ডাক্তার রোগী মুখোমুখি হয় কেন?
রাজধানীর সেন্ট্রাল হাসপাতালে সি-সেকশন সার্জারির সময় নবজাতক ও পরবর্তীতে মায়ের মৃত্যুর ঘটনায় দুই চিকিৎসককে গ্রেপ্তারের ইস্যুতে বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চিকিৎসকদের ধর্মঘটে রোগীদের দুর্ভোগ এবং এরকম পরিস্থিতিতে ওই দুই চিকিৎসকের জামিন নিয়ে সারা দেশে যে তোলপাড় হলো, তার রেশ না কাটতেই এবার আলোচনায় রাজধানীর মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।
গণমাধ্যমের খবর বলছে, ডেঙ্গু আক্রান্ত ৭ বছরের এক শিশুর ভর্তি ও চিকিৎসা নিয়ে চিকিৎসকের সঙ্গে ওই শিশুর বাবার মারামারি হয়। এ ঘটনায় শিশুর বাবা হাবিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে মুগদা থানা পুলিশ। অবশ্য পরদিন বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) তাকে জামিন দেন আদালত।
চিকিৎসকদের সঙ্গে রোগীর স্বজনদের এই সংঘাত নতুন কিছু নয়। বিশেষ করে কথিত ভুল চিকিৎসার অভিযোগ তুলে হাসপাতালে ভাঙচুর চালানো কিংবা চিকিৎসদের মারধর এবং তার প্রতিবাদে চিকিৎসকদের কর্মবিরতির খবর প্রায়ই গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়। অথচ ডাক্তার-রোগীর সম্পর্ক হওয়ার কথা ছিল বিশ্বাস ও আস্থার, মানবিক এবং সহযোগিতামূলক। কিন্তু কেন সেটি হচ্ছে না এবং কেন মাঝেমধ্যেই এই ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি তৈরি হয়? সারা দেশে রোগীর তুলনায় ডাক্তার সংকট নাকি চিকিৎসক ও চিকিৎসাব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থার সংকট—কোনটি বড়?
বাস্তবতা হলো, দেশের অধিকাংশ জেলা উপজেলাতেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মারাত্মক সংকট। ঢাকায় এবং এর আশপাশের জেলায় এ সমস্যা কিছুটা কম হলেও অন্যান্য অঞ্চলে এই সমস্যা প্রকট। বিশেষ করে গ্রাম এলাকায়। আবার অনেক বড় হাসপাতাল, এমনকি মেডিকেল কলেজ থেকেও কাঙ্ক্ষিত সেবা না পেয়ে রাজধানীতে বিএসএমএমইউ, ঢাকা মেডিকেল, পঙ্গু হাসপাতাল, বারডেমসহ অন্যান্য সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা মানুষের সংখ্যা অগণিত।
প্রশ্ন হলো, জেলা পর্যায়ের হাসপাতালে এমনকি মেডিকেল কলেজগুলো থেকে খুব জটিল রোগ ছাড়া সাধারণ অসুখ কিংবা একটু বড় অস্ত্রোপচারের জন্যও কেন মানুষকে ঢাকায় আসতে হবে? উত্তর একটাই: জনবল সংকট। তার উপর নানা কারণে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের গ্রাম এমনকি জেলা উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালে যেতে অনীহাও একটি বড় কারণ বলে মনে করা হয়। হাসপাতালগুলোয় সরঞ্জামাদির অভাব তো রয়েছেই।
স্মরণ করা যেতে পারে, ২০২১ সালে করোনার অতিমারির সময় জনবল সংকটে ঢাকা মহানগর জেনারেল হাসপাতাল বন্ধ হয়ে যায়। অথচ ওই হাসপাতালে করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হতো। একই কারণে তখন রাজধানীর লালকুঠি হাসপাতালের চিকিৎসাসেবাও বন্ধ হয়ে যায়। প্রশ্ন হলো, ১৭ কোটি লোকের দেশে জনবল সংকটের কারণে হাসপাতাল বন্ধ হয়ে যাবে কেন?
