মরুভূমিতে খরস্রোতা নদী!

ছবি: আল আইন অ্যাডভেঞ্চার পার্ক

সংযুক্ত আরব আমিরাতের শহর আল আইন। খেজুর গাছ ও প্রাকৃতিক ঝরনার জন্য শহরটি গার্ডেন সিটি নামেও পরিচিত। শহরটি আবুধাবি আমিরাতের অংশ। এখানেই আবুধাবি কর্তৃপক্ষ অত্যন্ত ব্যয়বহুল একটি অ্যাডভেঞ্চার পার্ক তৈরি করেছে, যার ভেতরে একটি নদীও আছে। উত্তপ্ত মরুভূমির মাঝখানে তৈরি করা এই কৃত্রিম নদী সবাইকে চমকে দিয়েছে।

আল আইন অ্যাডভেঞ্চার পার্কটি তৈরি করতে খরচ হয়েছে ৫০ মিলিয়ন ডলার। আবুধাবির সিটি সেন্টার থেকে মাত্র দেড় ঘণ্টার দূরত্বে অবস্থিত এই অ্যাডভেঞ্চার পার্কটি। পার্কের খরস্রোতা নদীতে করা যাবে রাফটিং, কায়াকিং ও সার্ফিং। যেখানে কোনো প্রাকৃতিক নদী নেই এবং গ্রীষ্মে তাপমাত্রা ১২০ ডিগ্রি ফারেনহাইট (৪৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস) পর্যন্ত উঠে যায়, সেখানে এমন ঘটনা বেশ হইচই ফেলে দেওয়ার মতোই।

বিশ্বমানের ওয়াটারস্পোর্টস

সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রায় সবকিছুই কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হয়েছে। সমুদ্র সৈকত, বরফ এবং এমনকি বৃষ্টিও। আল আইন অ্যাডভেঞ্চার পার্কটিও একই পদ্ধতিতেই তৈরি করা হয়েছে।

পার্কটিতে বিশ্বমানের কায়াকিং ও রাফটিং অভিজ্ঞতা নেওয়া যায়। হোয়াইট ওয়াটার চ্যানেলগুলো ১.২ কিলোমিটার (০.৭৫ মাইল) জুড়ে বিস্তৃত, যা সব পর্যায়ের কায়াকার এবং রাফটারদের চ্যালেঞ্জিং অভিজ্ঞতা দেয়।

ছবি: আল আইন অ্যাডভেঞ্চার পার্ক

নদীটিতে পর্যটকদের চমৎকার অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করার জন্য কাজ করছেন রাজেন্দ্র শ্রেষ্ঠা। তিনি একজন অভিজ্ঞ ওয়াটারস্পোর্টস অনুরাগী। জীবনের বেশিরভাগ সময় রাফটিংয়েই কাটিয়ে দিয়েছেন। নেপাল, জাপান, ভারত ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিশ্ব রাফটিং প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন। ২ বার নেপাল জাতীয় দলের অধিনায়কের দায়িত্বও পালন করেছেন।২০১০ সালে আল আইন অ্যাডভেঞ্চার পার্কে যোগ দেন তিনি। এরপর থেকে পার্কের বিভিন্ন অনুষঙ্গের অভিজ্ঞতা উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন।

তিনি জানান, একই স্থানে একাধিক রোমাঞ্চকর খেলাধুলার অনন্য মিশ্রণই তার কাছে তার কাজের সবচেয়ে মজার দিক।

পেশাদারদের জন্য দারুণ জায়গা

আল আইন অ্যাডভেঞ্চার পার্কটি বিভিন্ন শাখায় দক্ষতা অর্জনের জন্য ক্রীড়া পেশাদারদের জন্য একটি কেন্দ্র হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন করেছে।

সারা বিশ্বের ক্রীড়াবিদ যেমন সার্ফিং চ্যাম্পিয়ন, রাফ্টার ও অলিম্পিক কায়াক দলগুলো এখানে প্রশিক্ষণ নিতে আসে। প্রতি বছর নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত ইউরোপ ও রাশিয়ার কায়াকাররা প্রশিক্ষণের জন্য এই পার্কটিতে আসেন।

ছবি: আল আইন অ্যাডভেঞ্চার পার্ক

পার্কটিতে অনুষ্ঠিত উল্লেখযোগ্য প্রতিযোগিতার মধ্যে রয়েছে ২০১৬ সালে আন্তর্জাতিক রাফটিং ফেডারেশন আয়োজিত বিশ্ব রাফটিং চ্যাম্পিয়নশিপ।

পানির উৎস কী

মরুভূমির মাঝখানে ওয়াটার পার্ক তৈরি করা ও যথাযথভাব রক্ষণাবেক্ষণ করা বেশ কঠিন কাজ এবং এ কাজটি অতি সতর্কতার সঙ্গে করা জরুরি।

পার্কটিতে কৃত্রিমভাবে তৈরি করা নদীর পানি সংগ্রহ করা হয় ৩০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত অন্য একটি স্থান থেকে। সমুদ্রের পানিকে মিঠা পানিতে রুপান্তর করে এই পার্কে ব্যবহার করা হয় এবং এই প্রক্রিয়ায় অনেকগুলো জটিল ধাপ অনুসরণ করতে হয়।

পার্কটির তথ্য অনুসারে, এটি যেকোনো সময় ১২.৪ মিলিয়ন গ্যালন পানি ব্যবহার করে। কোভিড-১৯ মহামারির কারণে ৩ বছরের বিরতির পর আল আইন অ্যাডভেঞ্চার পার্ক ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ফের চালু হয়।

তথ্যসূত্র: সিএনএন

 

Comments

The Daily Star  | English

Jubo Dal leader dies in custody after 'jt forces picked him up'

The body of Touhidul Islam, 42, bore marks of trauma and injuries from his waist to the knees, family members said, alleging that he was tortured to death

1h ago