ভারতে থেকেও হত্যা মামলার আসামি ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা

ভারতে থেকেও হত্যা মামলার আসামি ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা
ইসমাইল হোসেন বকুল ভুঁইয়া | ছবি: সংগৃহীত

পোশাক শ্রমিককে তুলে নিয়ে নির্যাতনের পরে হত্যার ২ সপ্তাহ আগে থেকে ভারতে অবস্থান করলেও ধানসোনা ইউনিয়ন যুবলীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ইসমাইল হোসেন বকুল ভুঁইয়াকে আসামি করে মামলা দায়ের হয়েছে।

কলকাতা ট্রানজিট দিয়ে বকুলের চেন্নাই যাওয়ার বোডিং পাসের কপি দ্য ডেইলি স্টারের হাতে এসেছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, গত ১৪ জুলাই তিনি ভারতে গেছেন এবং এখনো সেখানেই অবস্থান করছেন।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে ইসমাইল হোসেন বকুল মোবাইল ফোনে ডেইলি স্টারকে বলেন, 'স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য গত ১৪ জুলাই থেকে ভারতের চেন্নাই শহরে আছি। বিমানের বোডিং পাসসহ সব প্রমাণ আমার কাছে আছে। এই ঘটনার সঙ্গে আমি কোনোভাবেই জড়িত না। কীভাবে আমার বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ তোলা হলো তা আমার বোধগম্য নয়। আমিও চাই হত্যায় জড়িতদের শাস্তি হোক। সেই সঙ্গে চাই আমাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হোক।'

গত ৩১ জুলাই হত্যার শিকার হন পোশাক শ্রমিক রবিউল ইসলাম (৩০)। ওই ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় বকুলকে ৭ নম্বর আসামি করা হয়েছে।

মামলার নথি অনুসারে, গত ৩১ জুলাই দক্ষিণ বাইপাল এলাকায় রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে নির্যাতনের পর রবিউলকে জীবিত অবস্থায় বস্তায় ভরে ধামরাইয়ের ভারারিয়া এলাকার একটি পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়।

পরবর্তীতে হাসপাতালে নেওয়ার পথে রবিউলের মৃত্যু হয়। ওই রাতেই ধামরাই থানায় ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন রবিউলের বোন ফারজানা আক্তার ঝিলিক।

বকুল ছাড়াও তার বাবা, চাচা ও চাচাতো ভাইকে আসামি করা হয়েছে মামলায়।

অভিযোগ উঠেছে, পূর্ব শত্রুতার জেরে রবিউল হত্যার শিকার হয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বকুল বলেন, 'গত ২৭ জুন রবিউল ও সোহাগ মুন্সী আমার চাচাতো ২ ভাইকে কুপিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করেছিল। সে সময় আমি দেশেই ছিলাম। ওই ঘটনার পরে একটি মামলা হয়, যার ২ নম্বর আসামি ছিল রবিউল। গতকাল জানতে পারি রবিউলকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।'

ঝিলিক ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমার ভাইকে রাস্তা থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে। পিটিয়েই তারা ক্ষান্ত হয়নি, জীবিত অবস্থায় বস্তাবন্দি করে ধামরাইয়ের পুকুরে ফেলতে চেয়েছিল। এমন জঘন্য অপরাধের সঙ্গে তাদের (বকুলের) পুরো পরিবার, আত্মীয়-স্বজন জড়িত।'

ভারতে থেকে বকুল কীভাবে হত্যায় জড়িত হবেন জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, 'আমার ভাই মারা গেছে। তাদের পরিবারের সদস্যরা আমার ভাইকে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে। এই হত্যায় জড়িতদের পুলিশ আটক করে আইনের আওতায় আনবে।'

এ ব্যাপারে আশুলিয়া থানা ইউনিট যুবলীগের আহ্বায়ক কবির হোসেন সরকার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বকুল ভূঁইয়া ধামসোনা ইউনিয়ন যুবলীগের সহসভাপতি এবং ভালো ছেলে। স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য অনেক দিন যাবৎ ভারতে অবস্থান করছে। ভারতে যাওয়ার আগে আমার সঙ্গে দেখা করে গেছে। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ছেলেটাকে হত্যা মামলার আসামি করা হয়েছে। এটা মোটেও ঠিক হয়নি।'

জানতে চাইলে ধামরাই থানার পরিদর্শক (ওসি) হারুন-অর রশিদ বলেন, 'বাদী যাদের যাদের নাম মামলায় উল্লেখ করেছেন, তাদের আসামি করা হয়েছে। কেউ যদি ঘটনার দিন ইন্ডিয়ায় থাকেন আর যথাযথ প্রমাণ দেখাতে পারেন তাহলে চার্জশিটে তার নাম বাদ পড়বে। কাউকে অযথা হয়রানি করা হবে না।'

মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা ধামরাই থানার পরিদর্শক (অপারেশন) নির্মল কুমার দাস বলেন, 'রবিউল হত্যা মামলায় ইতোমধ্যে ৫ আাসমিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলার ১১ নম্বর আসামি সুমন হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। বাকি ৪ আসামি ৩ দিনের রিমান্ডে আছেন।'

Comments

The Daily Star  | English
compensation for uprising martyrs families

Each martyr family to get Tk 30 lakh: Prof Yunus

Vows to rehabilitate them; govt to bear all expenses of uprising injured

3h ago