অধিকাংশ সরকারি হাসপাতালেই যন্ত্রপাতি থাকলেও সেগুলো পরিচালনার মতো টেকনিশিয়ান নেই। সংশ্লিষ্ট জনবলের অভাবে বিকল হয়ে আছে অনেক যন্ত্রপাতি। এ ছাড়া ছুটির দিনে বন্ধ থাকে বহির্বিভাগ ও প্যাথলজি। বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় ছুটির দিন হাসপাতালের বহির্বিভাগ বন্ধ থাকায় রোগীদের পড়তে হয় সমস্যায়।
জেলা শহরের হাসপাতালগুলোয় সেবা না পাওয়ায় মানুষের চাপ বাড়ে রাজধানীর হাসপাতালে। রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া রোগীদের অন্তত অর্ধেক হয় দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে রেফার্ড হয়ে আসা, না হয় সেখানে সেবা না পেয়ে বাধ্য হয়ে আসা। কয়েক বছর ধরেই অসংক্রামক রোগের মধ্যে ক্যানসারে মৃত্যুর হার উদ্বেগজনক। কিন্তু জেলা সদরের হাসপাতালগুলোতে ক্যানসার চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই।
করোনার সময় যখন সারা দেশের হাসপাতালগুলোয় চিকিৎসক নার্স ও অন্যান্য লোকবল সংকটের খবর গণমাধ্যমে আসতে থাকে তখন বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) পক্ষ থেকে জানানো হয়, দেশে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে ৭৫ হাজার চিকিৎসক ও ৩২ হাজারের মতো নার্স রয়েছেন। ১৭ কোটি জনসংখ্যার এই দেশে ২ হাজার ২৬৭ জনের জন্য রয়েছেন একজন চিকিৎসক। ৫ হাজার ৩১৩ জনের স্বাস্থ্যসেবার দায়িত্বে রয়েছেন একজন মাত্র নার্স। এটি একটি অস্বাভাবিক অনুপাত। কেননা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, একটি দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় একজন চিকিৎসকের সঙ্গে তিন জন নার্স ও পাঁচ জন টেকনিশিয়ান থাকা উচিত। প্রতি ১০ হাজার মানুষের জন্য ২৩ জন চিকিৎসক থাকা দরকার। এই যখন পরিস্থিতি তখন ডাক্তার-রোগীর সম্পর্ক মধুর হবে কী করে?
একজন সরকারি হাসপাতালের ডাক্তারকে যদি ঘণ্টায় ৩০ জন বা তারও বেশি রোগী দেখতে হয়, তিনি রোগীর সঙ্গে কথা বলবেন কী করে, তার রোগ বা সমস্যাটা বুঝবেন কী করে আর তাকে পরামর্শই বা কী দেবেন?
দ্বিতীয়ত, জনবল সংকটের কারণে যে চিকিৎসককে কাঙ্ক্ষিত মাত্রার তিন থেকে চার গুণ রোগী দেখতে হয়- তার শরীর, বিশেষ করে মস্তিষ্কের ওপর যে চাপ পড়ে, তাতে তার নিজের সুস্থ থাকাটাই বরং বিরাট চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়।
বিশেষ করে ডেঙ্গুর মতো পরিস্থিতি যখন ভয়াবহ আকার ধারণ করে এবং হাসপাতালের একটি বেডও ফাঁকা থাকা দূরে থাক, মেঝেতে শুইয়ে রোগীদের চিকিৎসা দিতে হয়; যখন রোগীদের প্লাটিলেট দ্রুত কমতে থাকে; যখন ডাক্তারদের চোখের সামনে একের পর এক রোগীর অবস্থা খারাপ হতে থাকে এবং মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে থাকে—তখন চিকিৎসক হিসেবে তার ভেতরেও একধরনের হতাশা তৈরি হতে পারে।
তিনি নিজেও বিদ্যমান সিস্টেমের দুর্বলতা এবং সীমাবদ্ধতার কারণে অসহায় বোধ করতে পারেন। এই অসহায়বোধজনিত কারণে তিনি ভেতরে ভেতরে যন্ত্রণায় বিদ্ধ হতে পারেন। ফলে যেকোনো সময় যেকোনো পরিস্থিতিতে তিনি নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলতে পারেন। রোগীর স্বজনদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করতে পারেন।
অন্যদিকে যে মানুষটি নিজের সন্তানকে কোলে করে হাসপাতালে গিয়ে দেখেন যে ভর্তি করা যাচ্ছে না; সিট ফাঁকা নেই; ডাক্তাররা ব্যস্ত, যে কারণে কেউ তাকে দেখছে না কিংবা তিনি সেবাটি পাচ্ছেন না—তখন ওই বাবা কিংবা মায়ের যে কী অনুভূতি হয়, সেটা অন্য কারো পক্ষে উপলব্ধি করা অসম্ভব।
চোখের সামনে প্রিয় সন্তানের নিস্তেজ হয়ে যাওয়া কিংবা মরতে দেখার মতো অসহায়ত্ব আর কিছু নেই। সুতরাং এরকম একটি কঠিন পরিস্থিতিতে যখন কোনো অভিভাবক বুঝতে পারেন যে, তিনি সন্তানের চিকিৎসাটি পাচ্ছেন না; রাষ্ট্রের বিদ্যমান সিস্টেম ও সামর্থ্য তাকে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে ভর্তির পরে একটি বেড নিশ্চিত করতে পারছে না; তিনি হাসপাতালের নিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে একজন ডাক্তার এসে তাকে দেখছেন না—তখন তার চোখের সামনে সন্তানের অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ ফুটে ওঠে। তিনি কল্পনা করতে থাকেন তার চোখের সামনে সন্তানটি মরে যাচ্ছে। অতএব এরকম একটি ভয়াবহ পরিস্থিতিতে কোনো বাবা যদি ক্ষুব্ধ হন, ক্রুদ্ধ হন এবং সেই কারণে নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সত্যি সত্যিই একজন চিকিৎসরে গায়ে হাত দিয়ে বসেন, সেই দায়টা কার?
