রিকা গবেষণা করে, যা আমাদেরকে দিতে পারে বহু নতুন পথের সন্ধান... 

Comments

The Daily Star  | English

Time to build the country after overcoming dictatorship: Tarique

Highlights need to build skilled generations across all sectors

1h ago