নির্বাচন হবে বাংলাদেশে, ভোট চাইছে দক্ষিণ আফ্রিকা গিয়ে: আমির খসরু

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষের প্রতিপক্ষ হয়ে কেউ জয়ী হতে পারেনি। আর জনগণের প্রতিপক্ষ হয়ে কেউ ক্ষমতায় থাকতে পারবে না।
নয়াপল্টনে বিএনপির কালো পতাকা মিছিলের আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য দিচ্ছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষের প্রতিপক্ষ হয়ে কেউ জয়ী হতে পারেনি। আর জনগণের প্রতিপক্ষ হয়ে কেউ ক্ষমতায় থাকতে পারবে না।

আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কালো পতাকা মিছিলের আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।

আমির খসরু বলেন, 'এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে বিদায় দিতে বাংলাদেশের মানুষ শপথ নিয়েছে, বাংলাদেশের মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ যখন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, কখনো তা থেকে পিছপা হয় না। স্বাধীনতা যুদ্ধে পিছপা হয়নি, ভাষা আন্দোলন হয়নি, স্বৈরাচার আন্দোলনে হয়নি।'

'বাংলাদেশের মানুষের প্রতিপক্ষ হয়ে কেউ জয়ী হতে পারেনি। তাই আমি বলব, বাংলাদেশের মানুষের প্রতিপক্ষ কেউ হবেন না। পুলিশ, র‍্যাব, আনসার, সরকারি কর্মকর্তা, বিচারক কেউ হবেন না,' যোগ করেন তিনি।

আমির খসরু বলেন, 'দক্ষিণ আফ্রিকা গিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। দলবল নিয়ে, পরিবার নিয়ে বাংলাদেশের জনগণের করের টাকা খরচ করে দক্ষিণ আফ্রিকা গিয়েছেন ব্রিকসের মেম্বার হবেন। হয়েছেন?'

তিনি বলেন, 'যে কাজে গিয়েছেন ওই কাজ তো হয়নি। সব জায়গা থেকে প্রত্যাখ্যাত হবেন। সবাই প্রত্যাখ্যান করবে অবৈধ এই সরকারকে। মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে ঘুরে গ্রহণযোগ্যতা পাবেন না।'

বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, 'আজ এই সমাবেশে আসার সময় একটা ছবি দেখলাম। দক্ষিণ আফ্রিকায় যারা গেছে ব্রিকসে, সবাই তো মেম্বার হয়নি, বাংলাদেশে হয়নি, অনেকে হয়নি। তবে সবাই মিলে একটা ছবি তুলেছেন। ওই ছবিতে সবাই আছে কিন্তু আমাদের প্রধানমন্ত্রী নেই।'

'উনার ছবি কার সঙ্গে? উনি আর উনার মেয়ে চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে। চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক মিটিং করার জন্য দক্ষিণ আফ্রিকা যেতে হবে কেন? তৃতীয় কোনো দেশে গিয়ে কেউ বাইলেটারেল মিটিং করে না।'

আমির খসরু বলেন, 'সেখানে (দক্ষিণ আফ্রিকায়) প্রবাসী বাংলাদেশিদের উদ্দেশে বক্তব্য রেখেছেন। ওই বক্তব্যে নৌকায় ভোট দিতে বলেছেন। আরে কোথায় যাইয়া কী কয়? ভোট হবে বাংলাদেশে, দক্ষিণ আফ্রিকা গিয়ে ভোট চাইছেন, অবস্থা বোঝেন।'

'আর কী করছেন? সেখানে বিএনপিকে গালি-গালাজ করছেন। এটা তো প্রতিদিন বাংলাদেশে করছেন। জনগণের করের টাকা খরচ করে দলবল নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা গিয়ে বিএনপিকে গালিগালাজ করার প্রয়োজন নাই,' বলেন আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

সরকার 'জঙ্গি নাটক' করছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, 'আওয়ামী লীগের মতো এতো বড় সন্ত্রাসী দল পৃথিবীর কোথাও পাবেন না। যারা রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে, পুলিশের একটি অংশকে ব্যবহার করে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি অংশকে ব্যবহার করে, বিচারকদের ব্যবহার করে দণ্ডিত করছে। এ রকম কোনো দেশে দেখবেন না। এদের মতো সন্ত্রাসীদের আর ক্ষমতায় থাকতে দেওয়া যাবে না।'

সরকারের পদত্যাগের একদফা দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে শুক্রবার বিকেলে রাজধানীতে 'কালো পতাকা গণমিছিল' করে বিএনপি।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আয়োজনে নয়াপল্টন থেকে রাজধানী মার্কেট এবং মহানগর উত্তর বিএনপির আয়োজনে শ্যামলী থেকে মোহাম্মদপুর বসিলা চৌরাস্তা পর্যন্ত দুটি পৃথক গণমিছিল হয়।

নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, 'দেশে ৩টা শিক্ষা রয়েছে। অশিক্ষা, কুশিক্ষা আর সুশিক্ষা। আজ জনগণের টাকায় বেতন নিয়ে কুশিক্ষিতরা বিরোধী নেতাকর্মীদের ওপর গুলি চালাচ্ছে। এই কুশিক্ষিতরা বিচারের প্রহসন করছেন, তারা জেলখানায় বিরোধী নেতাকর্মীদের পিটিয়ে হত্যা করছেন। এই কুশিক্ষিত লোকগুলো দেশকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তারা দেশকে ভালোবাসে না, টাকাকে, লুটকে ভালোবাসে।'

তিনি বলেন, 'ব্রিটিশ শাসকরা, পাকিস্তানিরা এদেশ থেকে যা লুট করেছে, এর চেয়ে বেশি লুট করেছে এই লুটেরা সরকার। এদের কাছে দেশপ্রেম বলে কিছু নেই।'

কালো পতাকা গণমিছিলে বিএনপির বরকত উল্লাহ বুলু, মোহাম্মদ শাহজাহান, মনিরুল হক চৌধুরী, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, আসাদুজ্জামান রিপন, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, ফজলুল হক মিলন, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, কামরুজ্জামান রতন, অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া, মীর সরাফত আলী সপু, আবদুল খালেক, মীর নেওয়াজ আলী, রফিকুল ইসলাম, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন প্রমুখ অংশ নেন।

Comments

The Daily Star  | English

An economic corridor that quietly fuels growth

At the turn of the millennium, travelling by road between Sylhet and Dhaka felt akin to a trek across rugged terrain. One would have to awkwardly traverse bumps along narrow and winding paths for upwards of 10 hours to make the trip either way.

13h ago