মিয়ানমারের জেট ফুয়েলে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিষেধাজ্ঞা
যুক্তরাষ্ট্র মিয়ানমারের সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে আরও বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। দেশটির জঙ্গিবিমানের জ্বালানি (জেট ফুয়েল) খাতের সঙ্গে জড়িত বা এতে সহায়তা দেওয়া বিদেশি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করে এই নিষেধাজ্ঞা অনুমোদন করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার বার্তাসংস্থা রয়টার্স যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগের বিবৃতির বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে।
মিয়ানমারের জান্তা জঙ্গিবিমান ব্যবহার করে নিজেদের দেশের মানুষের বিরুদ্ধে হামলা চালাচ্ছে। জেট ফুয়েল খাতের ওপর বিধিনিষেধ আরোপের এটাই মূল কারণ।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থানে ক্ষমতা দখলকারী সামরিক বাহিনীর জেট ফুয়েল কেনা ও বিতরণের সঙ্গে জড়িত ২ ব্যক্তি খিন ফিউ উইন ও জাও মিন তুন এবং তাদের সঙ্গে যুক্ত ৩ প্রতিষ্ঠানকে নতুন করে বিধিনিষেধের তালিকায় যুক্ত করেছে মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ।
ট্রেজারি বিভাগ জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন স্বাক্ষরিত এক নির্বাহী আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে এই বিধিনিষেধ আরোপ করা হচ্ছে।
মার্কিন সন্ত্রাসবাদ ও আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারি ব্রায়ান নেলসন এক বিবৃতিতে জানান, 'আমাদের হাতে বিধিনিষেধ আরোপের যে ক্ষমতা আছে, তার সম্প্রসারণের মাধ্যমে আমরা সামরিক জান্তার শাসন ব্যবস্থা পরিচালনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি বাড়তি খাতকে লক্ষ্যবস্তু হিসেবে নির্ধারণ করেছি। এই বিধিনিষেধের মাধ্যমে আমরা জান্তাকে সেসব সম্পদ থেকে আরও বেশি পরিমাণে বঞ্চিত করতে পারবো, যার ব্যবহারে তারা দেশের নাগরিকদের দমন করছে।'
ট্রেজারি বিভাগ মিয়ানমারের সাবেক নাম ব্যবহার করে আরও জানায়, মিয়ানমারের জান্তা 'ধারাবাহিকভাবে বার্মার মানুষকে সহিংস জঙ্গিবিমান হামলার মাধ্যমে দমন করছে। তারা এই প্রক্রিয়ার ওপর নির্ভর করতে শুরু করেছে।'
উল্লেখ্য, অং সান সু চি'র গণতান্ত্রিক সরকারকে ক্যুর মাধ্যমে উৎখাত করে সামরিক বাহিনী মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে। তারপর থেকে এখন পর্যন্ত ৩ হাজার ৯০০ জনেরও বেশি বেসামরিক ব্যক্তি প্রাণ হারিয়েছেন।
মিয়ানমারের সামরিক কর্মকর্তারা জানান, এ ধরনের বিধিনিষেধে তাদের ওপর তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না। তারা জানান, জঙ্গিবিমান হামলার লক্ষ্যবস্তু সন্ত্রাসীরা।
সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমের অন্যান্য দেশ জান্তার ক্ষমতা কমাতে বেশ কয়েক দফায় বিভিন্ন ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করেছে।
জুনে ওয়াশিংটন মিয়ানমারের ২টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এই ২ ব্যাংকের মাধ্যমে মিয়ানমা ওয়েল অ্যান্ড গ্যাস এন্টারপ্রাইজসহ আরও কিছু প্রতিষ্ঠান বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় করতো।
যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্য ছিল এই উদ্যোগের মাধ্যমে সামরিক জান্তার বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনের ওপর বাধা সৃষ্টি করা।
Comments