ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে পোশাক শ্রমিকদের অবরোধ, ১৫ কারখানায় ছুটি ঘোষণা

বকেয়া বেতনের দাবিতে ও শ্রমিকদের মারধরের প্রতিবাদে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন দুটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। অবরোধে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে সড়কের উভয়পাশে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে মহানগরীর বাসন এলাকার কেমিও ইউএসএ নিটওয়্যার লিমিটেড কারখানা ও মৌচাক এলাকায় গ্লোবাল অ্যাপারেলস কারখানার শ্রমিকরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করেন।
শ্রমিকরা জানান, প্রতি মাসের ১০ তারিখের মধ্যে তাদের বেতনসহ অন্যান্য পাওনা পরিশোধের কথা থাকে। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রতি মাসেই বেতন নিয়ে টালবাহানা করে। কোনো মাসে সঠিক সময়ে বেতন দিতে পারে না। সোমবার ফেব্রুয়ারি মাসের বকেয়া বেতন দেওয়ার কথা ছিল। ওইদিন আমরা সকাল ৭টায় কারখানায় প্রবেশ করে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত কাজ করি। পরে ৩টার মধ্যে বকেয়া পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে কারখানার সব কর্মকর্তা পালিয়ে যান।
তারা জানান, এরপর বিকেল ৪টার দিকে বহিরাগতরা এসে শ্রমিকদের মারধর করে। এতে অন্তত পাঁচ থেকে সাত শ্রমিক আহত হন। এ ঘটনার প্রতিবাদে আজ সড়ক অবরোধ করেছি।
এ বিষয়ে জানতে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও সম্ভব হয়নি।
জানতে চাইলে গাজীপুরের জয়দেবপুর ফায়ার স্টেশনের ইনচার্জ আব্দুস সামাদ বলেন, গাজীপুর মহানগরীর ভোগড়া এলাকায় একটি পোশাক কারখানা সামনে আগুন দিয়েছে শ্রমিকরা। ভোগড়া ফায়ার সার্ভিসের দমকল বাহিনী ঘটনাস্থলে যাওয়ায় চেষ্টা করছে।

বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কায়সার আহমেদ বলেন, 'জিএমপি, শিল্প পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলছেন। তারা শ্রমিকদের বুঝিয়ে মহাসড়ক থেকে সরানোর চেষ্টা করছেন।
এদিকে, কালিয়াকৈরে এক শ্রমিককে মারধরের প্রতিবাদ ও পোশাক কারখানা খোলার দাবিতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন গ্লোবাল অ্যাপারেলস কারখানার শ্রমিকরা।
আজ সকাল ৮টায় শ্রমিকরা মহাসড়কের মৌচাক এলাকায় অবস্থান নেন। তারা মিছিল নিয়ে বিভিন্ন কারখানার গেটে গেলে আশপাশের সাদমা, কোকোলা, মন্ট্রিমস, লিভাসসহ ১৫টি কারখানা ছুটি ঘোষণা করেন কর্তৃপক্ষ।
শ্রমিকদের দাবি, গত শনিবার মৌচাকের গ্লোবাল অ্যাপারেলস কারখানায় বিভিন্ন দাবি নিয়ে কয়েকজন শ্রমিকের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এর জেরে কারখানার ভেতর আন্দোলন শুরু করেন শ্রমিকরা। বিষয়টি পরে মীমাংসা হলেও এখনো কারখানা বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ। তাই ওই ঘটনার প্রতিবাদ ও কারখানা খোলার দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করেছেন।
তবে শ্রমিকদের ওপর হামলার বিষয়ে জানতে গ্লোবাল অ্যাপারেলস কারখানার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রোজিবুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
কালিয়াকৈর জোনের শিল্প পুলিশের পরিদর্শক মোহাম্মদ আজাদ মিয়া বলেন, 'শ্রমিকদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে। বিভিন্ন স্থানে থানা-পুলিশের পাশাপাশি শিল্প পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।'
Comments