একটু অন্য প্রসঙ্গে আসা যাক।
বছরের পর বছর ধরে আমাদের দেশে ডাক্তারদের ভিলেন বানানোর একটি চর্চা আছে। বিশেষ করে হাসপাতালে নবজাতক ও প্রসূতি মায়ের মৃত্যু হলেই সেখানে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ আনা হয়। কিন্তু সব সময় কি ভুল চিকিৎসার কারণেই রোগী মারা যায়? একজন পেশাদার ডাক্তার কি কখনো তার রোগীকে সচেতনভাবে ভুল চিকিৎসা দেন?
এটা হতে পারে অনিবন্ধিত বা অপেশাদার হাসপাতাল ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোয়। এই ধরনের ভুল চিকিৎসা হতে পারে যারা সত্যিকারের ডাক্তার নন, তাদের হাতে। কিন্তু একজন পেশাদার চিকিৎসকের মূল লক্ষ্যই থাকে দ্রুত তার রোগীর সুস্থতা। কিন্তু এখানেও মূল সমস্যা ওই জনবল সংকট। একজন রোগীর রোগ নির্ণয় এবং তাকে ব্যবস্থাপত্র দেওয়ার জন্য যে পরিমাণ সময় দেওয়া প্রয়োজন, সরকারি হাসপাতাল তো বটেই, বেসরকারি হাসপাতালের ডাক্তারদের পক্ষেও অনেক সময় সেটা সম্ভব হয় না। বিশেষ করে সিনিয়র ডাক্তারদের পক্ষে—যাদের কাছে সব সময়ই প্রচুর রোগীর ভিড় থাকে।
আরেকটা সমস্যা হলো, বাংলাদেশে ডাক্তার ও রোগীর মধ্যে সম্পর্কটি যেহেতু এখনও আস্থা ও বিশ্বাসযোগ্য হয়ে উঠতে পারেনি, সে কারণে জেলা উপজেলা এমনকি ঢাকার বাইরের মেডিকেল কলেজগুলোও প্রভাবশালী ব্যক্তি বা তাদের পরিবারের কারো চিকিৎসা করতে ভয় পায়। এই ভয়ের কারণে তাদের সাধারণ অসুখ বিসুখ হলেও ঢাকায় রেফার্ড করে দেন। কারণ এইসব ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে চিকিৎসকরা ভয়ে থাকেন যে, যদি কোনো কারণে রোগীর অবস্থা খারাপ হয় বা মৃত্যু হয়, তাহলে ওই প্রভাবশালী রোগীর স্বজনরা এসে হাসপাতালে ভাঙচুর চালাবেন। এরকম ঘটনা অতীতে অসংখ্যবার ঘটেছে। ফলে ডাক্তার রোগীর মধ্যে সুসম্পর্ক তৈরির বদলে দূরত্বই বেড়েছে।
ডাক্তারদের আচরণ নিয়েও রোগীদের অভিযোগের অন্ত নেই। কিন্তু সব ডাক্তারের আচরণই যে খারাপ তা তো নয়। অসংখ্য মানবিক চিকিৎসক আমাদের চারিপাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছেন। কিন্তু সেইসব ভালো মানুষ ও ভালো চিকিৎসকরা কেন জানি খারাপের ভিড়ে হারিয়ে যান। আমাদের চারপাশে অসংখ্য ডাক্তার আছেন যারা নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যেও অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে রোগী দেখেন। ব্যক্তিগতভাবে এরকম বেশ কয়েকজন চিকিৎসককে চিনি যারা অনেক বড় ডাক্তার হওয়া সত্ত্বেও খুব বেশি ফি নেন না। উপরন্তু গরিব মানুষকে বিনা পয়সায় দেখেন। শুধু তাই নয়, কেউ কেউ তাদের এলাকার গরিব রোগী পেলে তাদের বাড়িতে যাওয়ার বাস ভাড়াও দিয়ে দেন। আমাদের চেনাজানা পৃথিবীতেই এরকম ডাক্তার আছেন। কিন্তু আমাদের সামনে কেন জানি শুধু খারাপ জিনিসগুলোই বেশি আসে। অর্থাৎ ডাক্তার তথা পুরো চিকিৎসাব্যবস্থার ওপর মানুষের যে অনাস্থা, সেটি দূর হওয়ার বদলে পরস্পরের মধ্যে দূরত্ব বাড়লেও সেটি দূর করার জন্য রাষ্ট্রের কার্যকর কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ে না।
