পেঁয়াজ পাতা কেন খাবেন
শীতকালীন সবজি হিসেবে ফুলকপি, বাঁধাকপির মতো পেঁয়াজ পাতা খুবই জনপ্রিয়। এটি পেঁয়াজ কলি হিসেবেও পরিচিত।
পেঁয়াজ পাতার উপকারিতা সম্পর্কে জানিয়েছেন পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ নিশাত শারমিন নিশি।
পেঁয়াজ পাতা বা পেঁয়াজ কলির পুষ্টিগুণ
পুষ্টিবিদ নিশাত শারমিন বলেন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ একটি সবজি পেঁয়াজ পাতা। ভিটামিন সি, ভিটামিন বি, থায়ামিন, সালফারসহ খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ভিটামিন হলো ভিটামিন কে। সাধারণত ভিটামিন কে এর ভালো উৎস হিসেবে গরুর কলিজার কথা মাথায় আসলেও শীতকালে বিভিন্ন সবজির পাশাপাশি পেঁয়াজ পাতা খাদ্যতালিকায় রাখা যেতে পারে এই ভিটামিনের উৎস হিসেবে। এ ছাড়া পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাসসহ ডায়েটারি ফাইবার পাওয়া যায় পেঁয়াজ পাতায়।
পেঁয়াজ পাতার উপকারিতা
১.পেঁয়াজ পাতা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এর স্বাস্থ্যগত উপকারিতাও অনেক। যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের জন্য পেঁয়াজপাতা যথেষ্ট উপকারী। এটি রক্তের বাড়তি সুগার নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
২. শীতকালে অনেকেরই খাবারের প্রতি রুচি কমে যায়। সেক্ষেত্রে রুচিবর্ধক হিসেবে কাজ করে পেঁয়াজ পাতা দিয়ে তৈরি বিভিন্ন খাবার।
৩. শীতকালে অনেকের খুসখুসে কাশি হয়, অল্পতেই সর্দি কাশি, গলা ব্যথার প্রবণতা থাকে। অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ পেঁয়াজপাতা এই ধরনের সাধারণ ঠান্ডা উপশমে সাহায্য করে।
৪.ব্যাক্টেরিয়াল সংক্রমণ দূর করার জন্য প্রতিরোধক হিসেবে বিভিন্ন উপাদান রয়েছে পেঁয়াজ পাতায়। ইমিউনিটি বুস্টার হিসেবে, রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে মজবুত করতে পেঁয়াজ পাতা খুবই উপকারী।
৫. পেঁয়াজ পাতায় থাকা সালফার করোনারি হার্ট ডিজিজ বা হার্টের কোনো সমস্যা থাকে তাদের জন্য অত্যন্ত উপকারী। হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক পেঁয়াজ পাতা।
৬. কোষ্টকাঠিন্য, হজমজনিত সমস্যা, কোলনের কোনো সমস্যা যদি থাকে তাহলে খাদ্যতালিকায় পেঁয়াজ পাতা রাখা উপকারী। উচ্চ ফাইবারসমৃদ্ধ হওয়ায় এটি হজম প্রক্রিয়ায় সহায়ক হিসেবে কাজ করে।
৭. ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতেও কার্যকরী ভূমিকা পালন করে পেঁয়াজ পাতা।
সতর্কতা
অনেক বেশি পরিমাণে পেঁয়াজ পাতা সাধারণত কেউ খায় না। যেকোনো খাবার অতিরিক্ত পরিমাণে না খাওয়াই ভালো। কেউ যদি অতিরিক্ত পরিমাণে পেঁয়াজপাতা খেয়ে ফেলে তাহলে অ্যাসিডিটি, বদহজম হওয়ার ঝুঁকি থাকে। পেঁয়াজপাতা ফাইবার সমৃদ্ধ তাই অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে সেটি যদি শরীর থেকে সঠিকভাবে বের না হয় তাহলে সমস্যা তৈরি করে। অ্যাসিডিটি, বদহজমের কারণে বুকে ব্যথাসহ নানা সমস্যা হতে পারে।
এ ছাড়া পেঁয়াজ পাতায় যথেষ্ট পরিমাণে পটাশিয়াম থাকায় যাদের রক্তে বাড়তি পটাশিয়াম আছে তাদের পেঁয়াজ পাতা কম খাওয়া উচিত। প্রয়োজনে খাওয়া বাদ দেওয়াই ভালো।
ভিটামিন কে এর পরিমাণ অনেক বেশি থাকে পেঁয়াজ পাতায়। সেজন্য যাদের হার্টে ব্লক রয়েছে, ভিটামিন কে জাতীয় খাবারে বিধিনিষেধ আছে এমন রোগীদের খাদ্যতালিকায় পেঁয়াজ পাতা কম রাখাই শ্রেয়।
Comments