অতএব মুগদা হাসপাতালে সত্যিই কী ঘটেছিল সঠিক তদন্ত ছাড়া সেটি জানা সম্ভব নয়। কেননা এই ধরনের ঘটনায় প্রত্যেকেই নিজেকে নির্দোষ ও আক্রান্ত দাবি করেন। চিকিৎসক বলবেন তার গায়ে আগে হাত তোলা হয়েছে। আর অভিযুক্ত বলবেন চিকিৎসক আগে তাকে মেরেছেন অথবা তিনি এমন আচরণ করেছেন যাতে তিনি নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি। তবে এই ঘটনায় যদি হাবিবুর রহমানই আগে তাকে মেরেও থাকেন সেখানে বুঝতে হবে তিনি কী অবস্থার ভেতরে ছিলেন। আর চিকিৎসক যদি ক্ষেপে গিয়ে হাবিবুর রহমানে ওপর চড়াও হয়ে থাকেন, সেখানে ওই চিকিৎসক কোন পরিস্থিতির মধ্যে ছিলেন, সেটিও আমলে নিতে হবে।
সমস্যাটি শুধু একজন বাবা এবং একজন চিকিৎসকের নয়। সমস্যাটি পুরো চিকিৎসাব্যবস্থার—যেটি বছরের পর বছর ধরে নানারকম সংকটে খাবি খাচ্ছে। এখানে একজন বাবাকে ধরে নিয়ে জেলে ঢুকানো কিংবা ডাক্তারকে বরখাস্ত করাই সমাধান নয়। বরং কেন এই ধরনের ঘটনা ঘটছে; কেন ভুল চিকিৎসার অভিযোগে রোগীর স্বজনরা হাসপাতালে ভাংচুর চালাচ্ছে; কেন এর প্রতিবাদে চিকিৎসকরা ধর্মঘট করছেন; কেন চিকিৎসকরা প্রভাবশালী মানুষ কিংবা তাদের স্বজনদের চিকিৎসা দিতে ভয় পান—তার সঠিক কারণ নির্ণয় ছাড়া একটি দুটি ঘটনা নিয়ে বিচ্ছিন্ন আলোচনা করে কোনো লাভ নেই।
বস্তুত দেশের পুরো চিকিৎসা ব্যবস্থাটি যেভাবে ঢেলে সাজানোর প্রয়োজন ছিল, সেদিকে কোনো সরকারই নজর দেয়নি। দেশে ওষুধ শিল্পের বিকাশ নিয়ে যতটা গর্ব করা হয়, চিকিৎসার মান ততটাই হতাশা। অনেক সময় অভিযোগ করা হয় যে, চিকিৎসা খাতে পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দ দেওয়া হয় না। অথচ স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ খরচ করতে না পেরে ফেরত পাঠানোরও নজির আছে। তার মানে পরিকল্পনা এবং সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সমস্যা আছে। ২০০০ ও ২০১১ সালে দুটি স্বাস্থ্য নীতি ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু সেগুলোর তেমন একটা বাস্তবায়ন হয়নি। এজন্য যে রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব দায়ী, সে বিষয়ে দ্বিমত পোষণের সুযোগ কম। স্বাস্থ্য খাতে সংস্কার করতে গেলে এখানে যে জবাবদিহির সংস্কৃতি গড়ে তোলা দরকার, সেটিও নিশ্চিত করা যায়নি ওই রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবেই। অতএব রাষ্ট্রের যেকোনো সমস্যা সমাধানে প্রথমত এবং প্রধানত প্রয়োজন রাজনৈতিক সদিচ্ছা। সেটি নির্বাচনি ব্যবস্থাই হোক, আর চিকিৎসাব্যবস্থাই হোক।
আমীন আল রশীদ: কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স এডিটর, নেক্সাস টেলিভিশন
Comments